চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

শ্বশুর-জামাইয়ের ব্যবসা ইয়াবা

নাজিম মুহাম্মদ 

৬ নভেম্বর, ২০২০ | ২:১৪ অপরাহ্ণ

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সংগ্রহ করা ইয়াবা ঢাকায় পাঠাতো শ্বশুর-জামাই মিলে। ইয়াবা পাচার করতে টেকনাফের থ্যাংখালি এলাকায় রীতিমতো ঘর ভাড়া নিয়েছেন শ্বশুর নবী হোসেন। নবী (৪৭) বাঁশখালির ছনুয়া ইউনিয়নের হাসান মাস্টার বাড়ির মৃত আবদুল করিমের ছেলে।  রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছ থেকে কেনা বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে ইয়াবা পাচার করতো তারা। জামাই ইব্রাহিম ইয়াবাসহ ধরা পড়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের এসব তথ্য জানান। গত ৫ সেপ্টেম্বর নগরীর চান্দগাঁও থানার নিউ চান্দগাঁও রেস্ট হাউজের সামনে থেকে পাঁচ হাজার ইয়াবাসহ আটক ইব্রাহিম হাটহাজারী থানার চিকনদন্ডি ইউনিয়নের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। 

নগর পুলিশের দক্ষিণ জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ জানান, বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে পাওয়া পণ্যসামগ্রী বাইরে বিক্রি করে দেয় রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। এসব পণ্যের ব্যবসার আড়ালে জামাই-শ্বশুর মিলে ইয়াবা পাচার করেন। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বের হওয়া বিভিন্ন ধরনের সাবানের ভেতরে কৌশলে ইয়াবা নেয়া হচ্ছে। গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইব্রাহিম জানান, তার শ্বশুর পেশাদার ইয়াবা ব্যবসায়ী। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওদের দেয়া বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী কিনে বাইরে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে নবী। থ্যাংখালিতে শ্বশুরের একটি ভাড়া বাসাও রয়েছে। মূলত বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে শ্বশুরের সংগ্রহ করা ইয়াবা দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করেন ইব্রাহিম। ইয়াবা নিয়ে একাধিকবার ঢাকায়ও গিয়েছেন তিনি। ইব্রাহিম পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের জানান, হাটহাজারীতে এক আত্মীয়ের বেড়াতে আসার সূত্রে নবীর মেয়ে নাছিমা আক্তারের সাথে তার পরিচয়।

২০১৭ সালে তিনি নবী হোসেনের মেয়েকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে ১১ মাসের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন দোকানে কাজ করে সংসারের খরচ মেটাতো। মাঝখানে আর্থিক সংকটে পড়েন তিনি। এরমধ্যে শ্বশুরের সাথে দেখা হলে তিনি কাজের কথা বলে ইব্রাহিমকে থ্যাংখালি নিয়ে যান। গত ৪ অক্টোবর থ্যাংখালিতে শ্বশুরের কাছ থেকে ইয়াবা নিয়ে চট্টগ্রাম আসেন তিনি। শ্বশুর তাকে বলেছিল, চান্দগাঁও থানার সামনে দাঁড়ালে একজন লোক এসে তার কাছে ইয়াবাগুলো খুঁজলে যেন দিয়ে দেন। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক বিশ্বজিৎ বর্মণ জানান, শ্বশুর নবী হোসেন মেয়ের জামাই ইব্রাহিমের মাধ্যমে দেশের বিভিন্নস্থানে ইয়াবা পাচার করতো। ইয়াবা পাচারে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন ইব্রাহিম। নবী এবং নগরীতে যে ব্যক্তির কাছে ইয়াবা দেয়ার কথা ছিলো তাকে আইনের আওতায় আনতে আমরা কাজ করছি। এ ব্যাপারে চান্দগাঁও থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট