চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

সর্বশেষ:

আজ পবিত্র শবে বরাত

রায়হান আজাদ

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ

আজ পবিত্র শবে বরাত। হাদীস শরীফে এ রাত্রির জন্য ‘লাইলাতুন্ নিসফি মিন শা’বান’ তথা শা’বান মাসের মধ্যরাত্রি-পরিভাষা-ই ব্যবহার করা হয়েছে। তবে উপমহাদেশে যুগ যুগ ধরে ‘শবে বরাত’ নামেই এ রাত্রির বহুল পরিচিতি রয়েছে।

 

কোন কোন ইসলামী চিন্তাবিদ এ রাত্রিকে ‘লাইলাতুল বারাআহ’ বা ‘নিষ্কৃতির রাত’-গুনাহ থেকে ‘মুক্তির রাত’ও বলে থাকেন। “হজরত আবু মুসা রা. নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, “আল্লাহ তা’আলা শা’বান মাসের মধ্যরাতে এক বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতিরেকে সবাইকে মাফ করে দেন’ (মুসনাদে আহমদ)। সহীহ হাদিস গ্রন্থ ইবনে মাজাহ’র অন্য একটি রেওয়ায়েতে এ রাত্রে আল্লাহ পাক খুনি ও হিংসুক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন বলে উল্লেখ রয়েছে।

 

আজ শিরকি আচার-আচরণ সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে বিপজ্জনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিনিয়ত হত্যাকাণ্ড-হিংসা-বিদ্বেষ-জিঘাংসা আমাদের জীবনযাত্রাকে কলুষিত করে তুলছে। এ পাপগুলো আল্লাহর কাছে এতই ভয়ঙ্কর ও অমার্জনীয় যে তিনি এমন বরকতময় রাতেও এ পাপের বোঝা বহনকারীকে ক্ষমা করবেন না। রাসুলে আকরাম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসে প্রায়ই রোজা রাখতেন। হজরত আবু হুরাইরা রা. বলেন, মহানবী সা. রজব ও শা’বান মাস এলে দু’আ করতেন এভাবে- ‘আল্লাহুম্মা বা-রিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শা’ বানা ওয়া বাল্লিগ্না রামাদানা” অর্থাৎ হে প্রভূ! রজব ও শা’বান মাসে আমাদের জন্য বরকত নাজিল করুন আর আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন”। যে ব্যক্তি এ মাসে তিনটি রোজা রাখবে তার গুনাহ মাফ করা হবে’। (আবু দাউদ শরীফ)

 

রাসুলুল্লাহ সা.’র প্রিয় সাহাবী হজরত আনাস বিন মালিক রা. সে যুগের মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে বলেন, “তখন শা’বান মাসের আগমন ঘটলে মুসলমানরা বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াতে মনোনিবেশ করতো এবং বিত্তশালীরা ফকির-মিসকিনদের কাছে তাদের ধন-সম্পদের জাকাত-সাদকা বিতরণ করতে থাকতো যাতে অভাবগ্রস্ত পরিবারগুলো একটু স্বস্তি ও শক্তি সঞ্চয় করে রমজানের রোজাগুলো ভালভাবে অতিবাহিত করতে পারে।”

 

আজকাল শবে বরাতকে কেন্দ্র করে ইসলামের ব্যানারে নানান আয়োজন দেখা যায়। অনেকে এ রাতে মোমবাতি জ্বালানো, হৈ-হুল্লোড় ও দিক-বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। কবর বা মসজিদে আলোকসজ্জা এবং বিশেষভাবে হালুয়া-পায়েশ পাকিয়ে থাকে। কেউ কেউ বাজি ফুটিয়ে হাসি-উল্লাস করে। এসব কাজ ইসলাম সমর্থন করে না। আমিন

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট