চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

মুক্তি মিলে সত্যে, মিথ্যা করে রূপ নেয় ধ্বংসে

মাহদী হাসান

৮ নভেম্বর, ২০১৯ | ৯:২৭ পূর্বাহ্ণ

সত্য কথা যারা বলেন, তাদের মর্যাদা অনেক। আল্লাহর কাছে মর্যাদাবান হওয়ার অন্যতম মাধ্যম সত্যবাদিতা। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নবী, সত্যবাদী, শহীদ ও সৎ ব্যক্তিবর্গ আল্লাহ এদেরকে  দান করেছেন নেয়ামত।’ (সূরা নিসা : ৬৯)। সত্যবাদীদের বিশেষ মর্যাদা আল্লাহ তায়ালার কাছে এই আয়াত থেকেই স্পষ্ট হয়। এখানে চার শ্রেণির মর্যাদা মানুষের ভেতর সত্যবাদীদের কথা দ্বিতীয় স্তরে উল্লেখ করেছেন।

সব নবী ও রাসুলদের অন্যতম গুণ সত্যবাদিতা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আপনি এই কিতাবে ইবরাহিমের কথা বলুন, নিশ্চয় তিনি ছিলেন সত্যবাদী নবী।’ (সূরা মারয়াম : ৪১)। আরও বলেছেন, ‘এই কিতাবে ইসমাঈলের কথা বলুন, নিশ্চয় তিনি ছিলেন প্রতিশ্রুতি পালনে সত্যাশ্রয়ী এবং তিনি ছিলেন রাসুল ও নবী।’ (সূরা মারয়াম : ৫৪)।

মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘এই কিতাবে ইদরিসের আলোচনা করুন, নিশ্চয় তিনি সত্যবাদী নবী ছিলেন।’ (সূরা মারিয়াম : ৫৬)। আল্লাহ আলোচনা করেছেন এরকম আরও অনেক নবী ও প্রিয় বান্দার বিশেষ গুণ হিসেবে সত্যবাদিতার কথা। কে না চায় আল্লাহ প্রিয় বান্দা হতে! সুতরাং সবসময় চাই মিথ্যা ছেড়ে সত্যবাদিতার চর্চা করা।

সত্যবাদিতা ছিল রাসুল (সা.)-এর সবচেয়ে প্রিয় সাহাবী হযরত আবু বকর (রা.)-এর গুণ। এ জন্য তার নাম হয়ে যায় ‘সিদ্দিক’ অর্থাৎ সত্যবাদী। যে ব্যক্তি সদা সত্য বলবে আল্লাহর রাসুল (সা.) গ্রহণ করবেন স্বয়ং তার জান্নাতের দায়িত্ব। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হযরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আমার নিকট ছয়টি বিষয়ের জিম্মাদার হলে আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের জিম্মাদার হবো। ছয়টি বিষয় হচ্ছে- ১. তোমরা কথা বললে সত্য বলবে। ২. অঙ্গীকার করলে তা পূরণ করবে। ৩. আমানত যথাযথ আদায় করবে। ৪. হেফাজত করবে তোমাদের লজ্জাস্থান। ৫. নিম্নগামী রাখবে তোমাদের দৃষ্টি এবং ৬. তোমাদের হাত অন্যায় কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে।’ (মুসনাদে আহমদ : ২২৮০৯)।

মানুষ চায় তার যেন কোনো ক্ষতি না হয়। সত্যবাদিতার সঙ্গে নবীজি এর নিশ্চয়তা দিয়েছেন। সত্য বলার কারণে অনেক সময় বাহ্যত ক্ষতি ও বিপদের শঙ্কা দেখা দিলেও মূলত এতেই রয়েছে পূর্ণ ও চূড়ান্ত নিরাপত্তা। হাদিসে এসেছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমার মাঝে চারটি স্বভাব পাওয়া যায়, তোমার কোনো ক্ষতি হবে না এমনকি দুনিয়ার সব কিছু ধ্বংস হলেও। তা হচ্ছে- ১. আমানত রক্ষা করা। ২. সত্যবাদী হওয়া। ৩. সচ্চরিত্রবান হওয়া ও ৪. হালাল খাবার খাওয়া।’ (মুসনাদে আহমদ : ৬৬৫২)।

অন্য একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সত্য অবলম্বন কর সর্বাত্মকভাবে। যদিও বাহ্যিক দৃষ্টিতে সত্য বলার মধ্যে ধ্বংস দেখতে পাও। অর্থাৎ পরিস্থিতি এমন যে, তোমাদের কাছে, সত্য বললে বিপদে পড়বে দৃশ্যত মনে হলেও সত্য বল। কেননা সত্যের মধ্যে আল্লাহ মুক্তি রেখেছেন।’ (ফাইজুল কাদির : ৩২৫২)। অপর হাদিসে এসেছে, ‘সত্য দেয় মুক্তি, মিথ্যা করে ধ্বংস ।’ (বুখারি : ৮/৩০)।

পূর্বকোণ/রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট