চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

মাতারবাড়ি বন্দরের কাজ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক 

১৭ নভেম্বর, ২০২০ | ১:৪০ অপরাহ্ণ

বহুল আলোচিত মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ আজ থেকে শুরু হয়েছে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, এ বন্দরের ফলে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যে অর্থনৈতিক বেল্ট গড়ে উঠছে তা বেগবান হবে।

গতকাল সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সামনে ‘মাতারবাড়ি পোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ এর জাপানি কনসালটেন্ট নিপ্পন কোয়েইর সাথে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ সময়ের দাবি ছিল। এই প্রকল্প ২০২৬ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি থেকে কাজ শুরু করবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর। এখানে ৪ থেকে ১০ হাজার কন্টেইনার নিয়ে বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে। বছরে ৮ থেকে ১৪ লক্ষ কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করা যাবে এই বন্দর থেকে। দেশের ৯২ শতাংশ আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে উল্লেখ করে এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, মিরশরাই ইপিজেড পুরোদমে চালু হয়ে গেলে এবং দেশের আমদানি-রপ্তানি বেড়ে গেলে ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম বন্দর সেই বিপুল পরিমান পণ্য হ্যান্ডেলিং করতে পারবে না। এ কারণেই ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, বে-টার্মিনাল, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের মত সব বড় বড় প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় ১শ বছরের ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে কর্মযজ্ঞ চলছে। যাতে ভবিষ্যতে দেশের আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক গতিতে চলে। সেই ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন শুরু হলো মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মানের কাজ দিয়ে।

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্প বাস্তবায়নে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা খরচ হবে জানিয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, এর মধ্যে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা ঋণ দেবে জাপানি দাতা সংস্থা জাইকা। এছাড়া সরকার থেকে দিবে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা এবং চট্টগ্রাম বন্দর দিবে ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। বন্ধু দেশ ৮ হিসেবে সুপরিচিত জাপান মাত্র ১ শতাংশ সুদে এই লোন দিচ্ছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম বলেন, মাতারবাড়ি গভীর সমূদ্র বন্দর ২০২৬ সালে চালু হলেও এর সাথে ট্রান্সপোর্টের বিষয়টি জড়িত। কারণ এই বন্দরের সাথে সড়ক ও রেল পথ যুক্ত থাকবে। তবে রেলের প্রজেক্টটি এডিবির সাথে যুক্ত বলে সেটি শেষ করতে হয়তো আরো সময় লাগবে। তবে সড়ক পথটি তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। এজন্য ভূমি অধিগ্রহণের কাজও অনেকটা এগিয়ে গেছে।

জাপানি কনসালটেন্ট নিপ্পন কোয়েই এর কাজ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ধাপে ধাপে এই প্রকল্পের কাজ করা হবে। দুই ধাপের মধ্যে প্রথমে ডিটেইলড ডিজাইন ও কনেসেপ্ট ডিজাইনের সময় ধরা হয়েছে চলতি নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। এরপর টেন্ডারের পুরো কাজে সহায়তা করতে সময় ধারা হয়েছে জুলাই ২০২১ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত। পাল্টিপারপাস টার্মিনাল তৈরির কাজে সুপারভাইজ করবে জুলাই ২০২২ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত। এরই মধ্যে ইকুইপমেন্ট সংগ্রহের কাজও চলবে।

নিপ্পন কোয়েই টিম লিডার মি. হোতানি বলেন, আমরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করছি। প্রথম ধাপে ডিজাইন, সিভিল ওয়ার্ক হবে। দ্বিতীয় ধাপে হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হবে। সর্বাধুনিক জাপানি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে এ প্রকল্পে। ভূমিকম্পের বিষয়টি মাথায় রাখা হবে। টেকনিক্যাল বিষয়ে সহায়তা দেওয়া হবে।

এ সময় বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুকসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট