চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ঈদের খাদ্যতালিকায় থাকুক স্বাস্থ্যসম্মত খাবার

অনলাইন ডেস্ক

২৫ মে, ২০২০ | ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ

 ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানেই খুশি। এই দিনে ধনী, গরীব সবাই ভেদাভেদ ভুলে একসাথে জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করে। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর সোমবার (২৫ মে) পবিত্র ঈদ উল ফিতর। অন্য বছরগুলো থেকে এবারের ঈদ ভিন্ন। কারণ বিশ্বময় তাণ্ডব চালাচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। সেই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাপী নেয়া হয়েছে বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। তার মধ্যে লকডাউন একটি। এমতাবস্থায় সবাইকে সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরে বসেই পালন করতে হবে ঈদ।

করোনায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। এবার ঈদ উদযাপনের চেয়ে পরিবার-পরিজনের সুরক্ষাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই ঈদের খাদ্য তালিকায় রাখুন পুষ্টিকর খাবার। যেসব খাবারে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে সেসব খাবার খান ঈদে। ঈদে মজাদার খাবারের সঙ্গে স্বাস্থ্য রক্ষার কথা বিবেচনায় আনা খুবই জরুরি।

ঈদে আমাদের সমাজে যেসব খাবার প্রচলিত যেমন- মাংস, বিরিয়ানি, পোলাও, কোরমা, বিভিন্ন ধরনের কাবাব, সেমাই, পায়েস ও অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় পিঠা, হালিম, ফুসকা, চটপটি, মিষ্টি, দই ইত্যাদিই প্রধান খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। ঈদে খাবারের মেনুতে শক্তিদায়ক খাবারেই প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয় (যে সকল খাবারের প্রচুর ক্যালরি থাকে), চর্বি জাতীয় খাবারের পরিমাণ খুব বেশি থাকে এবং প্রচুর আমিষ জাতীয় খাদ্য উপাদান ব্যবহার করে ঈদে খাবারের মেনু সাজানো হয়ে থাকে। এ ধরনের খাবার খুব বেশি খেলে বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য- পেটে গ্যাস উৎপন্ন হওয়াসহ আরও বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে এবং খাবারকে স্বাস্থ্যসম্মত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। তাতে ঈদের আনন্দ এবং স্বাস্থ্যরক্ষা দুই-ই অক্ষুণ্ন থাকবে। আঁশযুক্ত খাবার বিশেষ করে কাঁচা শাক-সবজি ও ফলমূল রাখা যায় এবারের ঈদের খাদ্যতালিকায়।

ঈদের খাবারের সঙ্গে অবশ্য সালাদ জাতীয় খাবার প্রচুর পরিমাণে যুক্ত করতে হবে। যেমন- টমেটো, শসা, গাজর, মুলা, কাঁচা পেঁপে, লেটুস পাতা, ধনে পাতা ইত্যাদি। ফলের সালাদ বা মিক্সড সালাদের জন্য আপেল, নাশপাতি, কিশমিশ, খেজুর, আনজির, স্ট্রবেরি, আলু বোখারা, চেরি, অল্প পরিমাণে কাঁচা/পাকা কামরাঙ্গা বা জলপাই জাতীয় ফল ব্যবহার করা যেতে পারে। ঈদের খাবাবের ফাঁকে ফাঁকে এসব সালাদ জাতীয় খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর এবং হজমে সাহায্য করবে। পাশাপাশি ক্যালরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে। মসলা জাতীয় খাবার মসলা জাতীয় খাদ্যবস্তুতে অনেক ঔষধি গুণাগুণ বিদ্যমান। পোলাওয়ের সঙ্গে বেরেস্তা, আলু বোখারা ও কিশমিশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে খাবারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে এবং খাবার স্বাস্থ্যকর হবে।

সালাদে পরিমাণ মতো  পেঁয়াজ কুচি ব্যবহার করতে ভুলবেন না। গরু এবং খাসির মাংস পাক করার সময় আস্ত দেশি রসুন ব্যবহার করতে পারেন। পাক অর্ধেক হয়ে গেলে, আস্ত রসুনের মুখের দিকে কিছু অংশ এমনভাবে কেটে বাদ দিবেন যাতে রসুনের প্রতিটি কোয়ার অগ্রভাগ কাটা পড়ে, তারপর ছালসহ আস্ত রসুন তরকারিতে দিয়ে দিবেন। তাতে তরকারিতে রসুনের গন্ধও ছড়াবে না। খাবার সময় আস্ত সেদ্ধ রসুন চেপে আচার মতো শাঁশ বের করে খাওয়া যাবে। মনে রাখবেন, রসুন রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের প্রভৃত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

দই/ঘোল জাতীয় খাবার দুধ/দই/ঘোল জাতীয় উপাদান বিভিন্নভাবে ঈদের খাবারের মেন্যুতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে খাবারের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পাবে। খাবার সহজপাচ্য হবে। রুচি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে। কোরমা ও অন্যান্য মাংসের আইটেমে টক দই অথবা দুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। ফালুদা এবং বোরহানি আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখার চেষ্টা করবেন। তা না হলে দই খাওয়ার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন ঈদের খাবার যত স্বাস্থ্যসম্মত হবে, পেটের জন্য তত সহনীয় এবং ঈদের আনন্দ তত বেশি নিরবচ্ছিন্ন হবে। মাংস দিয়ে পুরো পেট না ভরিয়ে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খান। বিশেষ করে মৌসুমী ফলে মেলে প্রচুর ভিটামিন সি। এছাড়াও খান কমলা, মাল্টা, লেবু, পেয়ারা, আম, কাঁঠাল, আনারস।

পূর্বকোণ/ এএ- এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট