চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

শীঘ্রই সাঁতার শেখার স্বপ্নপূরণ

প্রস্তুত আউটার স্টেডিয়ামের সুইমিংপুল

দেবাশীষ বড়–য়া দেবু

১৩ জুন, ২০১৯ | ১:৪৯ পূর্বাহ্ণ

ষ মেয়েরা আলাদা সময়ে মহিলা ট্রেনারের মাধ্যমে শিখবে।
ষ বিনা ফি-তে সাঁতার শিখতে পারবে গরীব ও পথশিশুরা।
ষ যারা সাঁতার জানেন, ব্যবস্থা থাকবে তাদের জন্যেও।
চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়ামে স্থাপিত হয়েছে আন্তর্র্জাতিক মানের সুইমিং পুল। বেশ কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত এক সাঁতার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এই সুইমিং পুলের উদ্বোধন করা হয়েছে। শুধু প্রতিযোগিতা নয়, এখানে বেশ কয়েকধাপে সাঁতার শেখানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। অচিরেই চট্টগ্রামের আউটার স্টেডিয়ামে নবনির্মিত সুইমিংপুলে সাঁতার

শেখানোর পরিকল্পনা বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সুইমিং পুল ফেডারেশনের সদস্য এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সুইমিং পুল কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আসলাম মোরশেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ৭টা থেকে দু’দফায় ২ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত এই পুলে সাঁতার শেখানো হবে। এ জন্য নির্ধারিত একটা ফি দিয়ে সেখানে নিবন্ধিত হতে হবে। এতে সপ্তাহে ৫দিন করে দৈনিক ১ ঘণ্টা সাঁতার কাটা যাবে। মেয়েরা সম্পূর্ণ আলাদাভাবে মহিলা ট্রেনারের মাধ্যমে দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সাঁতার শিখবে। গরীব ও পথশিশুরা বিনা ফি-তে সাঁতার শিখতে পারবে। এছাড়া যারা সাঁতার জানেন, তারাও নির্ধারিত একটি ফি দিয়ে সপ্তাহে ৪দিন সাঁতার কাটতে পারবেন সন্ধ্যে ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য, কাউন্সিলর ও তাদের সন্তান এবং ক্রীড়া সংস্থার অনুমোদিত ক্লাব/ ক্লাবের খেলোয়াড়দের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা এখানে রাখা হয়েছে। কথা প্রসঙ্গে জনাব মোরশেদ আরো বলেন- এখন বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সাঁতার শেখানো হয়, যা একজন ছাত্র ৪/৫ দিনেই শিখে ফেলতে পারবে। তবে এই কয়েকটা দিন বেশ কঠিন এবং এতে তাদের যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়। তিনি আরো বলেন, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের আন্তরিকতার ফসল এই সুইমিংপুল। এর সাথে তার আবেগ জড়িয়ে আছে। তিনি অবশ্যই ছাত্রছাত্রীদের ব্যাপারটা বিবেচনা করে দেখবেন।
সাঁতার শেখানোর কার্যক্রমে ট্রেনারসহ প্রায় ১৫টি পদের জন্য জনবল চেয়ে বিভিন্ন দৈনিকে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। ভাল ভাল ট্রেনাররা আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের ইন্টারভিউ হওয়ার পর এখানে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নেয়া হবে।
উল্লেখ্য পানিতে ডুবে অসংখ্য শিশু-কিশোরের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এই অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুর প্রধান কারণ সাঁতার না জানা। কয়েক দশক পূর্বেও শহর ও গ্রামে পর্যাপ্ত পুকুর ছিল। বিশেষ করে নগরীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে আবাসন গড়ে তোলার জন্য অধিকাংশ পুকুর ভরাট করে ফেলা হয়েছে। নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও এখনো কৌশলে চলছে পুকুর ভরাট। ফলে শিশু-কিশোরদের সাঁতার শেখার ব্যবস্থা আগের মত আর নেই। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, মধ্যমিক স্তরের ৭২ শতাংশ কিশোর সাঁতার জানে না। অথচ নদীমাতৃক এবং বন্যাপ্রবণ বাংলাদেশে সাঁতার জানা সব মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সাঁতার স্বাস্থ্যের জন্য কার্যকরী একটি ব্যায়ামও।
চট্টগ্রামে অভিজাত হোটেল এবং বড় বড় ক্লাবে সুইমিংপুল রয়েছে। সেখানে বেশ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সাঁতার শেখানো হয়। কিন্তু নি¤œবিত্ত, নি¤œ-মধ্যবিত্তের পক্ষে সেখানে সাঁতার শেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
নগরবাসীর প্রত্যাশা- এতে নির্ধারিত ফি, আংশিক ফি বা নামমাত্র ফি দিয়ে অথবা একেবারে বিনে পয়সায় সাঁতার শেখানোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। আর যাই হোক, অন্তত স্কুলের ছেলেমেয়েদের যেন এখানে বিনে পয়সায় সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট