চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

জমিয়তুল ফালাহ গেটে ৫ লাখ টাকা ডাকাতির মামলায় চার্জশিট

নাজিম মুহাম্মদ

১২ নভেম্বর, ২০২০ | ২:৫৫ পূর্বাহ্ণ

বন্ধুর ধার করা মোটরসাইকেলে লুটে অংশ নেয় দক্ষিণ জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি মাসুদুর রহমান। মোটরসাইকেলের ভাড়া বাবদ আদায় করে ৮০ হাজার টাকা। লুটের মিশনে নেতৃত্ব দেয়ায় আরও এক লাখ ২০ হাজার টাকা নেয় মাসুদ। সম-পরিমাণ টাকা নেয় তার আরেক বন্ধু সাহাবুদ্দিনও। গত ১৬ জুন সকাল সাড়ে নয়টা থেকে পিছু নিয়ে বেলা ১টা ২০ মিনিটের দিকে নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের পশ্চিম গেটে ব্যারিকেড দিয়ে চলন্ত সিএনজি ট্যাক্সি আটক করা হয়। তারপর চিটাগাং ট্রেডিং হাউসের জেটি সরকার ফারুক আহমদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয় পাঁচ লাখ টাকা।

পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে মাসুদুর রহমান ও সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে ডাকাতিতে অংশ নিয়েছিলো সাতজন। ফারুককে টার্গেট করার দায়িত্ব পালন করেছে শের আলি। এর মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার হলেও মূল পরিকল্পনাকারী সাহাবুদ্দিনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) দাখিল করেছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ডাকাতির পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার হলেও বাকি সাড়ে চার লাখ টাকা উদ্ধার করা যায়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেশাদার ছিনতাইকারী সাহাবুদ্দিন ঘটনার দিন (১৬ জুন ২০২০) সকালে মাসুদকে ফোন করে জানায় দুটি মোটরসাইকেল হলে একটি ডাকাতি করে বেশ কিছু টাকা পাওয়া যাবে। সকাল আনুমানিক সাড়ে নয়টার সময় মাসুদ ও সাহাবুদ্দিন দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে নগরীর জিইসির মোড়ে আসে। সেখানে আগে থেকে অপেক্ষা করছিলো কামাল, সাদ্দাম, মোক্তার, এরশাদ ও শের আলি নামে পাঁচ ব্যক্তি। জেটি সরকার ফারুক নাছিরাবাদ এক্সিম ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বের হলে তাকে টার্গেট করে শের আলি। ফারুক ব্যাংক থেকে তোলা পাঁচ লাখ টাকাভর্তি ব্যাগ নিয়ে একটি সিএনজি ট্যাক্সিতে উঠে আগ্রাবাদ যাবার পথে দুই মোটরসাইকেলে ছয়জন ট্যাক্সির পেছনে নেয়। শের আলি নাছিরাবাদে থেকে যায়। ফারুককে বহনকারী ট্যাক্সি জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের পশ্চিম গেটে অতিক্রম করলে মাসুদ ও সাহাবুদ্দিন মোটরসাইকেল দিয়ে ট্যাক্সির গতিরোধ করে। মোটরসাইকেল থেকে নেমে কামাল, সাদ্দাম, মোক্তার, এরশাদ ট্যাক্সিটি ঘিরে ধরে। গাড়ির ভেতরে থাকা ফারুকের কাছ থেকে টাকা ভর্তি ব্যাগটি কেড়ে নেয় কামাল। ডাকাতির পর দুই মোটরসাইকেলে ছয়জন লালখান বাজার, কাজীর দেউড়ি-আতুরার ডিপো মাসুদের বোনের নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে ডাকাতির পাঁচ লাখ টাকা ভাগাভাগি করে। মাসুদ নিজের ভাগের এক লাখ ২০ হাজার ও মোটরসাইকেলের ভাড়া বাবদ ৮০ হাজার টাকা নেয়। এছাড়া ছিনতাইয়ে অংশ নেয়া সাদ্দাম পায় ২০ হাজার, শের আলি ১০ হাজার, কামাল ৫০ হাজার, এরশাদ ৫০ হাজার, মোক্তার ৫০ হাজার ও সাহাব উদ্দিন এক লাখ ২০ হাজার টাকা নেয়। ডাকাতিতে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য মাসুদ এবং শাহাবুদ্দিন জনপ্রতি এক লাখ ২০ হাজার টাকা ছাড়াও মোটরসাইকেলের চারঘণ্টার ভাড়া নেয় ৮০ হাজার টাকা। টার্গেট দেখিয়ে দেয়ার জন্য শের আলিকে ১০ হাজার, দলে নতুন হওয়ার সাদ্দামকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়। ডাকাতিতে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে মাসুদ ও সাহাবুদ্দিন ভাগে টাকা বেশি নেয়।

চার্জশিটে অভিযুক্ত আসামিরা হলেন, কুমিল্লার মুরাদনগরের জয়নাল আবেদিনের ছেলে কামাল হোসেন (৩০), নগরীর পাঁচলাইশের মৃত মো. ইউনুছের ছেলে মুক্তার হোসেন খন্দকার (২২), সাতকানিয়া পৌরসভা এলাকার মৃত মো. ইউনুছ খন্দকারের ছেলে মুক্তার হোসেন খন্দকার, একই এলাকার মৃত নুরুল কবিরের ছেলে মো. সাদ্দাম (২৮), সীতাকুণ্ডের উত্তর সলিমপুরের মৃত মোহাম্মদ শামসুল হকের ছেলে মোহাম্মদ এরশাদ (৩৩), ফটিকছড়ির ধুরং গ্রামের মৃত মো. মোস্তফার ছেলে শাহাবুদ্দিন (৩৮) ও আনোয়ারার চরলক্ষ্যা গ্রামের এস এম জহিরুল আলমের ছেলে মাসুদুর রহমান (৪০)।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট