চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

সন্দ্বীপের হাট-বাজারে অসময়ের ইলিশ

নরোত্তম বনিক, সন্দ্বীপ

৩ মার্চ, ২০২০ | ১:৪১ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে বর্ষাকাল ইলিশের মৌসুম হিসেবে পরিচিত হলেও এ বছর শীতকালে ইলিশের মিছিল নেমেছে সাগরে। বঙ্গোপসাগর, মেঘনার মোহনা ও সন্দ্বীপ চ্যানেলে ঘন কুয়াশামাখা শীতে ধরা পড়ছে রূপালি ইলিশের ঝাঁক। শীতকালীন অন্যান্য মাছের সাথে সমানতালে বাজার সরগরম রেখেছে অসময়ের এই রূপালি ইলিশ। স্থানীয়দের ভাষায়, এটি অদিনের (অসময়ের) ইলিশ হিসাবে পরিচিত। তবে এগুলোর স্বাদ এবং ঘ্রাণ মৌসুমের ইলিশের মতো অটুট।
সরকার বর্ষা মৌসুমে ডিম ছাড়ার সময় মাছ ধরা বন্ধ রাখায় নদীতে ইলিশের প্রজনন বেড়েছে। অন্যদিকে জাটকা নিধন বন্ধ করায় মাছগুলো আকারে বেশ বড় হচ্ছে। মূলত এই দুই পদক্ষেপের কারণে ইলিশের পরিমাণ বেড়েছে বলে দাবি মৎস্য অফিস ও স্থানীয় জেলেদের।

সন্দ্বীপে প্রায় ২৫টি খাল ও ঘাটকে কেন্দ্র করে বঙ্গোপসাগর, সাগরের মোহনা, মেঘনার মোহনা, সন্দ্বীপ চ্যানেলে প্রায় পাঁচ শতাধিক ছোটবড় নৌকায় নিয়মিত মাছ শিকার করেন উপকূলীয় এলাকার মৎস্যজীবীরা। বর্ষায় ইলিশের সিজনে এগুলোর সাথে সন্দ্বীপ উপকূল থেকে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যুক্ত হয় আরো ৫০ থেকে ৬০টি বড় ফিশিং বোট। সন্দ্বীপে সবচেয়ে বেশি মাছ শিকার করে সারিকাইত ইউনিয়নের বাংলাবাজারের পুরাতন ধুপের খাল, গাছতলীর হাটের দুর্গাচরণ খাল, মগধরার ছোয়াখালী, পুরাতন মাইটভাঙ্গা ঘাট, আজিমপুর ঘাট, মুছাপুর ঘাট ও পুরাতন স্টিমার ঘাট সংলগ্ন তিনটি ইলিশ ঘাটের জেলেরা। বর্ষাকালের মতো শীতের মৌসুমে এগুলোর কয়েকটি ঘাটে মাঝারি আকারের শতাধিক নৌকায় ইলিশ শিকার করা হচ্ছে। গভীর সাগরে ইলিশ শিকারে যাচ্ছে কয়েকটি বড় ফিশিং বোট। এছাড়া খুঁটিতে বাঁধা বিশাল আকারের খসকি জালসহ নৌকাগুলোতে প্রতিদিন গড়ে এক থেকে তিন টন ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। অসময়ে পাওয়া এই ইলিশ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে সরবরাহ করছে স্থানীয় বেপারীরা।

সারিকাইতের বাংলাবাজার এলাকরয় মৎস্যজীবী শংকর জলদাশ বলেন, ৪০ বছর সাগরে মাছ ধরছি। কিন্তু কখনো শীতকালে এত বেশি ইলিশ মাছ দেখিনি। সরকার সিজনে অবরোধ দেওয়ায় এখন শীতকালে ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এখন কোন ছোট মাছ নাই। বেশিরভাগ মাছের ওজন ৭শ গ্রাম থেকে দেড় কেজি।
শিবেরহাট বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আনোয়ার হিরন জানান, বাজারে বর্ষা থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিদিন ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে এবং দামও সস্তা। এক কেজি সাইজের প্রতিটি ইলিশের দাম ৫শ থেকে ৭শ টাকা।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক জানান, বর্ষাকালে প্রজননের সময় ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ইলিশের পরিমাণ বেড়েছে। গত জানুয়ারি মাসে সন্দ্বীপে প্রায় দেড়শ মে. টন ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট