চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

তিন কোটি টাকার হোটেল বিল গ্যাঁড়াকলে আটকে

ইমাম হোসাইন রাজু

৩০ আগস্ট, ২০২০ | ২:১৭ অপরাহ্ণ

করোনা প্রাদুর্ভাবের পর চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার হোটেল ভাড়া পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ জারিকৃত পরিপত্রে আবাসিক হোটেলের বিল পরিশোধ না কারার সিদ্ধান্তে এমন বিপাকে পড়তে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। অন্যদিকে ভাড়া না পেয়ে প্রায় সময় হাসপাতালে ভিড়ছেন হোটেল কর্তৃপক্ষও। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশাবাদ-দ্রুত মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ পেয়ে এসব বিল পরিশোধ করতে পারবেন তারা। তবে এমন আশাটিও প্রায় অনিশ্চিত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা সেবা চালু হওয়ার পর নগরীর সাতটি আবাসিক হোটেলে সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্য ব্যবস্থা করা হয়। যা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এসব হোটেল রিকুইজিশন করা হয়। প্রায় মাসখানেক এসব হোটেলে হাসপাতালের শতাধিক চিকিৎসকসহ প্রায় ১৮০ জন নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী থাকতেন। এসব হোটেল কর্তৃপক্ষ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকার বিল দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

এরমধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসিক হোটেলের বিল পরিশোধ না কারার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে চিকিৎসকদের জন্য বরাদ্দ হোটেলের সুবিধাও বাতিল করা হয়। এমন সিদ্ধান্তের পরপরই সাতটি আবাসিক হোটেলও বাতিল করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এসব হোটেলের ভাড়া পরিশোধ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা না থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়তে হয় কর্তৃপক্ষকে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আগেই এসব হোটেলে ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুাৎ, পানি ও ওয়াইফাই) পরিশোধ করেছেন। তবে রুমভাড়া নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সুর্নিদিষ্ট নির্দেশনা না থাকায় এসব বিল পরিশোধ করতে পারছে না বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

যা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এসব হোটেলের রুমভাড়া পরিশোধ নিয়ে চিঠিও দিয়েছেন চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক নগরীর হোটেল রিজেন্ট প্যালেস, হোটেল এ্যামবেসডর, হোটেল দি এভেনিউ, হোটেল লাভা ইন, হোটেল লর্ডস ইন, হোটেল আশরাফী, হোটেল ওয়েল প্লেস রিকুইজিশন করা হয়। রিকুইজিশনকালে এসব হোটেলসমূহের ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু রুমভাড়া পরিশোধ করা হয়নি। তাই রুমভাড়া পরিশোধের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা প্রয়োজন।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর পূর্বকোণকে বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। কয়েকবার মৌখিকও কথা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন সুরহা হয়নি। তাছাড়া আমাদের কাছে এ খাতের কোন বরাদ্দও নেই। নির্দেশনা ছাড়া বিলও ছাড় দেয়া সম্ভব নয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে এসব বিল পরিশোধ করা হবে। শুধু মন্ত্রণালয়েও নয়, জেলা প্রশাসকের সাথেও এ বিষয়ে কথা বলা হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট