চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বায়ুদূষণ ও রাসায়নিক দূষণ বায়ু দূষণ:

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ

ক্ষতিকারক পদার্থ বাতাসে মেশার ফলে বায়ু দূষণ হয়। বায়ুদূষণের ফলে স্বাস্থ্যেয়র ক্ষতি হয়, পরিবেশ এবং সম্পদও নষ্ট হয়। এর ফলে বায়ুম-লে ওজোন স্তর পাতলা হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে জলবায়ুর উপর এবং তা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনেরও কারণ হয়।
শিল্প, যানবাহন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং নগরায়ন বায়ুদূষণের কয়েকটি প্রধান কারণ। নানা উপায়ে বায়ুদূষণ ঘটে যার অনেকগুলিই আবার মানুষের নিয়ন্ত্রণে নেই। মরুভূমি অঞ্চলে ধুলোঝড় এবং অরণ্েেয বা ঘাসে আগুন লাগার ফলে নির্গত ধোঁয়া বাতাসে রাসায়নিক ও ধুলিকণাজনিত দূষণ ঘটিয়ে থাকে। নিচে কয়েকটি প্রধান বায়ু দূষণকারী পদার্থের নাম ও তাদের উৎস দেওয়া হল…

কার্বন মনোক্সাইড: পেট্রোল, ডিজেল এবং কাঠ সহ নানা ধরনের কার্বন-যুক্ত জ্বালানি আধপোড়া হলে এই রঙবিহীন গন্ধবিহীন গ্যাকসটি তৈরি হয়। সিগারেট পোড়ালেও এই গ্যাস বের হয়। এই গ্যাস আমাদের রক্তে অক্সিজেন গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এই গ্যাসের প্রতিক্রিয়ায় আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সব সময় ঝিমোনো ভাব আসে। বিভিন্ন ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতারও শিকার হতে হয়।
কার্বন ডাইঅক্সাইড: মানুষের নানা কর্মকা-ের ফলে নির্গত প্রধান গ্রিন হাউস গ্যাস। কয়লা, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানোর ফলে নির্গত হয়।
ক্লোরোফ্লুরোকার্বন: মূলত রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশনিং মেশিন থেকে এই গ্যাস নির্গত হয়। বাতাসে এই গ্যাস নির্গত হওয়ার পরে স্ট্র্যাবটেস্ফিয়ারে চলে যায়, সেখানে অন্যাশন্যগ্যাগসের সংস্পর্শে আসে। এর ফলে ওজোন স্তর পাতলা হয়ে যায়। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির বিকিরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার স্বাভাবিক ক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

লেড বা সিসা : এই পদার্থটি লেড ব্যািটারি, পেট্রোল, ডিজেল, হেয়ারডাই, রঙ প্রভৃতি পণ্যে পাওয়া যায়। সিসা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুদের ক্ষতি করে থাকে। এটির প্রভাবে হজমের প্রক্রিয়া ও স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হয়। কয়েকটি ক্ষেত্রে ক্যানসারও হতে পারে।
ওজোন : ওজোন বায়ুম-লের উচ্চস্তরে পাওয়া যায়। এই গুরুত্বপূর্ণ গ্যাসের চাদর সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ থেকে পৃথিবীকে বাঁচায়। কিন্তু মাটির কাছাকাছি এই গ্যাস অত্যন্ত বিষাক্ত ধরনের। মাটির কাছাকাছি যে ওজোন পাওয়া যায় তা মূলত কলকারখানা এবং যানবাহন থেকে নির্গত হয়। ওজোনের প্রভাবে চুলকানি হয়, জ্বালা করতে পারে। ওজোনের প্রভাবে ঠা-া লাগার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
নাইট্রোজেন অক্সাইড : এই গ্যাকসের প্রভাবে ধোঁয়াশা তৈরি হয় এবং অ্যাওসিড বৃষ্টি হয়। পেট্রোল, ডিজেল, কয়লার মতো জ্বালানি পোড়ানোর ফলে এই গ্যাস নির্গত হয়। নাইট্রোজেন অক্সাইডের প্রভাবে বাচ্চাদের শীতের সময় সর্দিকাশি হতে পারে।

সাসপেনডেড পার্টিকুলার ম্যাটার: ধোঁয়া, ধুলো, বাষ্প এবং একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে বাতাসে ভেসে থাকা কঠিন পদার্থের কণাকে এসপিএম বলে। এটি বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ। ধোঁয়াশা একটা অন্যতম কারণ এসপিএম। এসপিএম বেশি থাকলে দূরের জিনিস দেখার ক্ষেত্রে খুব অসুবিধা হয়। এই ধরনের পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা ফুসফুসে প্রবেশ করে শরীরের এই অন্যতম প্রধান অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। নিঃশ্বাসপ্রশ্বাসের ক্ষেত্রে সমস্যারও সৃষ্টি করে।
সালফার ডাইঅক্সাইড: মূলত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পোড়ানোর ফলে এই গ্যাস নির্গত হয়। অন্যান্য শিল্পজাত প্রক্রিয়ার ফলেও এই গ্য্সা নির্গত হয় যেমন কাগজ উৎপাদন পদ্ধতিতে, ধাতু গলানোর ক্ষেত্রে ইত্যামদি। এই গ্যাস অ্যাসিড বৃষ্টি এবং ধোঁয়াশা সৃষ্টির একটি প্রধান কারণ। সালফার ডাইঅক্সাইডের প্রভাবে ফুসফুসের নানা ধরনের জটিল রোগ হয়।

রাসায়নিক দূষণ:
রাসায়নিক দূষণের বিভিন্ন ধরনের উৎস রয়েছে, যার মধ্যে পড়ছে।
১. গার্হস্থ্য বর্জ্য
২. শিল্পজাত বর্জ্য
৩. বর্জ্যস্থল থেকে বর্জ্য চুইয়ে অন্যত্র মিশে যাওয়া
৪. আবহাওয়ার প্রতিক্রিয়া
৫. সমুদ্রে দুর্ঘটনা বা তেল মিশে যাওয়া
৬. তেলের রিগ থেকে নির্গত বর্জ্য
৭. খননের সময় খনির বর্জ্য
৮. কৃষিজ বর্জ্য
যে সব রাসয়নিক পদার্থ বরাবরই মানুষের চিন্তার প্রধান কারণ সেগুলিই সব চেয়ে দূষিত পদার্থ হিসাবে চিহ্নিত। এগুলি সমুদ্রের খাদ্যশৃঙ্খলে মিশে যায় এবং সমুদ্রের দূষণ প্রচ- রকম বাড়িয়ে দেয়। এই ধরনের ধারাবাহিক দূষণের কারণ হল ডিডিটির মতো কীটনাশক, পিসিবির মতো কলকারখানা নিঃসৃত রাসায়নিক পদার্থগুলি।
সূত্র ঁ ইন্টারনেট

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট