চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

প্রয়াত নেতৃবৃন্দের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জেয়ারত

লেখকের দৃষ্টিতে বই মেলা

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৬:৫৯ অপরাহ্ণ

রাজীব রাহুল, গল্পকার। চাকরির পাশাপাশি লিখছেন নিয়মিত। সমাজের নানা অসঙ্গতিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন। এবারই প্রথম চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে গল্পগ্রন্থ ‘প্রেত চোখের মানুষ’। পূর্বকোণের পক্ষ থেকে গল্পকারকে কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেই প্রশ্নের উত্তর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল। বই করার প্রয়োজনীয়তা প্রশ্নে গল্পকার বলেন, মানুষ যেদিন কাগজ আর হরফ আবিষ্কার করেছে সেদিনই বিশ্বে বিপ্লব ঘটে গেছে। অতীতেও নানা বিষয়ে অনেক বই লেখা হয়েছে। সেই সময়ের লেখকেরা তাদের সময়ের প্রতিনিধিত্ব করেছে। আমিও লেখার মাধ্যমে আমার সময়কে ধরার চেষ্টা করি

আগামী প্রজন্মের জন্য। শুধু লিখলেই তো হয় না, সেই লেখাকে মলাট বন্ধ করার দায় থেকে যায়। সেই জন্যই বই করা।

বই প্রকাশের অনুভূতি নিয়ে জানান, প্রথম বই প্রকাশ নিয়ে অনেক অগ্রজ লেখকের তিক্ত অনুভূতির কথা জেনেছি। আমারও কিছু অভিজ্ঞতা হলো, ভালো মন্দ উভয়ের। প্রথম বই মানে প্রথম সন্তানের মতো। এই আনন্দের কথা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। মানুষ শুধু কষ্ট পেলেই কাঁদে না। কিছু আনন্দের মুহূর্ত আছে, যার আনন্দে মানুষের চোখে জল নামে। আমারও প্রথম বই হাতে পাওয়ার পর চোখের জল গড়িয়েছে।
বই প্রকাশে জটিলতা বিষয়ে বলেন, আমার বই প্রকাশে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনের মঈন ভাই ও ফাহাদ ভাইয়ের ভূমিকা বেশি। অনেক প্রকাশক নাকি তরুণদের প্রথম বই করতে চান না। লেনদেনের একটা বিষয় সামনে আসে কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সেরকম হয়নি বরং প্রকাশকই আমার পা-ুলিপি ছাড়া আর কিছুই দাবি করেনি। তবে প্রায়ই প্রকাশকরা লেখকের পা-ুলিপি পড়েন না, এক্ষেত্রে তাদের আরো আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন মনে করি।
বই বিক্রি নিয়ে লেখক জানান, ‘সেটা তো অবশ্যই, তবে আমি হতাশ নই। আশাবাদী মানুষ। আমি জানি কিভাবে এগোতে হয়। প্রয়োজনে আরো বেশি প্রস্তুতি নিয়ে বই করবো। অধিক পঠন পাঠন, লেখাকে অধিক পাঠকের কাছে নিয়ে যেতে পারে।

লেখার ক্ষেত্রে কোন বিষয় বেশি গুরুত্ব পায় সেই প্রশ্নের উত্তরে জানান, লেখার ক্ষেত্রে সামাজিক দায়বদ্ধতা তো আছেই, তারপরও বিষয় নির্বাচন আসে কারণ বিষয় নির্বাচনের পর আপনাকে তথ্য ও বিষয়টি জানতে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হয়। পরের বিষয়টি বানান, যতি চিহ্নের ব্যবহার ও ব্যাকরণের দিকে নজর দিতে হয়।

নতুন লেখকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি নিজেও একজন তরুণ। তারপরও বলবো লিখতে গেলে পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। মানুষ তার যাপনের পাঠ থেকেই অনেক কিছু শিখে যায়। কিন্তু তা লেখায় মুন্সীয়ানা দেখানোর রাস্তা তৈরি করে পাঠের পরিধি। তবে একটা কথা সেটা হলো একজন তরুণ লেখক কী লিখবে, কেন লিখবে, কী পড়বে, কেন পড়বে তার একটা উত্তর নিজের কাছেও থাকা প্রয়োজন। কারণ সময় খুব কম।
প্রকাশিত বই সম্পর্কে বলেন, এবারের বইমেলায় প্রকাশিত গল্পগ্রন্থটিতে নয়টি গল্প আছে। গল্পের বিষয় মূলত রাজনীতি, মানবিক মূল্যবোধ, মুক্তিযুদ্ধ।
বইমেলা নিয়ে বলেন, ‘চসিকের আয়োজনে গতবারের মতো এবারও চট্টগ্রামে অভিন্ন বইমেলা হচ্ছে। এবারের বইমেলার পরিসর এতো বড় যে, ঢাকার বাংলা একাডেমির বইমেলার পর চট্টগ্রামের বইমেলাই সেরা সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সবচেয়ে খুশির খবর চট্টগ্রামের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের বইয়ের মানের ব্যাপারে সচেতন হচ্ছে। এই ক বছরে বেশকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আশার আলো দেখাচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট