চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

দেয়ালচিত্রে সচেতনতা !

২২ মে, ২০১৯ | ২:২০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন ভবনজুড়ে গত কদিন ধরেই শোভা পাচ্ছে দারুণ সব দেয়ালচিত্র। শুধু সৌন্দর্যবর্ধন নয়, মনোলোভা এই চিত্রগুলোতে দেয়া আছে দারুণ সব সচেতনতামূলক বার্তা।
জামালখান চেরাগী পাহাড় মোড়ে দেখা মিললো নিরাপদ খাদ্য সচেতনতা তৈরিতে ‘বিষ নয় চাই বিশুদ্ধ খাবার’ শিরোনামে দারুণ একটি দেয়ালচিত্র। নগরীর হালিশহর অ্যাক্সেস সড়কের মাথায় একটি ভবনে দেখা গেলো ‘বাধাকে নয় ভয়, ভেঙ্গেই করি জয়’ শিরোনামে একটি চিত্র। আবার চৌমুহনীতে দেখা গেলো নদী দূষণ রোধে সচেতনতা তৈরিতে একটি চিত্র। এছাড়াও, আরো দু’টি চিত্রে উঠে এসেছে মুঠোফোন ফেলে মাঠে খেলতে যাবার প্রতি আগ্রহ তৈরিতে ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আহ্বান। সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা এই ভুলগুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির এই অভিনব উদ্যোগটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো এর পেছনে রয়েছে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড।
প্রযুক্তি যেমন আমাদের দিয়েছে গতিশীলতা, তেমনি বাড়িয়েছে আমাদের পারিপার্শ্বিক জগতের কলেবর। আবার এই প্রযুক্তি নির্ভরতাই আমাদের বাস্তবতা থেকে ঠেলে দিয়েছে বহুদূরে। আপন হাতের মুঠো যেমন চোখের সামনে হিমালয়কেও ঢেকে দেয় তেমনি মুঠোফোনের স্ক্রিন বিশাল এক ভার্চুয়াল জগতের জানালা খুলে দিলেও ঢেকে দেয় আপন প্রতিবেশকেই। নদী অববাহিকার পলল ভূমিতে অবস্থিত আমাদের বাংলাদেশ আবহমানকাল থেকেই পরিচিতি নদীমাতৃক দেশ হিসেবে। নদী যেন আমাদের দেশের ধমনী স্বরূপ। অথচ অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের ফলে সেই নদীগুলোই এখন দূষণের ফলে অস্তিত্ব হারানোর হুমকিতে। এছাড়াও, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করাও এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের জন্যে। ভেজাল আর কৃত্রিমতার ভিড়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছি আমরা সকলেই। অথচ এর প্রতিটি ঘটনাতেই কোনো না কোনো উপায়ে হাত রয়েছে আমাদেরই। প্রত্যেকের নিত্যদিনকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভুলের মাশুল দিয়ে চলেছি আমরা সকলেই।
তাই আমাদের নিত্যদিনকার এই ভুলগুলো থেকে আমাদের নিজেদের শোধরাতেই ‘রং(ভুল) বদলে রঙিন করি’ শিরোনামের এই ক্যাম্পেইনের আয়োজন করছে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমাদের জীবনকে রাঙিয়ে তোলার পথে বাধাগুলো সম্পর্কে সচেতন করে তুলতেই নগরের দেয়ালে দেয়ালে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে রঙের ছটা। এবং প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রামে শুরু করা এই কর্মসূচি পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে দেয়া হবে পুরো দেশজুড়েই। দেয়ালচিত্রগুলো এঁকেছে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের মার্কেটিং এর জেনারেল ম্যানেজার এ.কে.এম সাদেক নেওয়াজ বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা পরিবেশ দূষণ, বৈষম্য, নিরাপদ খাদ্যের অভাব ও অতিরিক্ত প্রযুক্তি নির্ভরতা। তরুণদের পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এ ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন করে তুলতেই আমরা বেছে নিয়েছি দেয়ালচিত্রের মতো দারুণ এই মাধ্যমটি। এর মাধ্যমে আমাদের প্রতিদিনকার ভুলগুলো শুধরে নেবার উপায়টিই তুলে ধরতে চেয়েছি আমরা।’
বাঙালির রাজনৈতিক পরিচয়ের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে মিশে রয়েছে দেয়ালচিত্রের ইতিহাস। ভারতছাড় আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন কিংবা মুক্তিযুদ্ধ বাঙালিকে আত্মিপরিচয় সঙ্কটের মুহুর্তে দেয়ালচিত্রই ছিলো জনসচেতনতা তৈরির অন্যতম মাধ্যম। বর্তমানে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমরা দিন দিন যেভাবে অস্তিত্ব সঙ্কটের হুমকিতে রয়েছি, এই হুমকি মোকাবেলায় দেয়ালচিত্রের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরিতে বার্জারের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।-বিজ্ঞপ্তি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট