চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

১৪ ওয়ার্ডে প্রার্থী পাল্টাল আ. লীগ

বাদ পড়াদের অধিকাংশই মেয়র নাছিরের অনুসারী। হ নতুন ২০ জনের বেশিরভাগই মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হ ২৭ ওয়ার্ডে পুরোনোরাই প্রার্থী

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১ সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪ ওয়ার্ডে প্রার্থী পরিবর্তন করেছে আওয়ামী লীগ। এরমধ্যে কয়েকজন ‘বিতর্কিত’ আলোচিত কাউন্সিলর রয়েছেন। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুনখারাবি, ক্ষমতার অপব্যবহার, পাহাড় ও জমি দখলের অভিযোগ থাকায় বাদ পড়েছেন অধিকাংশ কাউন্সিলর। বাদ পড়াদের মধ্যে অধিকাংশই বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। চসিকের ৬ ওয়ার্ডে রয়েছেন বিএনপি ও জামায়াত দলীয় কাউন্সিলর। এসব ওয়ার্ডে তারুণ্যনির্ভর নতুন মুখ আনা হয়েছে। পাল্টানো ও নতুন প্রার্থীর ২০ জনই সাবেক মেয়র প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরী অনুসারী।

বাদ পড়াদের মধ্যে রয়েছেন আলোচিত-সমালোচিত বর্তমান কয়েক জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, পাহাড় ও জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের কারণে প্রার্থী পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র। নবীন আর প্রবীণের সমন্বয়ে এবার স্বচ্ছ ভারমুর্তির প্রার্থী প্রধান্য দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

বাদ পড়াদের মধ্যে রয়েছেন ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর তৌফিক আহমদ চৌধুরী বাবু। তার বিরুদ্ধে হাটহাজারী উপজেলার যুবলীগকর্মী নূরে এলাহীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী মো. শফিউল আজিমকে প্রার্থী ষোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। ২নং জালালবাদ ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর শাহেদ ইকবাল বাবু বাদ পড়েছেন। দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে নগর যুবলীগের সদস্য মো. ইব্রাহীমকে। বাবুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকায় বাদ দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানায়। ৫ নং মোহরা ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর হচ্ছেন বিএনপির মোহাম্মদ আজম। আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিয়েছে নগর ছাত্রলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কাজী নুরুল আমিন মামুনকে। ৯ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডে বাদ পড়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিম। তার বিরুদ্ধে পাহাড় কাটা ও পাহাড় দখলের অভিযোগ। এখানে প্রার্থী করা হয়েছে পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আবছার মিয়াকে। ১১নং দক্ষিণ কাট্টলি ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মোরশেদ আকতার চৌধুরী বাদ পড়েছেন। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. ইসমাইলকে মনোনয়ন দিয়েছে আ. লীগ। ১২ নং সরাইপাড়া ওয়ার্ডে বাদ পড়েছেন কাউন্সিলর মো. সাবের আহমদ। তার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য মহিউদ্দিন সোহেল হত্যার অভিযোগ রয়েছে। দল প্রার্থী দিয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মো. নুরুল আমিনকে। ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডে বাদ পড়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণ। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। এখানে দল প্রার্থী দিয়েছে নগর যুবলীগের সদস্য মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীকে। ১৪ নং ওয়ার্ডে বাদ পড়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর এ এফ কবির আহমেদ মানিক। তার বিরুদ্ধে পাহাড় দখলের অভিযোগ রয়েছে। দল প্রার্থী দিয়েছে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য আবুল হাসনাত মো. বেলালকে। ১৭নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর হচ্ছেন বিএনপির এ কে এম আরিফুল ইসলাম ডিউক। এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিয়েছে সাবেক কাউন্সিলর মো. শহীদুল আলমকে।
১৯ নং দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছে ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মো. নুরুল আলম। তিনি বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপি মো. এয়াছিন চৌধুরী আশু ছোট ভাই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থী হচ্ছেন দুই সহোদর। এনিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।

২৫ নং রামপুরা ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর এস এম এরশাদুল্লাহকে বাদ দিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সবুর লিটনকে। ২৬ নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড বর্তমান কাউন্সিলর মো. আবুল হাসেম হচ্ছেন বিএনপি দলীয়। নগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. হোসেনকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ২৭ নং দক্ষিণ আগ্রাবাদের বর্তমান কাউন্সিলর এইচ এম সোহেলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তাকে বাদ দিয়ে দলের প্রার্থী করা হয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরীকে। ২৮ নং পাঠানটুলি ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মোহাম্মদ আবদুল কাদের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তাকে বাদ দিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাহাদুরকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। ৩০ নং পূর্ব মাদারবাড়ি মাজহারুল ইসলাম চৌধুরীকে বাদ দিয়ে দলের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ চৌধুরীকে। ৩১ নং আলকরণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেক সোলায়মান সেলিমকে বাদ দিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবদুস সালামকে। ৩৩ নং ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লবকে বাদ দিয়ে দলের প্রার্থী করা হয়েছে নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিনকে। বিপ্লব মেয়র নাছিরের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। ৩৪ নং পাথরঘাটা ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর হচ্ছেন বিএনপির মোহাম্মদ ইসমাইল বালি। আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য পুলক খাস্তগীরকে। ৩৭ নং উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হচ্ছেন জামায়াতের মো. শফিউল আলম। এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা মো. হোসেন মুরাদকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। ৪০নং উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর মো. জয়নাল আবেদীনকে বাদ দিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল বারেককে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট