চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা

খাল ভাঙনের মুখে অর্ধশত পরিবার

জাহেদুল আলম, রাউজান

৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ৩:১০ অপরাহ্ণ

হালদা নদীর পানির তীব্র স্রোতে রাউজানের কাগতিয়া খালের ওপর নির্মিত স্লুইচ গেটের আশপাশের পাড় ভেঙে বিলীনের পথে পশ্চিম বিনাজুরী ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মনমোহন ড্রাইভারের বাড়ি।

জানা যায়, কয়েক বছরের ভাঙনে এই এলাকার ৫ কানি জমি, এক কানি পুকুর, বেশকিছু ঘর-বাড়ি ভেঙে খালে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে মনমোহন ড্রাইভারের বাড়িটি। এছাড়াও ভাঙনের মুখে পড়েছে কমপক্ষে আরো অর্ধশত পরিবার। দ্রুত এই খালের ভাঙন আর স্লুইচ গেটের ভাটার টানের তীব্র স্রোতে রোধ করার ব্যবস্থা না নিলে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে বহু বসতঘর, বাপ-দাদার জমি, ভিটা ছেড়ে উচ্ছেদ হওয়ার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ভাঙনরোধে পাথরের বেড়িবাঁধ করা না গেলে ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলো বিলীন হয়ে যেতে পারে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত দেড় বছর আগে চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইঞ্জিনিয়ার ভাঙন কবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আশ্বাস ও শুধুই আশ্বাসে থেকে গেছে দেড়বছর ধরে। এক টুকরো পাথর পড়েনি এখন পর্যন্ত।

এলাকার ইউপি সদস্য সার্জেন্ট (অব.) রনজিত বড়ুয়া, সমাজসেবক নুর মিয়া, বসুমিত্র বড়ুয়া, বাড়ির বাসিন্দা নিসা বড়ুয়া, বিদু বড়ুয়া, চনক বড়ুয়া, রবি বড়ুয়া, তাতু বড়ুয়াসহ অনেকে জানান, মূলত কাগতিয়া খালের মাঝখানে দ্বীপ উঠায় খালের বিপরীত দিকে স্রোত সৃষ্টি হয়ে পশ্চিম বিনাজুরীর মনমোহন ড্রাইভারের বাড়িগুলো একের পর এক ভেঙে যাচ্ছে। তারা জানান, প্রায় ৩০-৩৫ বছর আগে নির্মিত কাগতিয়া খালের ওপর স্লুইচ গেটটি সবসময় খোলা থাকে। এ কারণে ভাটার সময় তীব্র আকারে স্রোত সৃষ্টি হয়ে বিপরীত স্থানের মনমোহনের বাড়িটি ভাঙছে। তবে গত কয়েকবছর আগে খালের মাঝখানে দ্বীপ সৃষ্টি হওয়ায় ভাঙন গত দু’বছর ধরে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে সোনা বড়ুয়া, মনা বড়ুয়ার ঘর-জমিসহ অনেক পরিবার ভেঙে সেখান থেকে উচ্ছেদ হয়ে গেছে।

খালের ভাঙনের মুখে পড়া নিসা বড়ুয়া বলেন, আমাদের কিংবা বাড়ির অন্য বাসিন্দারা এত বেশি বিত্তশালী নয় যে, অন্যকোথাও গিয়ে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করবো। আমাদেরকে এখানেই ভাঙন আতঙ্কের মধ্যে রাতদিন কাটাতে হচ্ছে।

বাড়ির অন্য বাসিন্দারা জানান, একদিকে ভাঙন আতঙ্ক, অন্যদিকে রাতে ভাটার সময় পানির স্রোতে শোঁ শোঁ শব্দে ঘুম হয় না।’ এলাকাবাসীর দাবি পাথর দিয়ে বাঁধনির্মাণ ও কাগতিয়া খালের মাঝখানে সৃষ্ট দ্বীপটি কাটা না হলে ভাঙনরোধ সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা স্থানীয় এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বিনাজুরী ইউপি চেয়ারম্যান সুকুমার বড়ুয়া বলেন, কাগতিয়া খালের ভাঙনের কবলে পড়ে পশ্চিম বিনাজুরী ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মনমোহন ড্রাইভারের বাড়ির বহু পরিবার কষ্টে আছে। চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড এ বিষয়ে অবগত আছে। তারা স্থানটি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজটি এখনো না হওয়া দুঃখজনক।
পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট