চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রমজানে কুরআন তিলাওয়াতে এগিয়ে আসতে হবে

রায়হান আজাদ

৩১ মার্চ, ২০২৩ | ১১:১৬ অপরাহ্ণ

আল কুরআন শুধু মুসলমান নয়, সর্বকালের সমগ্র মানবতার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষে সর্বোত্তম হাদিয়া। মানবজাতির সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি যত বই-পুস্তক ও শাস্ত্র পাওয়া যায় তার মধ্যে কুরআন যুগশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক পঠিত।

 

আল্লাহ বিশ্ব মানবতার ইহ-পারলৌকিক শান্তি ও মুক্তির জন্য পবিত্র মাহে রমজানেই কুরআন নাজিল করেন। মহান প্রভু বলেন, “রমজান মাসই হচ্ছে সে-ই মাস যাতে নাজিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হিদায়াত  এবং সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসে রোজা রাখবে। -সুরা আল বাকারা : ১৮৫।

 

অনুরূপভাবে সুরাতুল ক্বাদরে আল্লাহ ছুবহানাহু ওয়া তা‘য়ালা বলেন,“নিশ্চয় আমি লাইলাতুল ক্বাদরে  কুরআন নাজিল করেছি।” হযরত ইমাম আহমদ  রহমাতুল্লাহি আলাইহি হযরত ওয়াছেল ইবনে উকাশা রদিআল্লাহু আনহু থেকে রেওয়ায়েত করেন যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর ছহীফা রমজানের ১তারিখে অবতীর্ণ হয়েছিল। রমজানের ৬ তারিখে তাওরাত শরীফ এবং ২৪তারিখে কুরআনে ক্বারীম নাজিল হয় (মুসনাদে আহমদ) আমরা আগেই জানতে পেরেছি, কুরআনে পাক লাইলাতুল ক্বাদরেই নাজিল হয়।

 

কুরআন তিলাওয়াত, অধ্যয়ন, গবেষণা ও বাস্তব জীবনে কুরআনের বিধি-নিষেধ অনুসরণে আমাদেরকে মাহে রমজান কাজে লাগাতে হবে। হাদীস শরীফে আছে, “কুরআন তিলাওয়াত করা সর্বোত্তম ইবাদত।” কুরআনকে বাদ দিয়ে রমজান ও সিয়ামের মর্মোপলদ্ধি করার সুযোগ নেই। হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম এ রমজান মাসে রাসুল আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কুরআন শিক্ষা দিতেন (বুখারী শরীফ)। আল কুরআনের অন্তত ২০টি জায়গায় এই পাক কুরআনে মানবজীবনের চলার পথের দিক-নির্দেশনা দানকারী সে কথা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত হয়েছে। কুরআন শেখার ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে, “তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি হলো যে কুরআন নিজে পড়ে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়”। ( বুখারী শরীফ)

 

অন্যত্র রাসুল (সা.) এরশাদ করেন,“যখন হাসরের মাঠে কেউ কারো হবে না  সবাই ‘ইয়া নাফসি’ ‘ইয়া নাফসি’ করবে ঠিক তখনই রোজা ও কুরআন সুপারিশের জন্য মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। রোজা বলবে, হে আল্লাহ তা‘য়ালা আমি রোজাদারকে দিনের বেলায় পানাহার, ভোগ বিলাস ও স্ত্রী সম্ভোগ থেকে বিরত রেখেছিলাম তাই তার জন্য আমার সুপারিশ গ্রহণযোগ্য হোক। কুরআন মজীদ বলবে, রাতের মজার ঘুম হতে আমি আমার তেলাওয়াতকারী এই ব্যক্তিকে বিরত রেখেছিলাম । তাই তার জন্য আমার সুপারিশ মন্ধসঢ়;জুর করা হোক। অতঃপর তাদেরকে সুপারিশের  ক্ষমতা দেয়া হবে”।

 

মুসলমানদের  উচিত আল কুরআনের আলোকে নিজেদের ব্যক্তিগত,পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন গড়ে তোলা। অথচ দেখা যায়,ধর্মীয় কিছু আচার-অনুষ্ঠান ও ইবাদত-বন্দেগী ছাড়া অন্য কোন ক্ষেত্রে কুরআনের অনুসরণ করা হয় না। কুরআনকে জীবন যাপনের বিশাল বলয় থেকে নির্বাসিত করাই বর্তমান বিশ্বে মুসলিম উম্মাহর এই চরম অধঃপতন। তাইতো কিয়ামতের মাঠে কুরআন ফরিয়াদ করে বলবে, “হে বিশ্ব জাহানের প্রভু! আপনার এ বান্দাহ আমাকে পূর্ণভাবে গ্রহণ করেনি বরং অবহেলার বস্তু বানিয়েছিল। আমার ও তার মধ্যে আপনি আজকের বিচার দিবসে ফায়সালা করুন। তাকে শাস্তি দিন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘য়ালা ওইলোককে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন (কুরতুবী)।  তাই পবিত্র রমজানুল মোবারকে কুরআন শেখা, বুঝা ও দৈনন্দিন জীবনে মেনে চলার জন্য আমাদের নতুন করে শপথ নিতে হবে। আল্লাহ!  আমাদেরকে তৌফিক দান করুন। আমিন ।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট