চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিশ্বনবী রহমাতুল্লিল আলামীন

বিশ্বনবী রহমাতুল্লিল আলামীন

এম সোলাইমান কাসেমী

২৯ অক্টোবর, ২০২০ | ১১:৪৪ অপরাহ্ণ

প্রাক ইসলামি যুগে যখন চরম উচ্ছৃঙ্খলতা, পাপাচার, দুরাচার, ব্যাভিচার, মিথ্যা, হত্যা, লুন্ঠন, মদ্যপান, জুয়ায় ভরপুর ছিল, অন্যায়-অপরাধ, দ্বন্ধ-সংঘাত, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য, নৈরাশ্য আর হাহাকার বিরাজ করছিল, ঠিক তখনই মানবতার মুক্তির দিশারী সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সা) সারাজাহানের হিদায়েতের জন্য আবির্ভূত হন। রাসুল (সা) হলেন বিশ্বমানতার জন্য আল্লাহর এক অনন্য রহমত। মহান বিশ্বপরিচালক ঘোষণা করেন, ‘আমি তোমাকে প্রেরণ করেছি বিশ্বজগতের জন্য বিশেষ রহমত স্বরূপ।’

হযরত মোহাম্মদ (সা) বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রের বনি হাশিম বংশে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার জন্মগ্রহণ করেন। জন্ম হওয়ার পরই মা আমেনা এ সংবাদ দাদা আব্দুল মুত্তালিবকে পাঠান। সংবাদ পাওয়ার পরেই তিনি ছুটে আসেন। পরম স্নেহে দেখেন, যত্নের সঙ্গেঁ কোলে নিয়ে কা’বার ভেতর প্রবেশ করেন, আল্লাহর হামদ বর্ণনা করেন এবং দোয়া করেন। অতঃপর তাঁর নাম রাখেন ‘মুহাম্মদ’ (প্রশংসিত)।

বিবি আমিনা গর্ভাবস্থায় স্বপ্নযোগে প্রাপ্ত নাম অনুসারে ‘আহমদ’ (উচ্চ প্রশংসিত) নাম রাখেন। মহাগ্রন্থ আল কোরআন, ইতিহাস এর যুক্তি-প্রমাণ এবং বিভিন্ন গ্রন্থের তথ্য অনুযায়ী রমজান মাসের শেষ পর্যায়ে মহানবী (সা) এর কাছে আল্লাহর দূত জিবরাইল (আ) কে দিয়ে ওহী (আল্লাহর বাণী) প্রেরণ করেন। এ সময় তার বয়স ৪০ পূর্ণ হয়।

প্রথমে তিনি স্বপ্নে সে নিদর্শন পান এবং পরে সরাসরি পেয়েছিলেন। বেশীর ভাগ সময় তিনি মক্কার প্রসিদ্ধ পাহাড় ‘জাবালে নূরে’ অবস্থিত ‘গারে হেরা’ তথা হেরা গুহায় অবস্থান করতেন এবং ক্রমান্বয়ে কয়েক রাত সেখানে অতিবাহিত করতেন। এভাবে একদা তিনি হেরা গুহায় তাশরীফ আনেন এমন সময় তাঁকে নুবুওয়াতের পদমর্যাদা দিয়ে সৌভাগ্যবান করার পবিত্র মুহূর্ত এসে যায়। জন্মের ৪১ তম বছরে ২৭ রজব (হিজরতের ১৩ বছর পূর্বে) মুতাবিক ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে জাগ্রত ও চৈতন্য অবস্থায় এঘটনা সংঘটিত হয়।

আল্লাহর ফেরেশতা জিবরাইল (আ) প্রথমবারের মত তাঁর কাছে, পৃথিবীবাসীদের জন্য আল্লাহর সর্বশেষ ঐশীবাণী, বিশ্বমানবতার মুক্তির পথের দিশারী, জ্বিন ও ইনসানের জন্য পরিপূর্ণ জীবন বিধান ‘আল্ কুরআনুল কারীম’ এর সর্বপ্রথম কথাগুলো নিয়ে তাঁর কাছে উপস্থিত হন। ‘পড়, তোমার প্রতিপালকের নামে। যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে, তোমার পালনকর্তা মহা দয়ালু। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানতনা।’ (সূরা আলাক ঃ ১-৫।) এরপর আসলো দুনিয়া পরিবর্তনের দায়িত্ব। একটি মানবিক বিশ্ব গড়ার দায়িত্ব দিলেন মহান আল্লাহ।

বিদায়হজে মহান আল্লাহ ওহী পাঠান- ‘আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম। তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ পরিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি ৬৩ বছর বয়সে মহান রবের কাছে ফিরে যান ১১ হিজরীর ১২ রবিউল আউয়াল। তাঁর প্রতি অগণিত দরূদ ও সালাম।

 

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট