চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

এবার পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক ইউনিট

চমেক হাসপাতাল ২০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক ইউনিট হবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পরিকল্পনা চেয়ে চিঠি

ইমাম হোসাইন রাজু

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৩:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ওপেন হার্ট সার্জারি কিংবা এনজিও প্লাস্টি, সবকিছুতেই সাফল্য আছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের কার্ডিয়াক বিভাগের। দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে প্রথম কার্ডিয়াক সার্জারি চালু হয় এখানে। এসব সাফল্যের পরও নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যেই রোগীদের সেবা দিতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। সমস্যার মধ্যে প্রধানতম হল- শয্যা ও জনবল সংকট। তবে সুখের খবর হচ্ছে- পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক ইউনিট (শিশুসহ) স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে চমেক হাসপাতালে ২০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক ইউনিট (শিশুসহ) স্থাপন করার জন্য পরিকল্পনা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যাতে শয্যা ও জনবল কাঠামোর একটি পরিকল্পনাও চাওয়া হয় বলে পূর্বকোণকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, শিশুসহ ২০০ শয্যার একটি পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক ইউনিট চালুর জন্য স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে একটি চিঠি এসেছে। সেখানে জনবল কাঠামোসহ বর্তমান অবস্থার কথা উল্লেখ করে তথ্য পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। শীঘ্রই সকল তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য দপ্তরে পাঠানো হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও গবেষণা বিভাগের পরিচালকের স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিভাগীয় সাতটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক ইউনিট (শিশু সহ) স্থাপনের লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। উক্ত প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়নের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হল।

চিঠিতে কার্ডিওলজি, কার্ডিয়াক সার্জারি, শিশু কার্ডিওলজি, শিশু কার্ডিয়াক সার্জারি, সিসিইউ ও এ্যানেসথেসিওলজি এর বর্তমান শয্যা (যদি থাকে) এবং বর্তমানে নিয়োজিত চিকিৎসক ও শূন্য পদের সংখ্যা উল্লেখ করে চাহিদা পত্রও পাঠাতে বলা হয়।

এদিকে, বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের এ ইউনিটে শয্যা রয়েছে সর্বমোট এক’শ টি। কিন্তু এখানে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকেন কমপক্ষে তিন’শ থেকে সাড়ে তিন’শ জন। শয্যা না থাকায় অনেককে বারান্দায় কিংবা ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এ নিয়ে চিকিৎসকদেরও হিমশিম খেতে হয়। তবে নতুন করে শয্যা এবং জনবলসহ পূর্ণাঙ্গ ইউনিট স্থাপন হলে হৃদরোগ সেবায় আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন হৃদরোগ চিকিৎসকরা। শুধুমাত্র রাজধানীতে সরকারিভাবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ছাড়া দেশের অন্য কোথাও পূর্ণাঙ্গ হৃদরোগ ইউনিট নেই। তবে চট্টগ্রামসহ অন্য বিভাগে এটি হলে রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় যেমন কমে আসবে, তেমনি হাতে কাছেই সেবা পাবেন তারা। এছাড়া বর্তমানে শিশুদের মধ্যেও হৃদরোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে বৃহত্তর চট্টগ্রামের কোথাও শিশুদের জন্য পৃথকভাবে হৃদরোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. প্রবীর কুমার দাশ পূর্বকোণকে বলেন, ‘দিন দিন চট্টগ্রামে উদ্বেগজনকহারে হৃদরোগের আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। শয্যা সংকটে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদেরও সংখ্যা বাড়লেও তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই চট্টগ্রামে। অনেক সময় পূর্ণাঙ্গ সেবা পেতে অনেককেই ঢাকায় পাড়ি দিতে হয়। তবে চট্টগ্রামে এমন পূর্ণাঙ্গ ইউনিট চালু হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি চালু হলে যেমন শয্যা সংকট কাটবে, তেমনি এ অঞ্চলের চিকিৎসা সেবা আরও এগিয়ে যাবে’।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে পূর্বকোণকে বলেন, ‘চট্টগ্রামসহ আটটি বিভাগে ২০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক ইউনিট স্থাপনের চাহিদাপত্র হাতে পেয়েছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে শীঘ্রই স্বাস্থ্য দপ্তরে পাঠানো হবে। যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট