চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু-ে দিনভর যানজট

নিজস্ব সংবাদদাতা , সীতাকু-

২৯ মে, ২০১৯ | ২:৩০ পূর্বাহ্ণ

ঈদকে সামনে রেখে সড়ক ও জনপদ বিভাগ মহাসড়কে সংস্কার কাজ শুরু করায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু-ে দিনভর তীব্র যানজটে নাকাল হয়েছেন হাজার হাজার যাত্রী ও গাড়ি চালক। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা প্রায় ৬টা পর্যন্ত প্রায় ৭ ঘণ্টার এ যানজট ছড়িয়ে পড়লে ২০ কি.মি.এলাকায় যান চলাচল থেমে

যায়। এতে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। এদিকে সড়কের কাজে যানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে ভুক্তভোগিরা দাবি করলে সওজ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে এক ফুটওভার ব্রিজের কারণে এ যানজট হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের সীতাকু- উপজেলাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট কুমিরা থেকে বারআউলিয়া এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে সড়ক সংস্কার কাজ শুরু করে সওজ। প্রথম দিকে ঢাকা মুখী লেনে কাজ চলায় সড়কের বিভিন্ন অংশে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দাঁড়িয়ে পড়ে অসংখ্য গাড়ি। সীতাকু-ের ভাটিয়ারী বানুর বাজার এলাকা থেকে সীতাকু-ে যাবার উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠা এক যাত্রী মো. সেকান্দর হোসেন জানান, তার বাড়ি থেকে সীতাকু-ের দুরত্ব প্রায় ৩০ কি.মি.। যানজট মুক্ত সড়কে এই দুরত্ব পার হতে সময় লাগে সর্বোচ্চ আধ ঘণ্টা। কিন্তু মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গাড়িতে উঠে তিনি ২ ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকেন। ফলে সীতাকু-ে পৌঁছাতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা! তিনি বলেন, রোজা থেকে প্রচ- রোদে উত্তপ্ত হয়ে উঠা গাড়িতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা যে কি কষ্টকর তা ভুক্তভোগি ছাড়া কেউ বুঝবে না। তাছাড়া তার একটি জরুরি মিটিং ছিলো। সেখানে দীর্ঘসময় পরে পৌঁছে লজ্জায় পড়তে হয়েছে তাকে।
তিনি বলেন, মহাসড়কে তেমন কোন খানা-খন্দ নেই। তবুও সংস্কারের প্রয়োজন হলে উন্নত দেশের মত গভীর রাতে করাই উত্তম। দিনের বেলায় সবাই নানান জরুরি কাজে ব্যস্ত থাকেন। এসময় এতক্ষন আটকে থাকতে হলে মানুষের কাজকর্মের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিষয়টি যেন কর্তৃপক্ষ ভাবেন সেই অনুরোধ করেন তিনি। চট্টগ্রাম থেকে সকাল ১০টায় রওনা দিয়ে দুপুর ১টায় সীতাকু-ে পৌঁছানো এক মহিলা যাত্রী শিক্ষিকা সুমি আক্তার বলেন, এক ঘণ্টার পথ আমি তিন ঘণ্টায় পাড়ি দিয়েছি। গাড়িতে এতক্ষণ আটকে থাকাটা কতটা বিরক্তিকর তা বলে বোঝানো যাবে না। দিনের বেলায় এ ধরণের সংস্কার কাজ না করার অনুরোধ জানান তিনিও। এভাবে এদিন বেলা ১১টা থেকে ইফতারের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কখনো ঢাকামুখী সড়কে আবার কখনো চট্টগ্রাম মুখী সড়কে তীব্র যানজট বিরাজ করে বলে ভুক্তভোগি যাত্রীরা জানান।
সীতাকু- থেকে চট্টগ্রামের নিয়মিত ভাড়া কার চালক উপজেলার নুনাছরার বাসিন্দা মো. শাহীন বলেন, সড়কের অবস্থা এখনো এত খারাপ হয়নি। তবুও কেন কাজ করা হচ্ছে জানি না। কিন্তু রোজার দিনে এভাবে দীর্ঘ যানজট মানুষকে অসহনীয় কষ্টে ফেলছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকু-ের ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টি.আই রফিক আহমেদ মজুমদার বলেন মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট ছিলো। এর কারণ হলো মহাসড়কে সংস্কার কাজ। এ কাজের যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই আমাদের কাছে ফোন করেছেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই।
সীতাকু-ের বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. আহসান হাবীব বলেন, সড়ক সংস্কার কাজের কারণেই মূলত যানজট। তবুও আমরা শৃঙ্খলার সাথে গাড়ি চালাতে সারাদিন কাজ করে গেছি। তিনি বলেন একটানা যানজট ছিলো না। মাঝে মাঝে যানজট হয়েছে আবার গাড়ি চলেছে। তবুও সওজ কর্তৃপক্ষ দ্রুত কাজ শেষ করলে যাত্রী দুর্ভোগ লাঘব হবে।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ দাবি করেন সড়কের নির্মাণ কাজ চললেও সে কারণে এত যানজট হচ্ছে না। মঙ্গলবার কুমিরায় একটি ফুটওভারব্রিজ ভেঙে পড়ায় এ যানজট হয়েছে। সারাদিনই বিক্ষিপ্তভাবে এ যানজট ছিলো বলে স্বীকার করেন তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট