চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সীতাকুণ্ডে উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রেসক্লাব নিয়ে অপপ্রচার : অভিযুুক্ত খলিল গ্রেপ্তার

সীতাকুণ্ড সংবাদদাতা

১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ৯:৪৩ অপরাহ্ণ

সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাব ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা এস.এম আল মামুন এবং প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এম.সেকান্দার হোসাইনকে নিয়ে ফেসবুকে মানহানিকর পোষ্ট দেওয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত দুটি আইসিটি মামলায় অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছে অভিযুুক্ত ইব্রাহিম খলিল (৫২)। আজ  রবিবার দুপুরে পুলিশ তাকে ফৌজদারহাট এলাকায় একটি গাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে চালান করেছে। এসময় পুলিশ তার কাছ থেকে মোবাইল, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছে।

দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৭মে ২০২০ইং তারিখে সীতাকুণ্ডে প্রেসক্লাবের নতুন ভবনের কাজ পরিদর্শনে আসেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব এস.এম আল মামুন। তিনি প্রেসক্লাবের গাইডওয়াল নির্মাণের জন্য ৭ লাখ টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেন। এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের পরিদর্শনের একটি ছবিকে সংযুক্ত করে সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বগাচতর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হাদীর ছেলে গরু চুরিতে হাতে নাতে আটককৃত জনৈক ইব্রাহিম খলিল (৫২) তার ফেসবুক আইডিতে মানহানিকর মন্তব্য করে লেখেন ‘ উপজেলা চেয়ারম্যানের ভূমিদস্যুরা পেল গাইড ওয়াল’। এ ঘটনায় প্রেসক্লাব কল্যাণ ট্রাষ্টের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম.হেদায়েত বাদী হয়ে ইব্রাহিম খলিলের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে ইব্রাহিম খলিল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান নির্বাহী সদস্য আলহাজ্ব এম সেকান্দর হোসাইনকে নিয়ে মানহানিকর পোষ্ট দেন।

এ ঘটনায় সেকান্দর হোসাইন বাদী হয়ে থানায় আইসিটি আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এসব ঘটনার পর ইব্রাহিম খলিল পালিয়ে যায়। দীর্ঘ চার মাস সে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়ানোর পর গত শনিবার রাতে সে গোপনে সীতাকুণ্ডস্থ নিজ বাড়িতে আসেন। রবিবার সকালে বাড়ি থেকে একটি লোকাল গাড়িতে চট্টগ্রাম অভিমুখে যাবার পর স্থানীয় সাংবাদিকরা এ খবর পেয়ে ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির সামনে গাড়িটি থামিয়ে তাকে আটক করেন। পরে মামলা দুটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই হারুন ও এস.আই সাইফুল ফৌজদারহাট ফাঁড়ি থেকে জিম্মায় নিয়ে মামলার আলামত ইব্রাহিম খলিলের ল্যাপটপ, মোবাইল জব্ধ করে ফেসবুক আইডিটি উদ্ধার করেন এবং শেষে তাকে কোর্ট হাজতে চালান করা হয়।

মামলা দুটির বাদী সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাব কল্যাণ ট্রাষ্টের চেয়ারম্যান এম. হেদায়েত ও প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য সেকান্দর হোসাইন বলেন, ইব্রাহিম খলিল এলাকায় নিজেকে বিভিন্ন পত্রিকা বা চ্যানেলের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এলাকার বহু মানুষকে চরম হয়রানি করেছে। সে পৌরসদরস্থ জেনারেল হাসপাতালের সামনে জেলা পরিষদের খাল দখল করে তার উপরে বেশ কয়েকটি দোকান নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করছে। এক ব্যক্তির জমি নামজারি করে দেবার আশ্বাস দিয়ে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে ৫ বছরেও ফেরত দেয়নি। সিএনজি টেক্সি মালিক সমিতির কাছ থেকে সাংবাদিক ও পুলিশ ম্যানেজের নামে মাসে ১৫ হাজার টাকা আদায় করত। এভাবে নিয়মিত নানা অপকর্ম করে অর্থ উপার্জন করাই তার পেশা। টাকার বিনিময়ে নামসর্বস্ব পত্রিকার আইডি কার্ড সংগ্রহ করে সে দীর্ঘসময় মানুষকে ভয়ভীতি দেখাত। সে প্রেসক্লাবের সদস্য হতে চেয়েও ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত হয়ে মানহানিকর প্রচারণা চালানোয় আমরা বাধ্য হয়ে মামলা করেছি। সেসব মামলায় অবশেষে ১৩ সেপ্টেম্বর সে গ্রেপ্তার হয়েছে।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, দুটি আইসিটি মামলার আসামি ইব্রাহিম খলিলকে আমরা দীর্ঘদিন খুঁজছিলাম। রবিবার সাংবাদিকদের সহযোগিতায় আমরা তাকে গ্রেপ্তার করে কোর্ট হাজতে চালান করেছি। এছাড়া রবিবার তার কাছে ২০ হাজার টাকার পাওনা দাবী করে আরো এক ব্যক্তি থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন।

পূর্বকোণ / আরআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট