শিশু নুদরাত হত্যার কোন অগ্রগতি নেই দুই বছরেও। বাসা থেকে খেলতে বের হবার পর পরই নিখোঁজ হয়ে যায় আট বছরের শিশু নুদরাত। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও পরিবারের সদস্যরা তাকে পায়নি। পাঁচ দিন পর বাড়ি থেকে চার কিলোমিটার দূরে নগরীর কোতোয়ালী থানার সার্সন রোডে পাহাড়ের ঝোপের ভেতরে নুদরাতের অর্ধগলিত মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশের ধারণা শিশুটিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজের পর ৮ ফেব্রুয়ারি শিশু নুদরাতের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ঘটনার দুই বছর অতিবাহিত হলেও নিস্পাপ শিশুটিকে কারা, কেন হত্যা করলো তা অজানাই রয়ে গেলো। লাশ উদ্ধারের পর নিহত নুদরাতের বড় বোন রোজি আক্তার বাদি হয়ে অজ্ঞাতনাম আসামি দিয়ে বাকলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ ( সিআইডি)। দুই বছরের তদন্তে কোন অগ্রগতি হয়নি। মামলাটি তদন্ত করেছেন সিআইডির পরিদর্শক পান্না লাল বড়ুয়া। তিনি সম্প্রতি মেহেন্দীগঞ্জে বদলি হয়েছেন।
গতকাল (শুক্রবার) মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নুদরাত হত্যার রহস্য বের করতে আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু শিশুটিকে হত্যার রহস্য এখনো উদঘাটন করা যায়নি। একমাস আগে চট্টগ্রাম সিআইডি থেকে মেহেন্দীগঞ্জে বদলি হয়ে চলে এসেছি। পুলিশ কর্মকর্তা পান্না লাল জানান, শুরুতে ধারণা করা হয়েছিলো শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়নি। তাকে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নুদরাত পরিবারের সঙ্গে নগরীর বাকলিয়া থানার ইছাকের পুল এলাকায় থাকত। বাবা আবুল কালাম গাড়ি চালক। ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি শিশুটি খেলার জন্য বাসার নিচে নামে। দুই ঘণ্টা পর পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। না পেয়ে ওই দিন মাইকিং করা হয়। পরে তার বড় বোন রোজি আক্তার বাদি হয়ে বাকলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপরও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ৮ ফেব্রুয়ারি (২০১৮সাল) রাত ১০টার দিকে নগরীর কোতোয়ালী থানার সার্সন রোড এলাকার পাহাড়ি জঙ্গল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ইব্রাহিমের পাহাড় নামে পরিচিত ওই পাহাড়ের জঙ্গলে একটি শিশুর লাশ পড়ে থাকতে দেখে এক পথশিশু পুলিশকে খবর দেয়। লাশের গলায় একটি জুতার ফিতা প্যাঁচানো ছিল। লাশটি পচে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। শিশুটির যৌনাঙ্গ থেঁতলানো ছিল। শিশুটি নিখোঁজ হওয়ায় বাকলিয়া থানায় আগে জিডি হয়েছে, লাশ উদ্ধারের পরও সেই থানায় মামলা হয়েছে। চার বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে নুদরাত পঞ্চম। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণীতে পড়ত।
পূর্বকোণ/এএ