চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চবিতে অবরোধ শিথিল

ছাত্রলীগের মারধরের ঘটনায় ৩ তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব সংবাদদাতা, চবি

২৯ জানুয়ারি, ২০২০ | ৪:৪৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগের দাবিতে ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ শিথিল করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ছাত্রলীগের উপগ্রুপ ‘রেড সিগনালের (আরএস) নেতা রকিবুল হাসান দিনার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিকে ছাত্রলীগের চলমান মারামারি-অবরোধ ও মেয়েদের আবাসিক হলের একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অবরোধ শিথিলতার বিষয়ে আরএসের নেতা রকিবুল হাসান দিনার বলেন, ‘সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নির্দেশে রোববার পর্যন্ত আমরা অবরোধ শিথিল করেছি।’ এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘এখন ট্রেন্ড হয়ে গেছে কিছু হলেই অবরোধ। নিজেরা নিজেরা ঝামেলা করবেন। দোষ হবে সভাপতি-সেক্রেটারির। এসব ঘটনায় যারা জড়িত কেন্দ্রের সাথে কথা বলে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে অবরোধের কারণে সোমবার দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও গতকাল মঙ্গলবার স্বাভাবিক ছিল। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাসগুলোও স্বাভাবিক নিয়মে চলেছে।

ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী মাস্টার তন্ময় চৌধুরী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ঝামেলার কারণে সোমবার দুপুর থেকে শাটল ট্রেন চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার স্বাভাবিক ছিল।’
এর আগে গত ২০ জানুয়ারি প্রক্টর অফিসে কথা কাটাকাটির জেরে তাজউদ্দিন আহমেদ শুভ নামে আরএসের এক কর্মীকে মারধর করে সিক্সটি নাইন কর্মী ইফরাতুল আলম পিটু। এ ঘটনার জের ধরে ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন সংলগ্ন একটি খাবারের দোকানে সিক্সটি নাইন গ্রুপের তিন কর্মীকে মারধর করে আরএসের কর্মীরা। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত সোমবার আরএসের দুই কর্মীকে মারধর করে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা। একই দিন এসব ঘটনায় দোষীদের বিচার ও ঘটনার দায়ভার গ্রহণ করে সাধারণ সম্পাদক টিপুর পদত্যাগের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয় আরএস গ্রুপ।
পৃথক ৩ ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি

এদিকে পৃথক তিন ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এ কমিটি গঠন করে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান।

জানা যায়, গত ১৩ জানুয়ারি বিশ^বিদ্যালয়ে মেয়েদের আবাসিক হলের একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে সহকারী প্রক্টর মুহাম্মাদ ইয়াকুবকে প্রধান করে সহকারী প্রক্টর মরিয়ম লিজা ও প্রীতিলতা হলের সিনিয়র আবাসিক শিক্ষক ড. শ্রীকান্ত চৌধুরীকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
এছাড়া ছাত্রলীগের চলমান মারামারি ও অবরোধের ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট আরো দুটি কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে বিজয় ও সিএফসি গ্রুপের মধ্যকার কোন্দলের ঘটনায় সহকারী প্রক্টর আহসানুল কবীর ও জিয়াউল ইসলাম এবং সিক্সটি নাইন ও আরএস গ্রুপের মধ্যকার পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ ইয়াকুব ও রিফাত রহমানকে সদস্য করে কমিটি গঠন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বলেন, ‘অবরোধের ডাক দেওয়া ছাত্রলীগের উভয় পক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা স্থিতিশীল থাকবে বলে আমাদের জানিয়েছেন। আর পৃথক তিন ঘটনা তদন্তে তিনটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট