চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত

রাষ্ট্রযন্ত্র আওয়ামীযন্ত্র হয়ে গেছে নৌকা মানে সাত খুন মাফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ২:০৬ পূর্বাহ্ণ

বিএনপির প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামকে পৃথিবীর অন্যতম পর্যটন নগরীতে পরিণত করবো। সরকারি দলের প্রার্থীর যেন তেন করে জয়লাভের চেষ্টা কিংবা নীল নকশার নির্বাচনের ষড়যন্ত্রের বিরূদ্ধে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য চট্টগ্রাম নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম ফিরে তাঁর সম্মানে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। তাঁর চট্টগ্রাম আগমনকে কেন্দ্র করে পুরাতন রেল স্টেশনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চেয়েছিল মহানগর বিএনপি। কিন্তু পুলিশের অনুমতি না পেয়ে নগরীর নুর আহমদ সড়কস্থ দলীয় কার্যালয় মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, জনগণের

ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। বিএনপি গণতন্ত্রের শেষ মাধ্যম ভোটের অধিকারকে রক্ষার জন্য আন্দোলন করছে। নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় জনগণ ভোট কেন্দ্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। ১৬ কোটি মানুষ তাকিয়ে আছে এই নির্বাচন কমিশন কবে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। ডা. শাহাদাত হোসেন রেল স্টেশনের অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়া নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র আওয়ামীযন্ত্র হয়ে গেছে। নৌকার প্রতীক মানে যেন সাত খুন মাফ। নৌকার প্রতীক মানে লালদিঘিতে সমাবেশ, রেলওয়েতে সমাবেশ, নৌকার প্রতীক মানে যখন তখন যেকোনো জায়গায় অনুমতি পাওয়ার নাম। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কেন এমন হবে? সরকার ও নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ না হলে জনগণ ভোটের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে। অন্যথায় জনগণকে ভোট কেন্দ্রমুখী করা যাবে না।

নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামকে পর্যটন নগর হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামকে বিশ্বের কাছে অন্যতম পর্যটন নগর হিসেবে গড়ে তুলবো। কর্ণফুলী নদীকে পরিবেশবান্ধব করে চট্টগ্রামকে হেলদি ও ক্লিন সিটিতে রূপান্তরিত করবো। জনগণের পাশে থাকবো এবং জনগণের পরামর্শ নিয়ে চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত নগর হিসেবে গড়ে তুলবো।
মেয়র নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামকে একটি সুন্দর পর্যটন নগরীতে পরিণত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ডা. শাহাদাত বলেন, চট্টগ্রাম নগরীকে একটি জলাবদ্ধতামুক্ত হেলদি সিটি হিসাবে ঢেলে সাজানোর সুযোগ রয়েছে। এখানে দেশের প্রধান বন্দর রয়েছে। যদি সৎ থাকা যায় এবং সৃজনশীল চিন্তা থাকে তাহলে অবশ্যই এটিতে পর্যটন নগরীতে রূপান্তর করা সম্ভব।

তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষা এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করতেই বিএনপি এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ নির্বাচনে দেখা গেছে জনগণ ভোটকেন্দ্র বিমুখ হয়ে পড়েছে। তাই মানুষকে ভোট কেন্দ্রমুখী করতে ইসিকে নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে হবে।
মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি ও দলের দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ নির্বাচন ও ঢাকা সিটি নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটচুরির যে মহোৎসব দেখেছে তাতে ভোটারেরা আতংকিত। চসিক নির্বাচনের শুরুতেই প্রশাসন ও ইসি বিএনপির প্রতি নেতিবাচক আচরণ শুরু করেছে। আমাদেরকে সমাবেশ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। তাই সবাইকে নিজের আরামকে হারাম করে ডা. শাহাদাত হোসেনকে জয়ী করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। তিনি ৪১ ওয়ার্ড ও ১৪ টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে বিএনপির একক কাউন্সিলর প্রার্থীদের জয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে আবু সুফিয়ান বলেন, ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রামবাসীর আশা ভরসার প্রতীক। চট্টগ্রামের মাটি বিএনপির ঐক্যবদ্ধ ঘাঁটি। চট্টগ্রামবাসী ঝড় বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে আজকে যেভাবে সমাবেশকে সফল করেছে ভোটের দিনও কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ডা. শাহাদাত হোসেনকে জয়ী করতে হবে। মেয়র ও কাউন্সিলরদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে এখন থেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে।

মহানগর বিএপির যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী লিটন ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলামের যৌথ পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বেগম রোজী কবীর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা একরামুল করিম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মো. হেলাল উদ্দিন, বিএনপি নেতা এম এ হালিম, আলহাজ এম এ আজিজ, চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিন, অধ্যাপক শেখ মহিউদ্দিন, ইদ্রিস মিয়া চেয়ারম্যান, এনামুল হক এনাম, আলী আব্বাস, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সামশুল আলম, হাজি মোহাম্মদ আলী, নাজিমুর রহমান, জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, ইকবাল চৌধুরী, এস এম সাইফুল আলম, নুরুল আমিন, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, কাজী বেলাল, শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আবদুল মান্নান, আহমেদুল আলম রাসেল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, কাউন্সিলর আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, শাহেদ বক্স, সামশুল হক, মনজুর আলম চৌধুরী মঞ্জু, শিহাব উদ্দিন মুবিন প্রমুখ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট