চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

পোস্টারে পলিথিন ব্যবহার করা যাবে না

চসিক নির্বাচন প্রচারণা পরিবেশবান্ধব করার সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের

ইফতেখারুল ইসলাম

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৫:২২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা পরিবেশবান্ধব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কোন প্রার্থী তাদের পোস্টারে পলিথিন ব্যবহার করতে পারবেন না। নির্দেশনা অমান্য করলে ম্যাজিস্ট্রেট সেই প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। সিটি নির্বাচনে ভোটের প্রচারে লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহার ও মাত্রাতিরিক্ত শব্দ দূষণ নিয়ে সমালোচনা হলে কমিশন ‘বিকল্প’ ভাবতে শুরু করে। তার অংশ হিসেবেই নির্বাচন কমিশন এই উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান নির্বাচনকে পরিবেশবান্ধব করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনভাবেই পরিবেশদূষণ হয় এমন কিছু নির্বাচনের প্রচারে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। প্রথমে প্রার্থীদের অনুরোধ করা হবে। তাতে কাজ না হলে ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করবেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি এই ধরনের উদ্যোগ নেয় অবশ্যই তা মানা হবে। যুগ যুগ ধরে যেসব নির্বাচন হয়ে এসেছে তখন তো পোস্টার লেমিনেশন করা হয়নি। সে

সময়ের নির্বাচনগুলিতে উৎসাহ এবং উদ্দীপনার কমতি ছিল না। তিনি নির্বাচন কমিশনের এ্ই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে তিনি একটি পরিবেশবান্ধব নগর গড়তে চান। তাই নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। নগর বিএনপি’র সভাপতি ও সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, তাঁর স্বপ্ন প্রাচ্যের রাণীকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা। তাছাড়া নগরীর জলাবদ্ধতার জন্য অনেকগুলো কারণের মধ্যে পলিথিন অন্যতম। নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রচারণা যতবেশি চালানো যাবে, ভোটাররা ততবেশি উদ্বুদ্ধ হবে। উদ্বুদ্ধ হলে ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে। তাতে ভোট কাস্টের হার বাড়বে। প্রচারণায় উৎসবের আমেজ আনতে সাদা-কালো পোস্টারের পাশাপাশি কিছু রঙিন পোস্টার ছাপানোর অনুমতি দিলে প্রচারণায় উৎসবের আমেজ আসতো।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পরিবেশদূষণকারী পলিথিনে মোড়ানো পোস্টার লাগানো বন্ধ করার জন্য একজন আইনজীবী উচ্চ আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় যে কোন নির্বাচনী প্রচারণায় লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহারে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গত ২২ জানুয়ারি বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সিটি নির্বাচন’সহ যে কোন নির্বাচনী প্রচারণায় প্লাস্টিক লেমিনেটেড পোস্টার তৈরি ও প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি ওই নির্বাচনে যেসব পোস্টার লাগানো হয়েছিল তা ভোটশেষে দ্রুত সরিয়ে ফেলতেও বলা হয়। একইসাথে সেইদিন থেকে সারাদেশে সকল প্রকার লেমিনেটেড পোস্টার তৈরি ও প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশ দেন।

সচেতন মহলের অভিমত, নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার অংশ হিসেবে পোস্টারে ছেয়ে যায় বিভিন্ন এলাকা। তবে ভোটশেষে কোন প্রার্থীই সেসব পোস্টার সরিয়ে নেন না। এতে ক্ষতি হয় পরিবেশের।

এদিকে, ঢাকা ১০ আসনের উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থীদের কাছে ৫টি প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রস্তাবসমূহ হল, ১. অনুমোদিত মাত্রায় মাইক বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে। অনুমোদিত ক্যাম্পে পোস্টার, ব্যানার, ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন করা যাবে। ২. পোস্টার ঝোলাতে হবে ইসি নির্ধারিত জায়গায়; একেকটি জায়গায় পালা করে মাইকিং চলবে। ৩. শোভাযাত্রা-পদযাত্রা সীমিত করতে হবে; প্রত্যেক প্রার্থীকে নির্দিষ্ট দিন ও সময় নির্ধারণ করে দেয়া হবে। ৪. জনসভার জন্য এক বা একাধিক জায়গা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে; পর্যায়ক্রমে অনুমোদন নিয়ে সভা করতে হবে। ৫. তোরণ নির্মাণ, ফুটপাতে ক্যাম্প, রাস্তায় পথসভা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নীতিমালায় কিছুটা পার্থক্য আছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট