চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

দৈনিক পূর্বকোণে সংবাদ প্রকাশের জের

অবৈধভাবে নির্মিত রেলের সেইসব দোকান উচ্ছেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ জুন, ২০১৯ | ৯:৪৬ অপরাহ্ণ

নগরীর খুলশী জাকির হোসেন রেল গেট এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা দোকানগুলো অবশেষে উচ্ছেদ করে দিয়েছে রেল। সরকারি জমি দখল করে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের বিষয়ে ‘রেলের জমি দখল করে মার্কেট’ শিরোনামে দৈনিক পূর্বকোণে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়।
পুর্বাঞ্চল রেলের বিভাগীয় ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা জানান, রেলের জমি দখল করে বিজিএমইএ ভবন এলাকায় সড়কের দুইপাশে অবৈধভাবে দোকানগুলো নির্মাণ করেছিল দখলদাররা। এসব দোকানের কোন মাস্টারপ্ল্যানও নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এসময় ৩৫টি সেমিপাকা, ২২টি টিনশেড দোকান ও তিনটি মোটর গ্যারেজ উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদের কারণে রেলের এক একর এক শতক জমি পুনরুদ্ধার হয়েছে। এসব জমির মুল্য কয়েক কোটি টাকা।
স্থানীয় লোকজন জানান, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে দোকানগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। রেলের ভূসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা চাহিদা অনুযায়ী আর্থিক সুবিধা নিয়ে সরকারি জমি দখলে সহযোগিতা করে থাকে। স্থানীয় একজন রাজনৈতিক নেতা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নাম ভাঙিয়ে তার অনুসারি লোকজন দিয়ে এসব রেলের জমি দখল করে দোকানগুলো নির্মাণ করেছেন। প্রতিটি দোকান ৮ থেকে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। যারা দোকান নির্মাণ করেছেন এদের মধ্যে কেউ জুয়ার বোর্ড, কেউ রেলের লোহা চোর, কেউ কসাই আবার কেউ চুরি ডাকাতির সাথে জড়িত। যার কারণে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেনা। এর আগে উক্ত নেতা তার লোকজন দিয়ে সেগুন বাগান, প্রিন্টিং প্রেস, ঝাউতলা এলাকায় রেলের জমিতে দোকান নির্মাণ করেছে। রেলের জমি দখল করেই উক্ত নেতার উত্থান হয়েছে।
পুর্বাঞ্চল রেলের তথ্য অনুযায়ী,চট্টগ্রাম বিভাগে রেলের মোট ভূ-সম্পত্তির পরিমাণ ৭২৭১.৭৩ একর। এরমধ্যে রেলওয়ে স্টেশন, রেল লাইনসহ অপারেশনাল কাজে ব্যবহৃত হয় ৪৩৯৬ একর। অবশিষ্ট ২৮৭৫.৭৩ একর ভূমি রেলের কোন কাজে ব্যবহৃত হয় না। এরমধ্যে ১৫৭৮.২৬ একর ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ৪৫৪.৬২ একর। কৃষি কাজের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ৯০৮.৪৭ একর। মৎস্য খাতে দীঘি ও পুকুর হিসেবে ইজারা দেয়া হয়েছে ১৭০.৩৩ একর। নার্সারির জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ১.৬১ একর। সিএনজি স্টেশনকে ইজারা দেয়া হয়েছে ৫.৫৯ একর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়া হয়েছে ৩৭.৬৪ একর। এর বাইরে অন্তত তিন হাজার কোটি টাকার ১৬৯.৮২ একর ভূমি অবৈধ দখলদারদের কবলে রয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট