চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

নি¤œবিত্তের ক্রেতার ভিড় লেগে থাকে চক সুপারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ মে, ২০১৯ | ২:৩১ পূর্বাহ্ণ

চকবাজার এলাকার পুরাতন মার্কেটের অন্যতম চক সুপার। বিকিকিনির দিক দিয়ে নগরীর বিভিন্ন নামি দামি মার্কেটগুলোর মত এটিও কম নয়। ঈদ উপলক্ষে ক্রেতা আকর্ষণে লাল, নিল বেগুনি রঙ এর আলোয় সেজেছে এ মার্কেটও।
সাশ্রয়ী মূল্য ও মান সম্মত কাপড়ের জন্য ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় চক সুপারও অন্যতম। ঈদ উপলক্ষে ক্রেতাদের আনাগোনায় ব্যস্ত সময় পার করছে মার্কেটের দোকানদারগণ। দিন রাত চলছে বেচাকেনা। চকবাজার মোড়েই অবস্থান চক সুপারের। বিশেষ করে মার্কেটটিতে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ মধ্যবিত্ত ক্রেতার সংখ্যাই বেশি। কারণ এখানে শহরের অন্যান্য মার্কেটগুলোর চেয়ে তুলনামূলক কম দামে কেনাকাটা করা যায়।
মার্কেটটি ঘুরে দেখা যায়, ছোট থেকে বড় সকলের চাহিদা অনুযায়ী সব ধরণের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। ৬ তলা বিশিষ্ট এই মার্কেটে ১০০টি দোকান আছে। নিচতলায় ছোট বড় মিলে ৮০টি দোকান আছে। দোকানগুলোতে শাড়ি, থ্রিপিস, রেডিমেট গার্মেন্টস, কসমেটিকসের দোকান, জুয়েলারি, জুতো ও শিশুদের পোশাকের বিপুল সমাহার আছে। নিচতলায় থান কাপড়ের দোকানগুলোর মধ্যে আছে তাওয়াফ গার্মেন্টস, খাজা ক্লথ স্টোর, কসমস থান কাপড় ও থিপিনের দোকান, আল মক্কা ডিপার্টমেন্টল স্টোর, শাড়িরা, নুরে মদিনা কসমেটিকসের দোকান ও খাজানা ফ্যাশন। এখানে শপিং করতে আসেন পোশাক কর্মী রাবিয়া ও জুলি। তারা বলেন, আমরা প্রতি বছরই এখান থেকে ঈদের কাপড়, কসমেটিক ও জুতা কিনি। কারণ রোজা রেখে এদিক সেদিক ঘুরতে ভালো লাগেনা। কথা হলে গৃহিনী ফারজানা বেগমের সাথে তিনি বলেন, অনেক সুন্দর সুন্দর থান কাপড় আছে এখানে। যেগুলো অল্প টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু শহরের অন্যান্য মার্কেটগুলোতে এ কাপড়গুলো অনেক দাম। তাই আমি এখান থেকে ঈদের শপিং করি ও এখানেই সেলাই করি। মার্কেটের দোকানিরা বলেন, আমরা ক্রেতাদের রুচি অনুযায়ী পোশাক এনেছি ঈদ উপলক্ষে। এখান থেকে অনেক বিত্তবানরাও শপিং করে। কারণ আমরা অনেক সাশ্রয় দামে সুন্দর সুন্দর পোশাক বিক্রি করি। আবার পাকিস্তান ও ভারতীয় পোশাকের বিপুল সমাহার আছে এখানে। ২য় ফ্লোরে টেইলার্স, পার্লার, ব্যাগের ও জুতার দোকান রয়েছে। তৃতীয়তলা থেকে উপরের দিকে বিভিন্ন অফিস, ২টি পোশাক কারখানা, বেশ কয়েকটি ডাক্তারের চেম্বার ও রিক্রুটিং এজেন্সি আছে ।
কথা হয় আধুনিক চকসুপার মার্কেট ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলমের সাথে। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমরা ক্রেতাদের সুবিধার্থে সম্পূর্ণ মার্কেটটিতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। পাশাপাশি চকবাজার থানার পুলিশের সহযোগিতা আছে।
ঐতিহ্যবাহী আধুনিক চক সুপার মার্কেট চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মালিকানাধীন একটি ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন বিপনী কেন্দ্র। ১৮৯০ সালে চক কোঠা নামে ইংরেজি ‘ড’ আকৃতির টিনশেড মার্কেট চালু হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে টিনশেড মার্কেট ভেঙ্গে ৬ তলা বিশিষ্ট বিপনী কেন্দ্র গড়ে তোলা হয় যা এখনো বিদ্যমান আছে। বিশাল আয়তনের এই বিপনী কেন্দ্রটি বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার সুপ্রাচীন মার্কেট হিসেবে পরিচিত। ১৯৮৩ সালে এই স্থাপনাটি তৈরির কাজ শুরু করে এবং ১৯৮৬ সালের ১৬ মার্চ সাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়। তবে কিছুটা নির্মাণ ত্রুটির কারণে ১৯৯৬ সালে তা সংস্কার কাজ করে ১৯৯৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পুনরায় খুলে দেয়া হয়। পরবর্তীতে আবার মার্কেটটি আধুনিকায়ন করা হয়। তখন মার্কেটটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন মেয়র আলহাজ এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট