চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

লক্ষ্যপূরণে সংশয় আমনেও

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

২২ নভেম্বর, ২০২০ | ৩:১৮ অপরাহ্ণ

সরকারের কাছে চাল বিক্রি করতে এবারও অনীহা প্রকাশ করেছেন মিলাররা। এতে আমন সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সংশয় দেখা দিয়েছে। মিলারদের দাবি, নীতিমালা মেনে খাদ্য বিভাগের চাল বিক্রিতে খরচ পড়বে আতপ ৪২ টাকা ও সিদ্ধ চাল ৪৪ টাকা। কিন্তু সরকার কিনছে আতপ ৩৬ ও সিদ্ধ চাল ৩৭ টাকা দরে। বাজারে ধান ও চালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে গত বোরো মৌসুমেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি সরকার। ৭০-৭৫ শতাংশ পূরণ হয়েছে বলে জানান খাদ্য কর্মকর্তা আবু নঈম মো. শফিউল আজম। তবে মিলারদের দাবি, বোরোতে ৫৫ শতাংশের বেশি চাল সংগ্রহ হয়নি।

চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, বাজারে ধানের দাম বাড়তি রয়েছে। নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ১০৫০ টাকা দরে। সেই ধান শুকিয়ে খাদ্যগুদামে দিতে হয়। পরিবহন, শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ মিলে প্রতি কেজি আতপ চালের দাম পড়বে ৪২ টাকা। আর সিদ্ধ চালের খরচ পড়বে ৪৪-৪৫ টাকা। এই অবস্থায় সরকারকে চাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আমরা ৪২ টাকা দরে চাল কেনার জন্য সরকারের কাছে দাবি করেছি। চট্টগ্রামে মিল মালিকদের কাছ থেকে আতপ চাল কিনবে দুই হাজার ৬৫১ মে. টন। সিদ্ধ চাল কিনবে দুই হাজার ১৫১ মে. টন। কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনবে ৫ হাজার ৪৯০ মে. টন। আতপ চাল কিনবে ৩৬ টাকা, সিদ্ধ চাল ৩৭ টাকা ও ধান কিনবে ২৬ টাকা দরে। আগামী ২৬ নভেম্বরের মধ্যে মিলারদের সঙ্গে চুক্তি করার মেয়াদ বেঁধে দিয়েছে খাদ্য বিভাগ। ইতিমধ্যে মিলারদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা আবু নঈম মোহাম্মদ শফিউল আজম পূর্বকোণকে বলেন, ‘এখনো চুক্তি হয়নি। চুক্তির পর ধানের বাজার দর ও উৎপাদনের ওপর নির্ভর করছে আমন সংগ্রহ। কারণ গত বোরো মৌসুমে অনেক মিলার চুক্তি করেনি। আর চুক্তি করেও অনেকেই চাল দেয়নি।’ তিনি বলেন, ‘এবারও ধানের দাম বাড়তি। নতুন ধান মণপ্রতি ১০৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। এটাই সরকারের প্রত্যাশা।’

কৃষকদের দাবি, কৃষক বাঁচাতে হলে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা আরও দুই-তিন গুণ বাড়াতে হবে। খাদ্য বিভাগের হয়রানি ও দালালদের দৌরাত্ম্য রোধ করতে হবে। অন্যথায় কৃষক চাষাবাদে নিরুৎসাহিত হবে।

রাইস মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিক উল্লাহ বলেন, ‘প্রতি কেজি চালে ৬-৭ টাকা লোকসান গুনতে হবে। এই অবস্থায় সরকারকে কীভাবে চাল দেব। সরকার যদি চালের দাম বিবেচনা করে আমরা সরকারকে শতভাগ সহায়তা করবো।’ চট্টগ্রামের (মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা) মিল মালিকেরা বৈঠক করেছেন। ধানের দাম বৃদ্ধির কারণে লোকসান গুনে সরকারকে চাল দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন মিলাররা।

মিল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি শান্তুদাশ গুপ্ত বলেন, ‘বোরো মৌসুমে চুক্তি করায় সরকারকে চাল দিতে বাধ্য হয়েছি। প্রতিটি মিলার লোকসান দিয়ে লাইসেন্স টিকিয়ে রাখার জন্য চাল দিয়েছে। আর কত লোসকান গুনব।’ বোরো মৌসুমে চুক্তি করেও অনেক মিলার চুক্তি মতো চাল দেয়নি। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা। অনেকের লাইসেন্স দুই বছরের জন্য বাতিল করা হয়েছে। অনেকের পে-অর্ডার আটকে রাখা হয়েছে। এবারও লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে হলে চাল দিতে বাধ্য মিলাররা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট