চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রোজা যাদের ওপর ফরজ যাদের ওপর ফরজ নয়

রায়হান আজাদ

৫ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ইসলামী শরিয়তে যাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে তারা হলেন প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম, সুস্থ, বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন ও মুকিম (নিজ বাসস্থানে অবস্থানকারী)।

অন্যদিকে দশ প্রকার মানুষের রোজা পালন করা ফরজ নয়, তারা হলেন-

১. অমুসলিম (ইসলাম গ্রহণের পূর্বে কাফিরের উপর রোজা ফরজ নয় এবং তার জন্য ইসলাম গ্রহণের পর কাজা করাও জরুরি নয়),

২. অপ্রাপ্তবয়স্ক (অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়ের উপর রোজা ফরজ নয় কিন্তু অভ্যাস গড়ার জন্য তাদেরকে রোজা পালনের আদেশ করা যাবে),

৩. পাগল (প্রাপ্তবয়স্ক হলেও পাগলের উপর রোজা ফরজ নয় এমনকি তার জন্য রোজা করিয়ে নেয়ারও প্রয়োজন নেই, অনুরূপ বিধান তার জন্যে যার জ্ঞান লোপ পেয়েছে  এবং যে অতিমাত্রায় মতিভ্রম হওয়ার কারণে ভাল-মন্দ তারতম্য করতে পারে না),

৪. অশীতিপর বৃদ্ধ (বার্ধক্যে উপনীত এমন লোক যিনি ভাল-মন্দ পার্থক্য করতে পারেন না, অতিমাত্রায় বার্ধক্যের কারণে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে পারেন না), 

৫. চিররোগী ও অক্ষম (বিশেষত এমন বৃদ্ধ ব্যক্তি যিনি রোজা রাখতে শারীরিকভাবে সক্ষম নন; অসুস্থতার কারণে কিছুক্ষণ পর পর ঔষধ গ্রহণ জরুরি, অন্যথায় অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দেয়, এমন রোগী যার রোগমুক্তির সম্ভাবনা নেই। এরূপ ব্যক্তিদেও ক্ষেত্রে ফিদইয়া দেয়া ওয়াজিব),

৬. মুসাফির (মুসাফিরের জন্য সফরে রোজা রাখা বা না রাখার এখতিয়ার আছে তবে যদি সফরে রোজা না রাখেন তাহলে পরে এসব রোজা কাজা করে নেবেন। উল্লেখ্য, মুসাফির ইচ্ছা করলে যতদিন সফরে থাকবেন, উক্ত সফর স্থায়ী বা স্বল্পকালীন যেমনই হোক, ততদিন রোজা ছাড়তে পারবেন),

৭. রোগাক্রান্ত ব্যক্তি (অস্থায়ীভাবে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে রোজা রাখা কঠিন হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত রোজা রাখবেন না আর রমজানেই সুস্থ হয়ে গেলে অবশিষ্ট রোজা তাকে অবশ্যই রাখতে হবে এবং যেসব রমজানের রোজা রাখতে সক্ষম হননি তা সুস্থ হওয়ার পর কাজা করে নেবেন).

৮. ঋতুবতী মহিলা (হায়েজ তথা মাসিক ঋতুস্রাব অথবা নিফাস তথা সন্তান প্রসবজনিত স্রাব হলে উক্ত অবস্থায় রোজা না রেখে স্রাব চলে যাওয়ার পর কাজা করে নেবেন),

৯. গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারী (গর্ভধারণ বা সন্তানকে দুগ্ধপান  করানোর কারণে যদি তাদের প্রতি রোজা রাখা কঠিন হয় বা দুগ্ধপান  না করালে স্বীয় সন্তানের অনিষ্টের আশঙ্কা থাকে তবে রোজা না রেখে যখন আশঙ্কামুক্ত হবেন তখন সুবিধামতো সময়ে কাজা করে নেবেন),

১০. দুর্ঘটনা কবলিত লোককে রক্ষাকারী নিরুপায় ব্যক্তি (এমন ব্যক্তি যিনি রোজা ছেড়ে দিতে বাধ্য, যেমন কোনো ছোট বাচ্চা পানিতে ডুবে গেছে অথবা আগুনে পুড়ে যাচ্ছে তাকে মুক্ত করার জন্য রোজা ছেড়ে দিতে হলে ছেড়ে দেবেন কিন্তু পরবর্তীতে তাকে কাজা করে নিতে হবে)।

বিনা কারণে যে ব্যক্তি রোজা ছেড়ে দেবেন তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি শরিয়তের ওজর ছাড়া রমজান মাসের একটি রোজাও ছেড়ে দেবে, সে যদি এর বদলে সারা জীবনও সিয়াম পালন করে তবু তার পাপের খেসারত হবে না।”

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট