চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিএসসিতে আরো ২৬ জাহাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

১৬ ডিসেম্বর, ২০২০ | ১:১৬ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) বহরে থাকা ৮টি জাহাজের সাথে আরো ২৬টি নতুন জাহাজ যুক্ত হতে যাচ্ছে। মোট পাঁচটি প্রকল্পের আওতায় এসব জাহাজ ক্রয়ের কাজ চলমান রেখেছে বিএসসি।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিএসসি ভবনে আয়োজিত ৪৩তম বার্ষিক সাধারণ সভাপূর্ব (এজিএম) সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর সুমন মাহমুদ সাব্বির। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএসসির পরিচালক কাজি শফিউল আলম, ড. পিযূষ দত্ত, প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ, সচিব খালেদ মাহমুদ, মহাব্যবস্থাপক আশরাফুল আমিন প্রমুখ।

আগামী ২৩ ডিসেম্বর অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে বিএসসির ৪৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা। এ উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে কমডোর মাহমুদ সাব্বির আরো জানান, গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বিএসসি’র পরিচালনা আয় ছিল ২৭৯ দশমিক ৯০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আয় হয়েছে প্রায় ৪২ দশমিক ৯৪ কোটি টাকা। সর্বমোট আয় হয়েছে প্রায় ৩২২ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে পরিচালনা ব্যয় ছিল ১৭৭ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা ও প্রশাসনিক ও আর্থিক খাতে ব্যয় ছিল ৬৭ দশমিক ৬৩ কোটি। সব মিলিয়ে মোট ব্যয় হয় ২৪৫ দশমিক ৩৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ কর সমন্বয়ের পর বিএসসির ২০১৯-২০ অর্থ বছরে নীট মুনাফা হয়েছে মাত্র ৪১ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা। এই আয় থেকে বিএসসি’র শেয়ারহোল্ডারদের ২০১৯-২০ অর্থ বছরের জন্য ১০ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এর আগে গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বিএসসি’র কর সমন্বয়ের পর নীট মুনাফা হয়েছিল ১৭দশমিক ৫১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থ বছর থেকে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বিএসসি’র নীট আয় বেড়েছে ২৩ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা।

এদিকে পাঁচ প্রকল্পে ২৬টি নতুন জাহাজ ক্রয় প্রসঙ্গে বিএসসি’র ব্যবস্থাপনার পরিচালক কমডোর মাহমুদ সাব্বির জানান, বিএসসি’র চলমান প্রকল্পের মধ্যে কয়লা পরিবহনের জন্য ৮০ হাজার টনের ২টি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার এবং মাদার ভেসেল থেকে লাইটারিং এর জন্য আরো দশটি ১০-১৫ হাজার টন ক্ষমতা সম্পন্ন বাল্ক ক্যারিয়ার ক্রয় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসব জাহাজের মাধ্যমে অদূর ভবিষ্যতে রামপাল, পায়রা ও মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের কয়লা পরিবহনের কাজ করা হবে। ক্রুড অয়েল পরিবহন প্রকল্পে বিএসসি ২টি নতুন এক লাখ টনের অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন মাদার ট্যাংকার ক্রয়ের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসব জাহাজে ইস্টার্ন রিফাইনারির ক্রুড অয়েল পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হবে। এছাড়া মাদার প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার ক্রয় প্রকল্পের মাধ্যমে ২টি ৮০ হাজার টন ক্ষমতার মাদার প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার সংগ্রহের কাজ শুরু করা হয়েছে। এসব জাহাজের মাধ্যমে আমদানিকৃত ডিজেল ও জেট ফুয়েল পরিবহন করা হবে।

এদিকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি পরিবহনের জন্য বিএসসির মোট ৬টি জাহাজ ক্রয়ের প্রকল্পও চলমান রয়েছে। এই ৬টির মধ্যে দুটি হলো প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার কিউবিক মিটার ধারণ ক্ষমতার এলএনজি ভেসেল, দুটি প্রায় ১ লাখ ৭৪ হাজার কিউবিক মিটার ধারণ ক্ষমতার এলএনজি ভেসেল এবং দুটি প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার কিউবিক মিটার ধারণ ক্ষমতার এলএনজি ভেসেল। এছাড়া সেলুলার কন্টেইনার জাহাজ ক্রয়ের পরিকল্পনাও আছে বিএসসি’র। এই প্রকল্পে ১২শ থেকে ১৫শ টিইইউস ধারণ ক্ষমতার ৪টি নতুন সেলুলার কন্টেইনার জাহাজ ক্রয় প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ যাবতকাল পর্যন্ত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বিএসসি সর্বমোট ৪৪টি জাহাজ অর্জন করেছে। আশির দশকের প্রথমদিকে বিএসসি’র বহরে একসাথে সর্বমোট ২৮টি জাহাজ ছিল। বয়সজনিত কারণে এবং বাণিজ্যিকভাবে অলাভজনক বিবেচিত হওয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ে ৩৬টি জাহাজ বিক্রি করার পর বর্তমানে কর্পোরেশনে জাহাজের সংখ্যা মাত্র ০৮টি (০২টি লাইটারেজ ট্যাংকার) যার মধ্যে ০৬টি নতুন জাহাজ গত বছর বিএসসির বহরে যুক্ত হয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট