চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

১০ ট্রেনে নতুন ইঞ্জিন, বাড়বে গতি, ট্রিপ ও রাজস্ব

­সেবা সপ্তাহে সম্পন্ন হুন্দাইয়ের ­শক্তিশালী ১০ ইঞ্জিনের ট্রায়াল রান

১০ ট্রেনে নতুন ইঞ্জিন, বাড়বে গতি, ট্রিপ ও রাজস্ব

৩টি দিয়ে মালবাহী আর ৭টি ­দিয়ে চলবে যাত্রীবাহী ট্রেন

আল-আমিন সিকদার

১৩ ডিসেম্বর, ২০২০ | ৫:৫৬ অপরাহ্ণ

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা নতুন ১০টি লোকোমোটিভের (রেল ইঞ্জিন) ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে। কোরিয়ান হুন্দাই ব্র্যান্ডের এ ইঞ্জিনগুলোর ৩টি যুক্ত হবে মালবাহী ট্রেন এবং বাকি ৭টি যাত্রীবাহী ট্রেনে। ৪ ডিসেম্বর থেকে যাত্রীদের ২০ ধরনের সেবা নিশ্চিতে শুরু হয় রেলসেবা ও নিরাপত্তা সপ্তাহ।

চলতি মাসে রেলসেবা সপ্তাহের মধ্যে ইঞ্জিনগুলোর ট্রায়াল রান শেষ হয়েছে। এরইমধ্যে এই দুই ধরনের (মালবাহী-যাত্রীবাহী) ট্রেন নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চট্টগ্রাম ছাড়ে নতুন দুটি ইঞ্জিন। পরীক্ষামূলক এ যাত্রায় সফল হয় ইঞ্জিনগুলো। কমে যাত্রার সময়। চলতি মাসেই রেল বহরে যুক্ত হয়ে নিয়মিত চলাচল করবে ইঞ্জিনগুলো।

ট্রায়াল রান ও কমিশনিং সম্পন্ন করার কথা জানিয়ে রেলের পরিবহন বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি মাসের মধ্যেই আধুনিক এ ইঞ্জিনগুলো নিয়মিত যাতায়াত শুরু করবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১০টি ইঞ্জিনের ৩টি মালবাহী আর বাকি ৭টি যুক্ত হবে যাত্রীবাহী ট্রেনে। গুরুত্ব বিবেচনা করে এসব ইঞ্জিনের জন্য যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোও এরইমধ্যে নির্বাচিত করা হয়েছে।

প্রথম পর্যায়ে প্রথম শ্রেণীর যাত্রীবাহী ট্রেনে এগুলো যুক্ত করা হবে। যেমন: ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের সুবর্ণ এক্সপ্রেস, সোনার বাংলা, তূর্ণা নিশিথা, গোধূলী ও প্রভাতী। বর্তমানে এসব ট্রেন ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা ২৯০০ সিরায়ালের ইঞ্জিনগুলো দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে। এরমধ্যে, কোরিয়ান হুন্দাই ব্র্যান্ডের ৩০০০ সিরিয়ালের আধুনিক ইঞ্জিনগুলো দিয়ে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও একটি যাত্রীবাহী ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকায় পাঠানো হয়।

মূলত, এসব ইঞ্জিনগুলো পণ্যবাহী ট্রেনে সংযুক্ত করার মূল উদ্দেশ্য ছিল সময় কমিয়ে এনে ট্রিপ বাড়ানো। এতে ট্রিপ সংখ্যার পাশাপাশি বাড়বে রাজস্ব আদায়। পরীক্ষামূলক ও যাত্রায় তার প্রমাণও রেখেছিল শক্তিশালী এ ইঞ্জিনগুলো। চলতি বছরের ২১ অক্টোবর সকাল ১০ টায় ৩১টি পণ্য বোঝাই কন্টেইনার ও একটি গার্ড রেক নিয়ে চট্টগ্রাম সিজিপিওয়াই ইয়ার্ড ছাড়ে একটি ইঞ্জিন। পূর্বের ইঞ্জিনগুলো পণ্যবাহী ট্রেন নিয়ে ঘণ্টায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার গতিতে ছুটলেও নতুন ইঞ্জিন ছুটেছে ৫০-৫৫ কি.মি গতিতে। এতে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে পূর্বের ইঞ্জিনগুলোর ২০-২২ ঘণ্টা সময় লাগলেও নতুন ইঞ্জিনের লেগেছে ১২ ঘণ্টা। একইভাবে গত নভেম্বর মাসের ৩ তারিখ যাত্রীবাহী সুবর্ণ এক্সপ্রেস নিয়ে চট্টগ্রাম ছাড়ে কোরিয়ান এ ইঞ্জিন। এখানেও ইঞ্জিনটি দিয়েছে তার শক্তির পরিচয়।

এদিকে খুব শীঘ্রই নতুন ইঞ্জিনগুলো দিয়ে নিয়মিত ট্রেন পরিচালনা করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা স্নেহাশীষ দাস গুপ্ত। তিনি পূর্বকোণকে বলেন. ‘কোরিয়া থেকে আমদানি করা অত্যাধুনিক ইঞ্জিনগুলোর ট্রায়াল রান ও কমিশনিং সম্পন্ন হয়েছে। এসব ইঞ্জিনগুলোর ৩টি মালবাহী ও ৭টি যাত্রীবাহী ট্রেনে সংযুক্ত করা হবে। গুরুত্ব বুঝেই যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো পাবে এসব ইঞ্জিন। যেখানে প্রথম শ্রেণির ট্রেনগুলোর পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেশি। খুব শীঘ্রই এসব ইঞ্জিনগুলো নিয়মিত চলাচল শুরু করবে।’

রেলসূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে এখন পর্যন্ত ১৭৮টি মিটারগেজ এবং ৯০টি ব্রডগেজসহ মোট ২৬৮টি ইঞ্জিন রয়েছে। ট্রেনের তুলনায় ইঞ্জিনের সংখ্যা কম হওয়ায় যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলে সমস্যা অনেক দিনের। তারই ধারাবাহিকতায় এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কোরিয়ার হুন্দাই রোটেন কোম্পানির কাছ থেকে কেনা হয়েছে দুই হাজার হর্স পাওয়ারের এসব মিটারগেজ ইঞ্জিন। যা সংযুক্ত করা হয়েছে পূর্বাঞ্চলের রেল বহরে।

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট