চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রোহিঙ্গা শিশুদের পারাপার

কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রোহিঙ্গা শিশুদের পারাপার

উখিয়া সংবাদদাতা

২ অক্টোবর, ২০২০ | ৬:২৫ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা ভাসানচরের চেয়ে অনেকটা নিরাপদ মনে করেন। বাংলাদেশ সরকার ও এনজিওদের মাধ্যমে তারা ভোগ করছেন নানান সুবিধা। এরপরও তারা বসে না থেকে রোহিঙ্গারা কাজ করে খেতে পছন্দ করেন। এজন্য তারা স্থানীয় বাসা-বাড়ি ও বিভিন্ন দোকানে কাজ করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করছেন।

রোহিঙ্গাদের আত্মীয়-স্বজন অনেকেই বিদেশে অবস্থান করছেন। তারা স্বজনদের জন্যে টাকা পাঠিয়ে ওই টাকা দিয়ে ব্যবসা করে খেতে বলেন। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গারা দোকান দিয়ে ব্যবসা করছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একে অপরের সাথে আত্মীয়তা ও বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন। তাই তারা এক ক্যাম্প থেকে অন্য ক্যাম্পে বেড়াতে যান।

ময়নাঘোনা ১১ নম্বর ক্যাম্পের মাঝি জিয়াউর রহমান বলেন, কাঁটাতারের বেড়া দেয়ায় আমরা খুশি। তবে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আসা-যাওয়া করার মত রাস্তা রাখতে হবে। রোহিঙ্গাদের অনেক সময় কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে যেতে হয়। যেভাবে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হচ্ছে তাতে আমরা প্রয়োজনেও বের হতে পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে রোহিঙ্গারা কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন। ময়নাঘোনা ক্যাম্প এগারো এর লম্বা গাছের নিচে যেভাবে কাটা তার দিয়ে ঘিরে ফেলেছে তাতে আমাদের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। ওই গাছের তলে একটি হাসপাতাল আছে। হাসপাতালে ডাক্তার নার্স ও রোগী আসা-যাওয়ার মত কোনো ব্যবস্থা না রেখে ঘিরে ফেলেছে। সেখানে একটি ফটক তৈরি করে যাতায়াতের সুব্যবস্থা রাখা হোক। অপ্রয়োজনে কেউ বের হবে না। হাসপাতালে আসা-যাওয়ার রাস্তা রেখে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া উচিত ছিল।

রোহিঙ্গা শিশু ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি আমার মায়ের সাথে এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে গিয়েছিলাম। যদি ফটক তৈরি করে আমাদের যাতায়াতের পথ রাখতো তাহলে আমাকে কষ্ট করে কাঁটাতারের ভিতর দিয়ে যেতে হতো না। কাঁটাতারের ভিতর দিয়ে পার হওয়ার সময় গায়ে আমার তারের কাঁটা লেগেছে। একটু ব্যথাও পেয়েছি। আমাদের চলাচল শান্তিময় করা হোক।

রোহিঙ্গা যুবক জাহেদুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে, তাতে আমরা খুশি। আমরা এখানকার আইন মেনে চলতে চাই। প্রয়োজনের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। কাঁটাতারের ফাঁকে ফটক তৈরি করে দিলে আমাদের চিকিৎসা নিতে যেতে সুবিধা হত। যদি একেবারেই বের হতে না দেয় তাহলে প্রয়োজনে আইন মানা হবে না, এটাই স্বাভাবিক। অধিকাংশ রোহিঙ্গারা সম্মান নিয়ে বাঁচতে চায়। আমাদেরও ঘর-বাড়ি, জায়গা-জমি, ব্যবসা বাণিজ্য ছিল মিয়ানমারে। এখানে এসে বসে বসে খেতে ভালো লাগে না। তাই আমরা নিজেদের মধ্যে ব্যবসা করে একটু সুখের স্বপ্ন নিয়ে বসবাস করছি। ক্যাম্পে বিভিন্ন পয়েন্টে ফটক তৈরি করে তাতে নিরাপত্তা প্রহরি বসানো হোক। আমরা প্রয়োজন ছাড়া ক্যাম্প থেকে বের হব না।

 

 

 

পূর্বকোণ/কায়সার-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট