চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘সুস্থ ও প্রাণবন্ত জীবন চাইলে স্বেচ্ছায় রক্ত দিন’

জাহিদ তানছির

১৪ জুন, ২০২০ | ২:১২ অপরাহ্ণ

১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। দিবসটি পালনের আরও একটি তাৎপর্য রয়েছে। নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টিনার আবিষ্কার করেছিলেন রক্তের গ্রুপ এ, বি, ও এবং এবি। তাঁর জন্ম হয়েছিলো এই দিনে।

উইকিপিডিয়া সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক রক্তদান দিবস পালন এবং ২০০০ সালে ‘নিরাপদ রক্ত’-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০০৪ সালে প্রথম পালিত হয়েছিল বিশ্ব রক্তদান দিবস। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিবেশনের পর থেকে প্রতিবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ দিবস পালনের জন্য সর্বসাধারণের মাঝে তাগিদ দিয়ে আসছে। স্বেচ্ছায় রক্তদান করে প্রতিনিয়ত মানুষের প্রাণ বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন তাদেরসহ সর্বসাধারণকে রক্তদানে উৎসাহিত করাই এ দিবসের মূল উদ্দেশ্য।

‘নিরাপদ রক্ত সরবরাহের’ মূল ভিত্তি হলো স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে দান করা রক্ত। কারণ তাদের রক্ত তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং এসব রক্তের মধ্য দিয়ে গ্রহীতার মধ্যে জীবনসংশয়ী সংক্রমণ, যেমন এইচআইভি ও হেপাটাইটিস সংক্রমণের আশঙ্কা খুবই কম। স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদানকারী আড়ালে থাকা সেসব মানুষের উদ্দেশে উৎসর্গীকৃত ১৪ জুনের এই বিশ্ব রক্তদান দিবস।

১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী মানসিকভাবে সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ প্রতি চার মাস পর পর এক ব্যাগ রক্ত দিতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত রক্ত দিলে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি বিশেষকরে হৃদরোগ ও হার্ট এটাকের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।

অনেক স্বেচ্ছায় রক্তদাতা কোনপ্রকার স্বার্থ ছাড়াই শুধুমাত্র মানসিক প্রশান্তি লাভে শত প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝেও নিজের রক্ত দিয়ে অন্যের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। যা মানবতার অনন্য নজির। এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বড় ভূমিকা পালন করছে। আমাদের দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা খুবই কম। কারো জীবন বাঁচাতে যখনই রক্তের প্রয়োজন হয় তখনই বোঝা যায় এটি কত গুরুত্বপূর্ণ।

অনেকের মাঝেই দেখা যায়, রক্তদান সর্ম্পকে নিজের অজ্ঞতায় কিছু ভুল ধারণা, ভয় ও কুসংস্কারবোধ কাজ করে। আবার পারিবারিক বাধা, সূঁচ ভীতিসহ নানা কারণে রক্তদানে আগ্রহী হন না। এটা মোটেও উচিত নয়। স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা বাড়াতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকেও আরো জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের জন্য স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা বাড়াতে হবে। নিজের সুস্থ থাকা ও প্রাণবন্ত জীবনযাপন নিশ্চিতে রক্তদানে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। এই দিবসের তাৎপর্যে বলিয়ান হয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদানে মানুষকে উদ্বুদ্ধের পাশাপাশি সচেতন করতে হবে। অনিরাপদ ও দূষিত রক্তের কুফল সম্পর্কে মানুষকে প্রয়োজনীয় ধারণা দিতে হবে। এর জন্য সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করার বিকল্প নেই। 

 

লেখক : সামাজিক সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী।

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট