চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চসিক নির্বাচন: নতুন করে গা ঝাড়া প্রার্থীদের

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন 

১৬ ডিসেম্বর, ২০২০ | ২:০৭ অপরাহ্ণ

প্রায় ৯ মাস প্রচারণা বন্ধ থাকার পর ভোটের আমেজ শুরু হচ্ছে নগরীতে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার অপেক্ষায় ভোটের ডামাডোল। তবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর পুর্ণোদমে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিয়েছেন প্রার্থীরা। প্রার্থীদের নির্বাচনী কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের ভিড় বেড়েছে। তবে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা বন্ধ থাকলেও করোনা সংক্রমণে মানবিক সহায়তা নিয়ে মাঠে ছিলেন প্রার্থীরা। 

রিটার্নিং অফিসার ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান পূর্বকোণকে বলেন, ‘এখনো এ বিষয়ে কমিশনের কোনো নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা পাওয়ার পর পরিপত্র জারি করা হবে।’ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ২৯ মার্চ ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। ৯ মার্চ প্রতীক বরাদ্দের পর ভোটের মাঠে ছিলেন প্রার্থীরা।

কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর চসিক নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা দলবল নিয়ে প্রচার-প্রচারণা প্রচুর লোকের সমাগম হয়ে আসছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ায় ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৭ জানুয়ারি পুরোনো তফসিলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ তারিখ ঘোষণা করা হয়। ইসির সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ আলমগীর এই ঘোষণা দেন।

রিটার্নিং অফিসার কার্যালয় জানায়, মেয়র পদে সাতজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭১ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৫৭ প্রার্থী রয়েছেন। এরমধ্যে চার ওয়ার্ডে নির্বাচন হচ্ছে না কাউন্সিলর প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে। মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী, বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন, পিপলস পার্টির আবুল মনজুর, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী। আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘প্রচারণা বন্ধ থাকলেও করোনা সংক্রমণে মানবিক সহায়তা ও দলীয় সভা-সমাবেশে উপস্থিত ছিলাম। এখন নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা মেনেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করব।’ বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ইসির নির্দেশনা মেনেই প্রচারণা শুরু করব। এখন দলীয় নেতাকর্মী ও কেন্দ্র কমিটি নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক সেরে নেব।’ তিনি আরও বলেন, করোনাকালে দেশের দুঃসময়ে জনগণের পাশে ছিলাম। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে আবার মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’  চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দেবেন ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৫২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭২৩ জন। নারী ভোটার নয় লাখ ৫২ হাজার ৩২৯ জন। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনের চেয়ে এবার ভোটার বেড়েছে এক লাখ ৩৭ হাজার ৬০৩ জন।

৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোট দেবেন ভোটাররা। ভোটকক্ষ গতবারের চেয়ে ২০ কমে নির্ধারণ করা হয়েছে চার হাজার ৮৮৬টি। সব কেন্দ্রে  ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে।

এদিকে, কাউন্সিলর প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে সাধারণ ওয়ার্ড ৩০, ৩৭ ও ৪০ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৬-এর আসন্ন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে না। এসব ওয়ার্ডে নতুন তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে বর্তমান প্রার্থীরা বহাল থাকবেন। এছাড়াও ১৮ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হারুনুর রশিদ একক প্রার্থী থাকায় এ ওয়ার্ডেও কাউন্সিলর পদে ভোট হবে না। এ নিয়ে ভোটের মাঠে থাকবেন মেয়র পদে সাতজন, কাউন্সিলর পদে ১৫৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫২ জন প্রার্থী।

মেয়র পদে সেই অতিপরিচিত নৌকা আর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন দুই দলের দুই প্রার্থী। অন্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা দলীয় এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজস্ব প্রতীক নিয়ে মাঠে নামছেন। কাউন্সিলর প্রার্থীরা লড়বেন নিজস্ব প্রতীক নিয়ে। এবার কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে একক প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে বড় দুই দল আ. লীগ ও বিএনপি। হরেক রকমের প্রতীকসংবলিত পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে যাবে পাড়া-মহল্লা, অলিগলি। দোয়া আর ভোট চেয়ে চষে বেড়াবেন প্রার্থীরা।

 

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট