চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাকলিয়া এক্সেস রোডের ১০ তলা ভবনের জটিলতা কাটেনি

ইমরান বিন ছবুর

১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ১:০২ অপরাহ্ণ

নগরীর বাকলিয়া এক্সেস রোড নির্মাণে বাবে ইউসুফ প্রকাশ ‘কর্নেল ভবন’ নিয়ে এখনো জটিলতা কাটেনি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ)। সিরাজউদ্দৌলা রোড হতে শাহ আমানত সংযোগ সড়ক পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটারের নির্মাণাধীন এই প্রকল্প কর্নেল ভবনের জন্য আটকে আছে। কর্নেল ভবন উচ্ছেদ এবং ভবনের অনুমোদনের অনিয়ম নিয়ে ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল সিডিএ। ১৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ১০ মাস পার হলেও এখনো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি ওই তদন্ত কমিটি। পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগরের সাবেক পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিককে আহ্বায়ক এবং সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেনকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা না দেয়া প্রসঙ্গে সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগরের সাবেক পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিককে আহ্বায়ক করে প্রথম তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু আজাদুর রহমান মল্লিক চট্টগ্রাম থেকে বদলি হয়ে যাওয়ায় ওই কমিটি আর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। সম্প্রতি ১০-১২ দিন আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহানগরের পরিচালক মো. নূরুল্লাহ নূরীকে আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আশা করছি তারা তদন্ত কাজ শেষ করে শীঘ্রই প্রতিবেদন জমা দিবে।’
তদন্ত কমিটির সদস্য সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ বলেন, কমিটি ইতোমধ্যে অনেক কাজ করেছে। সম্প্রতি তদন্ত কমিটির একটি মিটিং হওয়ার কথা থাকলেও কমিটির আহ্বায়ক মো. নূরুল্লাহ নূরীর আত্মীয় মারা যাওয়ায় মিটিংটি আর হয়নি।
তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তে তো অগ্রগতি অবশ্যই হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এসব এখন বলা যাচ্ছে না। শীঘ্রই কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিবে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত মার্চে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও একজন সদস্য কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু সিডিএ চেয়ারম্যান এখনো পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেননি বলে জানা যায়।
সিডিএ সূত্রে জানা যায়, ১০ তলা ভবন নির্মাণের জায়গাটি সিডিএ’র মাস্টার প্ল্যানে নতুন সড়কের জন্য সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু মাস্টার প্ল্যান না মেনে সিডিএ সেখানে ১০ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়। এখন সড়ক নির্মাণের জন্য ভবনটি ভাঙতে হবে। তবে এখনো ভবন মালিকের সাথে সিডিএ’র ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদান এবং কীভাবে এ অর্থ প্রদান করা হবে এ নিয়ে মীমাংসা না হওয়ায় ভবনটি ভাঙতে পারছে না সিডিএ। ফলে ওই অংশে সড়কের নির্মাণ কাজও বন্ধ রয়েছে। সময়মত নির্মাণ কাজ করতে না পারায় প্রকল্পটির মেয়াদ এবং অর্থ দুটিই বাড়বে জানায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
বাকলিয়া এক্সেস রোডের প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে ভবনটি ভাঙার কথা থাকলেও তা পারেনি সিডিএ। তবে ক্ষতিপূরণ বাবদ ভবন মালিককে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা দিতে হবে। নগরীর ডিসি রোড এলাকায় বাবে ইউসুফ নামের ১০ তলা ভবন নির্মাণ করে হাজী চান্দমিয়া সওদাগর ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড। এতে ৩৬ টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালে সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালামের আমলে ১০ তলা ভবনটি নির্মাণের অনুমোদনে অনিয়ম নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও পরে তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট