চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মোবাইল ছিনতাই-চুরি করে ৮ জন : বিক্রি করে ৩ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ ডিসেম্বর, ২০২০ | ১০:৪২ অপরাহ্ণ

নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোবাইল চোর ও ছিনতাইকারী এবং চোরাই মোবাইল বিক্রির সঙ্গে জড়িত মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ  বৃহস্পতিবার কোতোয়ালী থানায় ব্রিফিংয়ে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানানো হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) পলাশ কান্তি নাথ ব্রিফিংয়ে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোতোয়ালী থানাধীন পুরাতন রেল স্টেশন, নতুন রেল স্টেশন ও নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোবাইল চোর ও ছিনতাইকারী এবং চোরাই মোবাইল বিক্রির সঙ্গে জড়িত মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে মোট ২০২টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সিএমপির সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) নোবেল চাকমাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তিনি জানান, পুরাতন রেল স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. ফজলুল করিম ও শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ১১ জন হলো, মো. ফজলুল করিম (৩৫), মো. শাহ আলম (৩০), মহিউদ্দিন (২৭), ইয়াকুব হোসেন সাইমুন (১৯), রাজিব হোসেন (২৭), মো. সাজ্জাদ (২২), মিজানুর রহমান রাকিব (২০), মো. শাহাদাত (২২), শাকিল (২৪), দুলাল (২০) এবং রবিন (২৩) কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, গ্রেপ্তার আটজনের মধ্যে ফজলুল, শাহ আলম ও মহিউদ্দিন চোরাই মোবাইল বেচা-কেনা করে। আর অন্যরা মোবাইল ছিনতাই ও চুরির সাথে জড়িত।

গত বুধবার নগরীর পুরাতন রেল স্টেশন এলাকার বাগদাদ হোটেল গলি থেকে ফজলুল করিম ও শাহ আলমকে ১৬৪টি মোবাইলসহ গ্রেপ্তার করা হয়। যার মধ্যে ৭২টি ফজলুল করিমের কাছে এবং ৯২টি শাহ আলমের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে বিভিন্ন ছিনতাইকারী ও চোরদের কাছে থেকে তারা কম দামে কিনে বেশি দামে মোবাইলগুলো বিক্রি করে। এর সাথে আরও কয়েকজন জড়িত এবং পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়েছে। ফজলুল ও শাহ আলমকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে নতুন রেল স্টেশন সংলগ্ন পাবলিক টয়লেটের কাছে কাঠের টেবিলে মোবাইল সাজিয়ে বিক্রির সময় ২৯টি মোবাইল সেটসহ মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নগরীর নতুন স্টেশন থেকে পুরাতন স্টেশন এলাকার ফুটপাতগুলো চোরাই মার্কেট বলে পরিচিত। যেখানে বিভিন্ন ধরনের পুরাতন মোবাইল, জামা কাপড় এবং বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী বেচাকেনা হয়। চুরি ও ছিনতাই হওয়া মোবাইল সেটের সন্ধান সেখানে পাওয়া যায় বলে অভিযোগ আছে। গ্রেপ্তার ফজলুল, শাহ আলম ও মহিউদ্দিন নতুন ও পুরাতন রেল স্টেশন এলাকায় টেবিল পেতে পুরানো মোবাইল বেচা-কেনা করে। এসব মোবাইল তারা বিভিন্ন ছিনতাইকারী ও চুরির সাথে জড়িত লোকজনদের কাছ থেকে কিনে। এসব স্থান থেকে মোবাইল কেনা লোকজনকে অনেক সময় পুলিশি ঝামেলায় পড়তে হয় উল্লেখ করে ওসি জানান, অনেক মামলার আলমত উদ্ধার করতে গিয়ে এসব মোবাইল ক্রেতার সন্ধান পাওয়া যায়। যারা জিজ্ঞাসাবাদে স্টেশন রোডের চোরাই মোবাইলের দোকানগুলো থেকে কিনেছেন বলে জানান। স্টেশন রোডের ফুটপাতে সাজিয়ে রাখা এসব দোকান থেকে মোবাইল না কেনার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে রয়েছে রাব্বি, বাদশা, হোসেন, আলী, বস লিটন, আজমের নেতৃত্বে ১২টি গ্রুপ। তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, কোতোয়ালী এলাকায় চুরি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ১২টি গ্রুপ এবং চোরাই মোবাইল বিক্রির সঙ্গে জড়িত ৫০ জন ব্যবসায়ী। তাদের অনেকের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মহসিন বলেন, পরে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের কাছে তিনটি ছোরাও উদ্ধার করা হয়। তারা বিভিন্ন কৌশলে মোবাইল ছিনতাই করে। বাসের মধ্যে পাঁচজন একসঙ্গে উঠে কৃত্রিম ভিড় তৈরি করে। ধাক্কাধাক্কির মধ্যে কেউ পাঞ্জাবি বা প্যান্টের পকেটে অথবা ব্যাগে হাত ঢুকিয়ে মোবাইল নিয়ে নেয়। আবার সন্ধ্যার পর বিভিন্ন মার্কেট-শপিংমলের সামনে অথবা ঢালু রাস্তায় তারা অবস্থান নেয়। রিকশায় অথবা হেঁটে বিশেষ করে নারী যাত্রী যাবার সময় ব্যাগ থেকে মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। তাদের পকেটে ছোরা থাকে। নির্জন এলাকায় কাউকে একা পেলে ভয় দেখিয়েও ছিনতাই করে।

পূর্বকোণ / আরআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট