চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪

যাদের সঙ্গে নারীরা হজে যেতে পারবেন

অনলাইন ডেস্ক

২৬ মে, ২০২৩ | ১২:১৩ অপরাহ্ণ

শরীয়তের বিধান নারী-পুরুষ সবার জন্য সমান। তবে সৃষ্টিগত পার্থক্যের কারণে কোনও কোনও ইবাদত পালনের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মাঝে স্বতন্ত্রতা রয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে ইসলামি শরিয়তে নারীদের হজ করার আলাদা নিয়ম কানুন রয়েছে। হজে যাওয়ার ক্ষেত্রেও তাদের অতিরিক্ত শর্ত পূরণ হওয়া জরুরি। স্বামী বা মাহরাম ব্যতীত নারীদের হজে গমন শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ নয়, এতে হজ মাকরুহের সঙ্গে আদায় হয়ে গেলেও নারীরা গুনাহগার হবে। (আল জাওহারা: ১/১৫০)

মাহরাম ছাড়া সফরে নিষেধাজ্ঞা

মূলত মাহরাম ছাড়া সফর করা রাসুলুল্লাহ (স.)-এর হাদিসের পরিপন্থী কাজ। মাহরাম ছাড়া সফরে নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে অনেক হাদিস রয়েছে। এক হাদিসে নবীজি (স.) বলেছেন, কোনো পুরুষ যেন কোনো নারীর সঙ্গে তার মাহরাম ব্যতিরেকে একাকি অবস্থান না করে। তখন এক ব্যক্তি উঠে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি তো অমুক অমুক যুদ্ধের জন্য নাম লিখিয়েছি। ওদিকে আমার স্ত্রী হজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেছে। নবীজি (স.) বললেন, ফিরে যাও। তোমার স্ত্রীর সাথে হজ করো। (সহিহ বুখারি: ৫২৩৩; সহিহ মুসলিম: ১৩৪১)

মাহরাম কারা?

মাহরাম বলতে যাদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম তাদেরকে বুঝায়। মানুষ তিন কারণে মাহরাম হতে পারে- ১. রক্তের সম্পর্ক বা বংশের কারণে; যেমন- পিতা, পুত্র, আপন ভাই ও সৎভাই, দাদা-নানা, আপন চাচা ও মামা, ছেলে বা নাতি ইত্যাদি। ২. বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে; যেমন—স্বামী, শ্বশুর, জামাতা ইত্যাদি। ৩. দুধ সম্পর্কের কারণে; যেমন- দুধভাই, দুধ ছেলে ইত্যাদি।

একজন নারীর জন্য মাহরাম পুরুষ হলেন ১৪ জন। তারা হলেন- বাবার সমপর্যায়ের ৪ জন- ১. বাবা ২. চাচা ৩. মামা ৪. শ্বশুর । ভাইয়ের সমপর্যায়ের আরও ৫ জন – তারা হলেন- ৫. সহোদর ভাই ৬. নিজ দাদা ৭. নিজ নানা ৮. নিজ নাতি ৯. দুধ-ভাই।

এছাড়াও ছেলের সমপর্যায়ের আরও ৫ জন। তারা হলেন- ১০. ছেলে ১১. ভাইয়ের ছেলে ১২. বোনের ছেলে ১৩. মেয়ের জামাই ১৪. দুধ-ছেলে।

উল্লেখিত মাহরামদের সঙ্গে নারীরা হজের সফর করতে পারবেন। তবে একা একা দুধভাইয়ের সঙ্গে এবং যুবতি শাশুড়ির জামাতার সঙ্গে যাওয়া নিষেধ। (রদ্দুল মুহতার: ২/৪৬৪)

মাহরামের কোনো ব্যবস্থা না থাকলে…

আর মাহরামের কোনো ব্যবস্থা না থাকলে, ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত হজ আদায় করা নারীদের জন্য শরিয়তসম্মত নয়। এমনকি যদি মৃত্যু পর্যন্ত মাহরামের ব্যবস্থা না হয়, তাহলে বদলি হজের অসিয়ত করে যাওয়া জরুরি, এর দ্বারা তার কর্তব্য আদায় হয়ে যাবে; হজ করতে না পারায় কোনো গুনাহ হবে না। হজ কাফেলার সঙ্গে মাহরাম ব্যতীত নারীদের হজে গমন করার ব্যাপারেও শরিয়তে অভিন্ন বিধান। (ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ৫/৫৪০)

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট