ফ্ল্যাটের জানালার সাথে ঝুলছিল নয় বছরের শিশু শাহাদাতের লাশ। খেলাধূলা নিয়ে মায়ের বকুনিতে এই বয়সে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করার চিন্তা করে কেউ? যদি তাই না হয় তাহলে ধরে নিতে হবে কেউ তাকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সে কে? তার সৎ বাবা? না, পুলিশ বলছে ঘটনার সময় কাভার্ড ভ্যানচালক মো. ইউসুফ (সৎ বাবা) গাজীপুরে ছিলেন। আর এমন তথ্য পুলিশ জেনেছে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে।
নগরীর নিউ মুনছুরাবাদ কসাই পাড়া এলাকার জনৈক আবুল কালামের মালিকানাধীন চারতলা ভবনের দোতলার একটি ফ্ল্যাটের কক্ষ থেকে গতকাল বুধবার (১১ নভেম্বর) রাতে শিশু শাহাদাত হোসেনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ফ্ল্যাটে দ্বিতীয় স্বামী ও একমাত্র সন্তান শাহাদাতকে নিয়ে ভাড়ায় থাকতেন পোশাক শ্রমিক পারভীন। সংসারে অভাব দূর করতে ও ছেলের পড়ালেখার ব্যয় মেটাতে মাত্র চারদিন আগেই পোশাক কারখানায় কাজ নেন তিনি। মায়ের সাথে রাগ করে শিশু শাহাদাত আত্মহত্যা করেছে এমনটা মানতে নারাজ মা পারভীন।
তিনি বলেন , আমার ছেলেকে বাইরে খেলার জন্য বকেছি সত্য তবে সেটা ৮ নভেম্বর । এরপর দুইদিন তো ছেলে আমার নির্দেশনা মতো রুমে টেলিভিশন দেখে দেখে সারাদিন কাটিয়ে দেয়। একটা শিশুর রাগ কয়দিন বা থাকবে? যদিও এক মাস আগে সাড়ে চার হাজার টাকায় ওই ফ্ল্যাটের একটি রুম ভাড়ায় নেন পারভীন। ফ্ল্যাটে ঢোকার পথটি উন্মুক্ত থাকায় যে কেউ চাইলে ফ্ল্যাটটিতে ঢুকতে পারবেন। শাহাদাতের একলা থাকার সুযোগে তৃতীয় কেউ প্রবেশ করে হত্যার বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। যেমনটি শিশু শাহদাতের এভাবে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা মানতে পারছেন না প্রতিবেশিরা।
আকবরশাহ থানার ওসি জহির হোসেন বলেন, ‘আলামত বলছে- শিশুটি আত্মহত্যা করেছে। বাসার বাইরে খেলতে যাওয়া নিয়ে তার মার সাথে অভিমানে এমনটি করতে পারে সে। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা বিষয়টি জানতে অপেক্ষা করতে হবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসা পযর্ন্ত। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইমসিন ইউনিটের সদস্যরা আলামত সংগ্রহ করেছেন।
পূর্বকোণ / আরআর