চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পবিত্র রমজানে রয়েছে ইসলামী জ্ঞানার্জনের সুবর্ণ সুযোগ

রায়হান আজাদ 

৩ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:২২ অপরাহ্ণ

পবিত্র রমজান ইসলামী জ্ঞানার্জনের মাস। এ মাসে দিনের বেলায় সাধারণত ব্যস্ততা কম থাকে। চাকরির সময়সূচিতেও আসে পরিবর্তন। রমজান মাসে সবাই আমলে সালেহ তথা সৎ কাজে একটু বেশি মনোযোগ দিতে চায়। যে কেউ নিজেকে মুসলিম হিসেবে দাবি করলে কিংবা মুসলমানি রসম-রেওয়াজ মত জীবন ধারণে আগ্রহী হলে তার জন্য ইসলামী জ্ঞানার্জন ফরজ-অবশ্য কর্তব্য। যে বিষয় জানা-ই থাকে না, সে বিষয়ে ভাসা ভাসা ধারণার উপর আমল করা ঠিক নয়। কুরআনে কারীমের প্রথম আয়াত: ‘পড়ুন, আপনার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত হতে। পড়ুন, আপনার প্রতিপালক মহাদয়ালু। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানতো না’ (সুরাতুল আলাক : ১-০৫)। মহানবী বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের উপর জ্ঞানার্জন ফরজ।’  এছাড়াও হাদীস শরীফে ইসলামী জ্ঞানার্জনের বহু গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আল কুরআন ভাবার্থ ও শানে নুযুলসহ অধ্যয়ন করা শ্রেষ্ঠ ইসলামী জ্ঞানার্জন। আল কুরআনের ভাষা যেহেতু আরবি আর তা আমাদের মাতৃভাষা নয়, তাই কুরআনের কোন আয়াত তিলাওয়াত করলেই ঐ আয়াতে আল্লাহ পাক কি বলছেন সেটা আমরা সহজে বুঝে উঠতে পারি না, ফলে কুরআনের বক্তব্য আমাদের কাছে পৌঁছে না। তাই বাংলা ভাষায় প্রকাশিত আল কুরআনের অসংখ্য অনুবাদগ্রন্থ  থেকে আমরা যে কোনটা অধ্যয়ন করে সকল জ্ঞানের উৎস আল কুরআনের  জ্ঞান হাছিলে ব্রতী হতে পারি, ইনশাল্লাহ।

জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে, ‘প্রত্যেক মুসলমান নরনারীর উপর কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানার্জন   ফরজ।’ যাদের  কুরআন তিলাওয়াত ছহীহ নয়, তারা এ মাসকে কাজে লাগিয়ে তিলাওয়াত ছহীহ করে নিতে পারেন। আর যারা কুরআন-হাদীসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মুখস্থ করার মনস্থির করেছেন তারা একটি রুটিন করে তা প্রতিদিন আবৃত্তি করতে পারেন। দেখা যায়, অধিকাংশ মুসলিম ভাইবোনেরা শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন না। অশুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত করা মারাত্মক গুনাহ। এতে অর্থের বিকৃতি ঘটে, নামাজসহ কোন ইবাদতই আল্ল­­াহর কাছে কবুল হয় না। কুরআন শরীফে এসেছে, ‘আল কুরআন তিলাওয়াত কর তারতীল (শুদ্ধ, স্পষ্ট ও সুবিন্যস্ততা) সহকারে’ (সুরা মুয্ধসঢ়;যাম্মিল-০৪)। যার কাছে কুরআন হাদীসের কোন জ্ঞান নেই, সে বড়ই দুর্ভাগা। তার জীবন ব্যর্থ, অসার। দৈনন্দিন জীবনে আমাদেরকে বহু ধর্মীয় সমস্যায় পড়তে হয়, যদি এ ব্যাপারে নিজেরই ইসলামী দৃষ্টিকোণ জানা থাকে তাহলে মুসলমান হিসেবে আত্মপরিচয় সার্থক হয়।

কুরআন ও  হাদীসে  জ্ঞানার্জনের যে গুরুত্ব  ও জ্ঞানীর মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে তা প্রথমত নৈতিক শিক্ষার প্রতি তাকিদ দানের জন্যই। পার্থিব জ্ঞান শিক্ষা করাও মুসলমানদের উপর ফরজ। বর্তমান বিশ্বে জ্ঞান-বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়ার কারণেই মুসলিম উম্মাহর এ করুণ দুর্দশা। ইসলাম যেখানে জ্ঞানার্জন ও জ্ঞান শিক্ষা দানে বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করেছে সেক্ষেত্রে মুসলমানরা চরম গাফিলতির পরিচয় দিচ্ছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন  ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির জন্য কুরআন-সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করার জন্য বলেছেন। আশা করছি, মাহে রমজানের বাকি দিনগুলোতে সবাই বিশেষত ইসলামী জ্ঞানার্জন এবং সামগ্রিকভাবে সারা বছর আধুনিক  জ্ঞানার্জনের লক্ষ্যে সচেষ্ট হবেন। আল্লাহ পাক আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট