চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চমেকে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালু,এক ছাদে মিলবে সেবা

ইমাম হোসাইন রাজু

৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ৭:০৫ অপরাহ্ণ

সংকটাপন্ন রোগীদের দ্রুততম সময়ে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চালু হচ্ছে ‘ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টার’। যেখানে একই ছাদের নিচে মিলবে সব ধরনের সেবা। ফলে জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের আগের মতো ছুটতে হবে না বিভাগে বিভাগে।
ইতোমধ্যে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে একটি অবজারভেশন কক্ষও চালু করা হয়েছে। বসানো হয়েছে শয্যাসহ এক্স-রে, ইসিজি এবং কয়েকটি যন্ত্রও। তবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের পর পুরোদমে কাজ শুরু হওয়ার কথা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কাজ শেষে পুরোদমে চালু করা হবে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেবা কার্যক্রম। সার্ভিসটি চালু হলে সংকটাপন্ন অনেক রোগীর জীবন বাঁচবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।
সংশ্লিষ্ট তথ্যে জানা যায়, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বর্তমান জরুরি বিভাগকে হাসপাতালের নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হবে। এরপর জরুরি বিভাগসহ ক্যাজুয়াল্টি ওয়ার্ডকে নিয়ে সাজানো হবে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার। তবে এটি পুরোপুরি সংস্কার করে চালু করতে কমপক্ষে ছয় মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম।
সেন্টারটিতে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) এবং পোস্ট অপারেটিভ ইউনিটসহ থাকবে সাধারণ শয্যা। কিন্তু এতে ঠিক কতটি শয্যা থাকছে, এখন পর্যন্ত তা নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে এ সেন্টারে পৃথকভাবে প্যাথোলজি, এক্স-রে, ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফি, আলট্রাসনোগ্রাফি, পালস অক্সিমিটার এবং রক্তের জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা থাকবে।
সেই সাথে ইমারজেন্সি সেন্টারে আসা রোগীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় লাল, কমলা, হলুদ ও সবুজ ব্যান্ড দিয়ে চিহ্নিত করে সেবা দেয়া হবে সেখানে। যাতে অপেক্ষাকৃত গুরুতর রোগীদের শতভাগ সেবা নিশ্চিত করা যায়। একই সাথে দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টা রোগীদের সেবা দিতে মেডিকেল অফিসারের পাশাপাশি সিনিয়র কনসালটেন্ট পর্যায়ের একজন চিকিৎসক দেয়ার পরিকল্পনা আছে। এতে মেডিসিনের পাশাপাশি সার্জারি, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিক এবং এনেসথেসিয়াসহ প্রয়োজনীয় সব বিভাগের চিকিৎসক নিয়োজিত থাকবেন বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫শ রোগী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে গড়ে আটশ’ রোগী হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। আবার এই আটশ’ রোগীর মধ্যে দুই থেকে আড়াইশ’ রোগী কয়েক ঘণ্টা চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন। এতদিন এসব রোগীদের ওয়ার্ডে ভর্তি দিয়ে সেবা দেওয়া হতো। এর কারণে ওয়ার্ডগুলোতে অতিরিক্ত রোগীর চাপ সৃষ্টি হতো। এতে স্বজনদের পাশাপাশি হিমশিম খেতে হতো চিকিৎসকদেরও। তবে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টার চালু হলে রোগীদের চাপ যেমন কমে আসবে, তেমনি দ্রুত সেবা পাবে রোগীরা। সেই সাথে কমবে রোগী-স্বজনদের ভোগান্তিও।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে পূর্বকোণকে বলেন, ‘জরুরি বিভাগে আসা যেকোন রোগীকে প্রথমে ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার (ইএমও) দেখবেন। এরপর রোগীর রোগ ও অবস্থা বুঝে তিনি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের নিকট পাঠাবেন। পরে অবস্থা অনুযায়ী তার চিকিৎসা সেবা শুরু হবে। প্রয়োজন হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওয়ার্ডে পাঠানো হবে। তবে অপেক্ষাকৃত কম মারাত্মক রোগীকে সেন্টারের অভজারভেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হবে। তাদের ওয়ার্ডে পাঠানোর প্রয়োজন হবে না। এতে করে ওয়ার্ডগুলোতেও রোগীর চাপ কমে আসবে। একই সাথে দ্রুততার সাথে চিকিৎসাও মিলবে রোগীর’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট