চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বড় ভাইয়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি রিয়াজুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

‘কিছুক্ষণ হাতগুলো নড়াচড়া করছেন, কিছুক্ষণ আবার চোখের পাঁপড়িগুলো উল্টে দেখছেন রিয়াজুল ইসলাম। এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করে ফের শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিয়ে চেষ্টা করছেন ভাইয়ের ঘুম ভাঙ্গানোর। কিন্তু সব চেষ্টাই বৃথা রিয়াজুলের’। দৃশ্যটি ছিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ছোট মর্গের সামনের। রিয়াজুল ইসলামের বড় ভাই মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু ভর্তির কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয় তার। তবে এ মৃত্যু যেন মেনে নিতে পারছে না ছোট ভাই রিয়াজুল। সরেজমিনে দেখা যায়, আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর চিকিৎসকরা তাকে মর্গে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু মৃত্যুর বিষয়টি কিছুতেই মানতে রাজি নয় রিয়াজুল। স্ট্রেচারে থাকা বড় ভাইয়ের দেহ এদিক-ওদিক করে বারবার ঘুম ভাঙ্গানোর চেষ্টা করে যাওয়ার দৃশ্য উপস্থিত

মানুষদেরও জল এনেছে চোখে। মন না মানায়- একবার স্ট্রেচারে করে জরুরি বিভাগেও নিয়ে যায়, যেন ভাইকে মৃত ঘোষণা না করা হয়। কিন্তু সব চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে রিয়াজুলের।

গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর বন্দর থানাধীন মাইলের মাথা এলাকায় লরির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন আবদুল্লাহ (৩০)। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাটহাজারী উপজেলার ছড়ারকুল এলাকার মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার ছেলে। তিনি নগরীর ইপিজেডের একটি বিদেশি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন।
রিয়াজুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, ‘অফিসের কাজ শেষে মোটরসাইকেল যোগে ফেরার পথে লরির ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ভাই কথা বলেছিল। কিন্তু এখন কেন কথা বলছে না। আমার ভাই তো বেঁচে আছে। আমার মন বলছে, ভাই বেঁচে আছে’।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক আবু হামিদ জানায়, ‘লরির ধাক্কা লেগে আবদুল্লাহর হাতে ও ঘাড়ে আঘাত পেয়েছে। হাসপাতালে আনার কিছুক্ষণ পরেই তার মৃত্যু হয়’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট