চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

দেশে ফেরা হল না রাউজানের হতভাগ্য সোলাইমান মিয়ার

দেশে ফেরা হল না রাউজানের হতভাগ্য সোলাইমান মিয়ার

রাউজান সংবাদদাতা

৫ নভেম্বর, ২০২০ | ১১:২১ অপরাহ্ণ

৬৫ এরও বেশি বয়স ওমান প্রবাসী সোলাইমান মিয়ার। শুধু কর্মক্ষম নয়, চলাফেরায় অনেকটা অক্ষম। তবুও বাড়ি ফেরা হচ্ছিল না তার। খেয়ে-না খেয়ে কোনভাবে দিনাতিপাত করছিলেন নিজের সাবেক কর্মস্থল মাস্কাট সিটির মাবেলা নামক স্থানে। নানা রোগেও ভুগছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার ব্যাকুলতা কাজ করলেও সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ তার এখানে কোন বৈধ কাগজপত্র ছিল না। বিগত ১০ বছর ধরে তিনি ভিসাহীন অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। ওমানে কখন সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করবে তার প্রতিক্ষায় দিন গুনছিলেন হতভাগ্য সোলাইমান মিয়া। তার এই দুর্দশার খবর পৌঁছে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির সংবাদকর্মী মীর মাহফুজ আনামের কাছে। ওই সংবাদকর্মীকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে দেশে ফেরার আকুতির কথা বর্ণনা করেন সোলাইমান মিয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয় এই বৃদ্ধের আকুতির কথা। ভাইরাল হয় তার প্রবাসে জীবন যুদ্ধের কথা।

খবরটি পৌঁছে যায় ওমানের বাংলাদেশ দূতাবাসেও। মানবিক কারণ দেখিয়ে দূতাবাস থেকে ওমান সরকারের কাছে তাকে ফেরার আবেদন করা হলে তা গৃহীত হয়। দূতাবাসের আইন সহায়তাকারী মাসুদ করিম সবধরণের কাগজপত্র প্রস্তুত করে দিলেন। এবার প্রয়োজন ছিল একটি টিকেট। তাও ব্যবস্থা হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে। চট্টগ্রামের ‘ভষধসরহমড় ঃড়ঁৎ ধহফ ঃৎধাবষং’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান তার জন্য একটি সৌজন্যে টিকেট পাঠালেন। আগামী ১৩ নভেম্বর রাতে বিমান বাংলাদেশে করে তার দেশে ফেরার দিন ছিল। আরো কিছু প্রবাসী তাকে পাঠাতে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন। সোলাইমান মিয়াও বেজায় খুশি। দিন গুনতে লাগলেন। ওমানে থাকা তার শ্যালক তাকে সাথে করে নিয়ে গেলেন আমরাত নামক অপর একটি স্থানে। সেখান থেকে করোনা পরীক্ষা সেরে মূলত দেশে ফিরার কথা।

কিন্তু বিধিবাম। দেশে ফেরার এক সপ্তাহ আগেই আজ বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) সকালে না ফেরার দেশে চলে গেলেন চট্টগ্রামের রাউজানের কদলপুরে এই হতভাগ্য প্রবাসী। পরে ওমান রয়েল পুলিশ এসে লাশ মর্গে নিয়ে যায়।

তার শ্যালক রুবেল জানান, লাশ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সোলাইমান মিয়া কদলপুর ইউপির মরহুম নাজু মিয়ার ছেলে। দেশে তার স্ত্রীসহ ৪ কন্যা সন্তান রয়েছে।

 

 

পূর্বকোণ/জাহেদ-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট