চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অস্থির চমেক ক্যাম্পাস

ইফতেখারুল ইসলাম

২৯ আগস্ট, ২০২০ | ১:৫৬ অপরাহ্ণ

ক্ষমতাসীন দলের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ক্যাম্পাস দিন দিন উত্তপ্ত হচ্ছে। হামলা-পাল্টা হামলা, মামলা-পাল্টা মামলার কারণে এই ক্যাম্পাসের পরিবেশ প্রতিনিয়ত খারাপের দিকে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছাত্রদের রক্ত ইতোমধ্যে কয়েক দফা ঝরেছে। পরিস্থিতি এভাবে অবনতি হতে থাকলে আরো ভয়াবহ ঘটনার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
গত ১২ জুলাই চমেক ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে মারামারিতে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হন। এরপর শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী চমেক ছাত্রলীগ নেতা খোরশেদুল আলম বাদি হয়ে ১১ চিকিৎসকসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। গত ১৩ আগস্ট চমেক ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে মারামারির ঘটনা ঘটে। বিকেল চারটার দিকে চট্টেশ্বরী সড়কে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসে এই ঘটনা ঘটলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার জেরে রাতে ছাত্রাবাসসংলগ্ন গুলজার মোড়ে আরেক দফা মারামারিতে আহত হন ইন্টার্ন ডক্টরস এসোসিয়েশনের (আইডিএ) আহ্বায়ক ওসমান গণিসহ তিন জন। মূলত আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের মধ্যে এই মারামারির ঘটনাগুলো ঘটছে। ওই মারামারির ঘটনায় ১১ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত। মারামারির ওই ঘটনায় ইন্টার্ন চিকিৎসক আউয়াল রাফি বাদি হয়ে মামলা করলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। মারামারি-হামলা নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন। পরে তা প্রত্যাহার করে তারা কাজে যোগ দেন। সর্বশেষ মামলা হয়েছে গত ২৭ আগস্ট। চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সফি উদ্দিনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন চমেকের ডেন্টাল বিভাগের ছাত্র আ জ ম নাছিরের অনুসারী অনির্বাণ দে। এই মামলায় ১২ শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়। এই মামলা তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ূন কবীর বলেন, গন্ডগোল কলেজে হয়। হাসপাতালে কোন সমস্যা নেই। তারপরও পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। র‌্যাব টহল দেয়। পুলিশও সতর্ক অবস্থায় আছে। তিনি বলেন, এখানে অন্যকোন রাজনৈতিক দলের কেউ এসে ঝামেলা করছে না। যা হচ্ছে নিজেদের মধ্যেই হচ্ছে। শিক্ষক, ছাত্রনেতা দুইপক্ষকে অনুরোধ করেছি বসে সমঝোতার মাধ্যমে কাজ করার জন্য। প্রয়োজনে তারা যেন তাদের নেতাদের সাথে বসে সমঝোতা করেন সেই অনুরোধও জানিয়েছি। কারণ এখানে গন্ডগোলে কারো কোন লাভ হবে না। চিকিৎসক সমাজের মাঝে মানুষ মারামারি আশা করে না।

জানতে চাইলে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, কিছুদিন আগে বেশি উত্তপ্ত ছিল। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে উল্লেখ করে বলেন, উভয়পক্ষকে শান্ত রাখার জন্য পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। এই হাসপাতালে পুরো চট্টগ্রামের রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন। এখানে রোগীদের চিকিৎসা সেবা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তাই যেকোন উপায়ে ক্যাম্পাস শান্ত রাখা হবে।
পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট