চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

প্রতিদিন বিমান, ট্রেন ও জাহাজের শিডিউল বিপর্যয়

বাধ সেধেছে ঘন কুয়াশা, দাপট থাকবে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ ডিসেম্বর, ২০২০ | ৫:৫৪ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গতকালও কুয়াশার দাপট ছিল। ক্ষণিকের জন্য দুয়েক জায়গায় সূর্যের দেখা মিললো শীতের অনুভূতি বাড়ছে। এই পরিস্থিতি আগামী ১৬ তারিখ পর্যন্ত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস।

এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট চট্টগ্রামের অবতরণ করতে না পেরে সিলেটে গিয়ে বিমানটি অবতরণ করে। অন্যদিকে ঘন কুয়াশার কারণে শিডিউল রক্ষা করতে পারছে না বঙ্গোপসাগর থেকে কর্ণফুলী নদী হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে জাহাজ। এছাড়া, ঘন কুয়াশায় গত দু’দিন ধরে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে।

আজকের আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সে সাথে শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকা ও পাহাড়ী অঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা বিরাজ করতে পারে। এছাড়া রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। গতকাল শনিবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েেেছ।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তর/উত্তর-পূর্ব দিক হতে ঘণ্টায় ৮-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত পারে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তন হতে পারে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস।

গতকালের তাপমাত্রা:
গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিমানবন্দর:
ঘন কুয়াশার কারণে দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট চট্টগ্রামের অবতরণ করতে পারেনি সিলেটে গিয়ে অবতরণ করে। গতকাল শনিবার সকাল আটটার দিকে দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে বিমানের ফ্লাইটটি দুবাই থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে। তখন ঘন কুয়াশার কারণে বিমানটি চট্টগ্রামে অবতরণ করতে পারেনি। পরে সেই বিমানটি চলে যায় সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। কুয়াশা কেটে যাওয়ার প্রায় তিন ঘণ্টা পর বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিমানের ফ্লাইটটি আবার সিলেট থেকে চট্টগ্রাম আসে।

কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর গতকাল শনিবার সকাল ১০টা ৪২ মিনিটের চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম ফ্লাইট অবতরণ করে। সেটি ছিল ঢাকা থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ফ্লাইট চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে আসতে থাকে।

চট্টগ্রাম বন্দর:
ঘন কুয়াশার কারণে বঙ্গোপসাগর থেকে কর্ণফুলী নদী হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে জাহাজ আনা-নেওয়ায় শিডিউল রক্ষা করা যাচ্ছে না। প্রতিবছর শীত মৌসুমে কুয়াশার কারণে এ ধরনের বিঘœ ঘটে। কুয়াশায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকায় পাইলট ও বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজ আনা-নেওয়া বন্ধ রাখেন।

বন্দর সূত্র জানায়, গত শুক্রবার সকালে ঘন কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দরের মূল জেটিতে পণ্য খালাস শেষে বহির্নোঙরে পাঠানো হয়েছে ৬টি জাহাজ। দুপুরে কুয়াশা না থাকলেও নদীতে জোয়ার ছিল না। বিকেল পাঁচটার পর আবার জোয়ার এলে বহির্নোঙর থেকে বন্দরের সিসিটি ১, সিসিটি ৩ এবং এনসিটিতে মোট তিনটি জাহাজ আনা সম্ভব হয়।

রেল:
কুয়াশায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে গত দু’দিন ধরে। ঘন কুয়াশার কারণে কমেছে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতার হার। দু’দিনে ৯৫ শতাংশ থেকে নেমে ঠেকেছে ৮৬ শতাংশে। রেলের পরিবহন সূত্র বলছে গত দুই দিনে ৪টি আন্তঃনগর ট্রেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। শুক্রবার চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া ৩টি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট দেরিতে ঢাকায় পৌঁছায়। ওই দিন রাত ১১ টায় চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়া তূর্ণা নিশিথা ঢাকায় পৌঁছে ৪০ মিনিট দেরিতে। বিকাল ৩ টায় চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়া গোধূলী পৌঁছে ৩০ মিনিট দেরিতে। সকাল ৭ টায় ছেঢ়ে যাওয়া সুবর্ণ এক্সপ্রেস ঢাকায় পৌঁছে ২০ মিনিট দেরিতে। এছাড়া গতকাল শনিবারও ঘন কুয়াশার কারণে ৪০ মিনিট দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছে সিলেটগামী উদয়ন এক্সপ্রেস। পরপর দু’দিন সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি ট্রেনটি।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট