চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

রজব থেকেই রমজানের প্রস্তুতি

অনলাইন ডেস্ক

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১০:৪৮ অপরাহ্ণ

পবিত্র কুরআনের বয়ান, ‘নিশ্চয়ই মাসগুলোর সংখ্যা আল্লাহর কাছে বারো মাস; আল্লাহর কিতাবের মধ্যে যখন থেকে তিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন।’ (সূরা তাওবা; ৩৬)। সে বারো মাসের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

 

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাৎপর্যপূর্ণ বিভিন্ন ঘটনা ভিন্ন ভিন্ন মাসে দান করে বিশেষ কিছু মাসের মর্যাদাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করেছেন। যেমন-আশুরার জন্য মহররম, ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)-এর জন্য রবিউল আউয়াল মাস দামি হয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবি (সা.) বলেছেন, ১২ মাসে বছর, তার মধ্যে চার মাস সম্মানিত।

তিন মাস ধারাবাহিক জিলকদ, জিলহজ, মহররম আর চতুর্থ মাসটি হলো রজব। সম্মানিত মাসগুলোর মধ্যে অন্যতম মাহে রজব। হাদিস শরিফের ভাষায় এটা মহান আল্লাহর মাস। ইসলামপূর্ব সময়ও এ মাসটি অত্যন্ত মর্যাদামণ্ডিত ছিল। এ মাসের সম্মানার্থে জাহিলিয়াতে আচ্ছন্ন আরবরাও যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ রাখত। মহান আল্লাহর একমাত্র মনোনীত দ্বীন ইসলামি শরিয়তে এ মহিমান্বিত মাসকে আল্লাহর রহমতের মাস হিসাবে গণ্য করে যুদ্ধ-বিগ্রহ হারাম ঘোষণা করা হয়।

 

হুজুর আকরাম (সা.) রজব মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে চমৎকার বর্ণনা করেছেন, এ মাসের প্রথম রজনি বছরের পাঁচটি অতি উত্তম রাতের অন্যতম। এ রাতের নফল নামাজ ও ইবাদত বান্দেগি অত্যন্ত ফলপ্রসূ। মাসের প্রথম শুক্রবার তথা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতকে ‘লাইলাতুর রাগাইব’ বলা হয়। এ রাতের ইবাদত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রজব মাসের নফল ইবাদতে অন্য মাসের চেয়ে অধিক সওয়াব লাভ করা যায়।

সিরাতে মোস্তফা (সা.) গবেষণায় জানা যায়, যখন রজব মাস শুরু হতো, তখন রাসূল (সা.) দুই হাত তুলে এ দোয়া পাঠ করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে পড়তে বলতেন, ‘আল্লাহুমা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শা’বানা ওয়া বাল্লিগনা রমাদ্বান।’ এ মাসে বিশেষ কিছু নফল আমল রয়েছে, যা অনুশীলন করলে বান্দা জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি লাভ করে; মহান আল্লাহর প্রিয় পাত্র হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। সম্মানিত রজব মাস আমাদের রমজানের ইবাদতের জন্য প্রস্তুতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

 

তাই একজন মুমিন, রমজান আসার আগে রজব মাস থেকেই নিজকে রমজানের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করে তোলে। এ পবিত্র মাসে আল্লাহ মাহবুব নবি (সা.)-এর অনন্য মুজিজা মিরাজ শরিফ অনুষ্ঠিত হয়। ‘লাইলাতুল মিরাজ’ রজব মাসের ২৬ তারিখ দিনগত রজনিকে বলা হয়।

যে মিরাজ প্রিয়নবি (সা.)-এর শ্রেষ্ঠত্বের প্রকৃষ্ট দলিল। এ ছাড়া রজব মাসের প্রথম তারিখ হজরত নূহ (আ.)-কে আল্লাহ কিশতিতে আরোহণের নির্দেশ দেন। এ মাসের ১৫ তারিখ হজরত মূসা (আ.)-এর সঙ্গে আল্লাহ কুদরতি বাক্যবিনিময়ের মাধ্যমে ওনাকে ধন্য করেন এবং হজরত ইদ্রিছ (আ.)- কে বেহেশতে উঠিয়ে নেন।

 

রজব মাসের পর শাবান, এর পরই হলো মহিমান্বিত রমজান। রজব মাস থেকে রমজানের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) এ মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। পরম সম্মানিত সাহাবায়ে কেরামের মাঝে এ মাসে আমলের নতুন পরিবেশ সৃষ্টি হতো।

নফল নামাজ, নফল রোজা, দান-সদকাসহ উত্তম-আমলের মাধ্যমে অন্য এক আবহ বিরাজ করত। কানে বাজত আকাঙ্ক্ষিত রমজানের আগমন ধ্বনি। আমলে-আমলে চলত রমজানকে বরণের প্রাক-প্রস্তুতি। অতএব, বলা যায়-মাহে রজব হলো মুমিনের দ্বারে রমজানের আগমনী বার্তা। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সম্মানিত রজব মাসের তাৎপর্য জেনে এর ওপর আমল করার তৌফিক দান করুন। (আমিন)। তথ্যসূত্র: যুগান্তর

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট