চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

হিরণের রেলের জমি দখলের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক

অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখলসহ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অবগত সংস্থাটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে অনুমতি পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিল করতে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।
চলতি মাসে ১৮ তারিখে দুদক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত) মুহাম্মদ ইউছুফের স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণের বিরুদ্ধে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধান করার জন্য দুদক কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এসব বিষয়ে অনুসন্ধান শেষে মহাপরিচালক (তদন্ত) কর্তৃক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা গেল।’

দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করাসহ একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে কাউন্সিল হিরণের বিরুদ্ধে। স্থানীয় পর্যায়ে এসব অভিযোগের প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে এ বিষয়ে দুদক প্রধান কার্যালয়ে চিঠি ইস্যু করেন। চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর -৪০৯২ তারিখ ৫/১২/২০১৯ -নং স্মারকে প্রধান কার্যালয়ে এ বিষয়ে অনুমোদন চায় চট্টগ্রাম কার্যালয়। পরবর্তীতে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর এ বিষয়ে দুদক প্রধান কার্যালয়েরর গঠিত কমিশন চূড়ান্ত অনুসন্ধানের বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত শাখায় নির্দেশ দেন। যার প্রেক্ষিতে চলতি মাসে ১৮ তারিখ পুনরায় দুদক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত) মুহাম্মদ ইউছুফের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠায় দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার খাটিয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তির একাধিক জায়গা অবৈধভাবে দখলে রেখেছেন কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণ। যাতে অবৈধভাবে বস্তি ঘর, দোকানপাট, সিএনজি ট্যাক্সি ও রিকশা গ্যারেজসহ রাজনৈতিক দলের অফিস গড়ে তোলা হয়েছে। যা থেকে মাসে কোটি কোটি টাকা আদায় করছেন তিনি। মূলত রেলওয়ের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এসব জায়গা দখলে নিয়ে বস্তি বানিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছেন এ জনপ্রতিনিধি। এরমধ্যে আমবাগান, সেগুন বাগান, বিহারী কলোনি, ঝাউতলা, ওয়ারলেস কলোনি গিরিধারাসহ রেলওয়ের একাধিক জায়গায় বস্তি রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা পূর্বকোণকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের হাতে বেশ কিছু রেকর্ডপত্র এসেছে। যেখানে অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখলসহ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি ওঠে এসেছে। তারমধ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি জায়গা দখল করার বিষয় রয়েছে। ইতোমধ্যে এসব বিষয়ে দুদকের পক্ষ থেকে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করা হয়। তবে দুদকের আইনানুযায়ী যে কোন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদসহ তার বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। তাই এ বিষয়ে কাউন্সিলরের বক্তব্য গ্রহণ করা হবে’। দুদকের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চূড়ান্ত অনুসন্ধানে নামবে দুদক। অনুসন্ধান শেষে দুদক প্রধান কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। প্রতিবেদনের আলোকে যদি উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নিতে বলেন, তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট