চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

অর্ধেক রোগীতেও হিমশিম
অর্ধেক রোগীতেও হিমশিম

চমেক হাসপাতাল

অর্ধেক রোগীতেও হিমশিম

ইমাম হোসাইন রাজু

৭ জুলাই, ২০২০ | ১:৪০ অপরাহ্ণ

করোনাভাইরাসে প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। একদিনে সর্বনিম্ন মাত্র ২০ শতাংশ রোগী ছিল হাসপাতালটিতে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠার ৬০ বছরে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কম রোগী ভর্তি হয়েছিল বৃহত্তর চট্টগ্রামের সরকারি একমাত্র বৃহৎ এ চিকিৎসা কেন্দ্রে। যদিও দিন গড়াতে করোনার রোগীর প্রভাবে রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বেড়েছে। তবে সেটিও অর্ধেকের চেয়ে কম। এরপরও সেবা কার্যক্রম নিয়ে অভিযোগের কমতি নেই সেবা প্রার্থী আর তাদের স্বজনদের।

যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, একেতো জনবল সংকট, তারমধ্যে হাসপাতালটির চিকিৎসক-নার্স, স্টাফসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি অংশই করোনায় আক্রান্ত। কয়েকজন কাজে যোগ দিলেও বরাবরের মতো হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। কিছুকিছু বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়গুলো নজরে নিয়ে তা সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম।

তথ্য মতে, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এপ্রিল ও মে মাসে সব চেয়ে কম রোগী ছিল হাসপাতালটিতে। যেখানে ১৩১৩ শয্যার বিপরীতে তিন মাস আগেও রোগী ভর্তি ছিল সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার পর্যন্ত। কিন্তু এপ্রিল মাসে এসে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত রোগী কমার রেকর্ড ছিল হাসপাতালটির। যদিও পৃথক করোনা ইউনিট চালু হওয়ার পর কিছু সংখ্যক রোগী বাড়তে থাকে। এরমধ্যে চলতি মাসের শুরু থেকে রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কিছুটা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। যা গতমাসের চেয়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এরমধ্যে ১ জুলাই হাসপাতালটিকে কোভিড, নন-কোভিড রোগীসহ ভর্তি ছিল ১ হাজার ৪৪৮ জন। যা ধীরে ধীরে বেড়ে গতকাল (সোমবার) ১ হাজার ৫৪৬ জনে পৌঁছেছে। রোগীর সংখ্যা বাড়লেও হিসেবে তা মাত্র ৪৫ শতাংশ। অর্থাৎ গতকাল পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ৫৫ শতাংশ রোগী কম ছিল। কিন্তু রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও সেবা কার্যক্রম নিয়ে আগের মতোই অভিযোগ রোগী ও স্বজনদের।

এরমধ্যে গত রবিবার চিকিৎসার অবহেলায় দুই রোগীর মৃত্যুর অভিযোগও ওঠে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে। এছাড়া ঠিকমতো সেবা না পাওয়ার বিষয়টিও যেন নিত্যদিনের ঘটনা। সিট কিংবা অক্সিজেন নিয়েও রয়েছে নানান অভিযোগ। সম্প্রতি এমন অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালটির এক ওয়ার্ডবয়কে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। এরপরও এমন ঘটনা ঘটেই চলছে। রোগীর সংখ্যা কম থাকা সত্ত্বেও সেবা না পাওয়া বা নার্স, আয়া-ওয়ার্ড বয়দের বিরুদ্ধে অভিযোগের কমতি যেন নেই।

জানতে চাইলে হাসপাতালটির উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, ‘করোনায় কয়েকজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। আক্রান্তের মধ্যে নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী যেমন ছিল, তেমনি অফিস স্টাফরাও রয়েছে। কয়েকজন কাজে যোগ দিলেও অনেকেই এখনো যোগ দিতে পারেননি। তারমধ্যে শুরু থেকেই হাসপাতালে জনবল সংকটের মধ্যেই চালাতে হচ্ছে। এতে হিমশিম লেগেই আছে’।

‘সেবা পাচ্ছে না এটা সঠিক নয়, তবে এটাও মিথ্যে নয়, আগের মতো সরাসরি বা অন্তরঙ্গ হয়ে রোগীদের কাছে মেশার সুযোগ হচ্ছে না। দূর থেকেই রোগীদের সেবা দিতে হচ্ছে। সবারেইতো জীবনের ভয় আছে। এরপরও এসব চিকিৎসক-নার্সরাই জীবন-মরণ ‘সন্ধিক্ষণে’ই কাজ করে যাচ্ছেন। কিছু ঘটছে না, এটাও একদম মিথ্যে নয়। আমরা সব বিষয়ে নজর দিচ্ছি। যেখানে যে সমস্যা হচ্ছে, তা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে’ বলে যোগ করেন এ চিকিৎসক।
পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট