চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রামুতে সহিংসতা: ৮ বছরেও শেষ হয়নি বিচার প্রক্রিয়া

রামুতে সহিংসতা: ৮ বছরেও শেষ হয়নি বিচার প্রক্রিয়া

নীতিশ বড়ুয়া

২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ৫:৩০ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের রামু ও উখিয়া উপজেলার বৌদ্ধ বিহার এবং পল্লীতে চালানো নারকীয় হামলার বিচার আট বছরেও শেষ হয়নি। সাক্ষীর অভাবে এ বিচার প্রক্রিয়া থমকে থাকলেও রামু-উখিয়ার বৌদ্ধদের মাঝে ফিরেছে সম্প্রীতি। পোড়া মন্দিরে তৈরি হয়েছে নান্দনিক স্থাপনা। দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাশৈলীতে পুণ্যার্থীদের পাশাপাশি বেড়েছে পর্যটক আকর্ষণ। ক্ষতিগ্রস্তরা পেয়েছেন নতুন ঘর। এখনও নিরাপত্তায় সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। তবে বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মাঝে রয়েছে অসন্তোষ। অপরাধীদের বেশিরভাগ আইনের আওতায় না আসায় তাদের শংকাও কাটছে না।

রামু সহিংসতার আট বছর আজ। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুতে বুদ্ধমূর্তি, বৌদ্ধ বিহার ও বৌদ্ধ বসতিতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ উগ্র-সাম্প্রদায়িক হামলার সেই বিভীষিকাময় দিন স্মরণে বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ যুব পরিষদ।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন, রামু পানের ছড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সুচারিতা মহাথের। প্রধান ধর্মদেশক থাকবেন পুণ্যাচার ভিক্ষু সংসদের সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রামের পটিয়া কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ড. সংঘপ্রিয় মহাথের।

এ উপলক্ষে লাল চিং-মৈত্রী বিহার কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ভোরে বুদ্ধপূজা, সকালে জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, অষ্ট পরিষ্কার দানসহ মহাসংঘদান, দুপুরে শান্তিপুর্ণ মানববন্ধন, অতিথি ভোজন, বিকালে হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও সন্ধ্যায় বিশ্ব শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর রামু ও উখিয়া-টেকনাফে বৌদ্ধপল্লীতে চালানো নারকীয় হামলার ১৮টি মামলার একটি বিচারও শেষ হয়নি। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার জন্য দায়ীরা শাস্তি পায়নি এখনও। ঘটনার পর বিভিন্ন মামলায় ৯৯৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ঘটনায় আটকরা সবাই এখন জামিনে। অনেকেই বিদেশে পাড়ি দিয়েছে। ঘটনার পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার ও ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, বৌদ্ধ মন্দির ও বসতিতে হামলার ঘটনায় সর্বমোট ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়। তৎমধ্যে বাদির সম্মতিতে ১টি মামলা প্রত্যাহার হয়। অন্য ১৮টি মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে আদালতে।

জানা যায়, হামলার ঘটনায় দায়ের ১৯ মামলার এজাহারে নাম-ঠিকানা উল্লেখিত আসামি ছিল ৩৭৫ জন। রামু থানার আট মামলার এজাহারে মোট আসামি সাত হাজার ৮৭৫। এরমধ্যে ১১১ জনের নাম-ঠিকানা থাকলেও পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পেরেছিল ৭৪ জনকে। আর সন্দেহভাজন আটক করেছিল ১৩২ জনকে। উখিয়া থানার সাত মামলায় পাঁচ হাজার ৬২৪ আসামি থাকলেও গ্রেপ্তার ছিল ১১৬ জন। টেকনাফ থানার দুটি মামলায় ৬৫৩ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার ছিল ৬৩ জন। কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দুই মামলায় এক হাজার ৩০ আসামি থাকলেও গ্রেপ্তার ছিল ৯৮ জন। গত আট বছরে ধাপে ধাপে জামিন নিয়ে বেরিয়ে গেছে সবাই।

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট