চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

আ. লীগের অভিযোগে জনসংহতির বিবৃতি

বান্দরবানে সন্ত্রাসী ঘটনায় পরস্পরকে দোষারোপ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান

২৯ মে, ২০১৯ | ১:৪৯ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এক সংবাদ সম্মেলনে এলাকায় সন্ত্রাসী তৎপরতা দমন ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। সেইসাথে বান্দরবানে অপহরণ হত্যাসহ সন্ত্রাসী ঘটনার জন্য আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করেছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান, সহ-সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবি, যুগ্ম সম্পাদক লক্ষ্মীপদ দাশ প্রমুখ।
এদিকে বান্দরবানে সাম্প্রতিক হত্যা অপহরণ ও সন্ত্রাসী ঘটনার জন্য সরকারি দল আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতি। আধিপত্য বিস্তারের জন্য সরকারি দলের ছত্রছায়ায় মগ বাহিনী (আরাকান লিবারেশন পার্টি) নামে সন্ত্রাসী সংগঠন তৈরি করে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে বলে জনসংহতি সমিতির নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেছেন। গত সোমবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক গুনেন্দু বিকাশ চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বান্দরবানে আওয়ামী লীগ নেতা চ থোয়াই মং মার্মা হত্যার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগ জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করার পর সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই বিবৃতি দেয়া হয়েছে। বিবৃতিতে সংগঠনটি গ্রেপ্তারকৃত তাদের নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, মগ বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ তিন দফা দাবির কথা উল্লেখ করেছে। জনসংহতি সমিতির দেয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, ১৮ ফেব্রুয়ারি পিসিপির রাজস্থলী শাখার সভাপতি উক্যনু মারমার বাড়ি সন্ত্রাসীরা ঘেরাও করে। ১১ মার্চ কাপ্তাইয়ের রাইখালীতে যুব সমিতির চিংসাউ মারমা, জনসংহতি সমিতির উচিংমং মারমা ও যুব সমিতির অংথোয়াইচিং মারমাকে মারধর করে আহত করা, ১৪ এপ্রিল রাজস্থলীতে জনসংহতি সমিতির রাজবিলা শাখার সদস্য অংক্যচিং মারমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা, ২৩ এপ্রিল জনসংহতি সমিতির রাজস্থলী শাখার সদস্য ও গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মংক্যসিং মারমাকে অপহরণ (এখনো নিখোঁজ), ৭ মে বান্দরবানের রাজবিলা ইউনিয়নের রাবার বাগানে যুব সমিতির বিনয় তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যা এবং ফোলারাম তঞ্চঙ্গ্যাকে অপহরণ, ৯ মে বান্দরবানের কুহালং ইউনিয়নের ৩ নং রাবার বাগানে জয়মণি তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যা, ১৩ মে বান্দরবান শহরের উপকণ্ঠে প্রুমংঞো পাড়ায় ১২ গ্রামবাসীকে হত্যার হুমকি, ১৫ মে রোয়াংছড়ি উপজেলার আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের সাধু হেডম্যান পাড়ায় শান্তিলাল ত্রিপুরাসহ দুইজনকে গুলি করে হত্যা, ১৮ মে রাজবিলা ইউনিয়নের চিংক্ষ্যং পাড়া থেকে উনুমং মারমাকে অপহরণ (এখনো নিখোঁজ), ১৯ মে ভোরে রাজবিলা ইউনিয়নের তাইংখালী ৮ নং রাবার বাগান পাড়ায় ক্যচিংথোয়াই মারমা নামে এক গ্রামবাসীকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। সর্বশেষ ২২ মে চ থোয়াই মং মারমাকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। এসব ঘটনার জন্য জনসংহতি সমিতি বিবৃতিতে সরকারি দলের ছত্রছায়ায় থাকা মগ বাহিনীকে দায়ী করেছে। নেতৃবৃন্দ জানান, প্রশাসনকে বারবার অবহিত করা সত্ত্বেও মগ সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে বরং জনসংহতি সমিতির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানি করে আসছে।
জনসংহতি সমিতি এ বিবৃতি দেয়ার পর বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন জনসংহতি সমিতি তাদের অপকর্ম ঢাকতেই এখন এই কথা বলছে। এই নেতা বলেন, জনসংহতি সমিতির সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি ও তৎপরতায় এলাকার লোকজন এখন অতিষ্ঠ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট