চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সব রোগের চিকিৎসা দিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা

মাওলানা দৌলত আলী খান

১৩ মার্চ, ২০২০ | ১২:০১ পূর্বাহ্ণ

জন্মের সঙ্গে মৃত্যুর যেমন অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক, মানবজীবনের সঙ্গেও রোগের সম্পর্ক তেমনি নিগূঢ়। প্রায় সব মানুষই কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত হয়। তবে শুধু রোগ দিয়ে মানবজাতিকে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে ছেড়ে দেননি। প্রত্যেক রোগ নিরাময়ের জন্য ওষুধও পাঠিয়ে থাকেন।

সব রোগের ওষুধ আল্লাহর দান : পৃথিবীতে মানবজাতিকে প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। কিন্তু তাৎক্ষণিক কোনো চিকিৎসা পাওয়া না গেলেও কিছুকাল পর বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা তার সুচিকিৎসা বা ওষুধ নির্ণয় করতে সক্ষম হন। অতঃপর রোগাক্রান্ত ব্যক্তি সঠিক ওষুধ বা চিকিৎসাপ্রাপ্ত হয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। এটাই হলো রোগাক্রান্ত বান্দার সুস্থতার জন্য আল্লাহপ্রদত্ত সুচিকিৎসা ও ওষুধ। কারণ হাদিসে আছে, পৃথিবীবাসীর জন্য আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক রোগের ওষুধ দান করেছেন। অন্যথায় পৃথিবীর কোনো ডাক্তারের পক্ষে গবেষণা করে রোগারোগ্যকারী চিকিৎসা ও ওষুধ ব্যবস্থা কস্মিনকালেও সম্ভব হতো না। সুতরাং অধুনা পৃথিবীতে যেসব চিকিৎসা সেবার সন্ধান মিলছে বা অদূর ভবিষ্যতে মিলবে সবই আল্লাহর দান। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা এমন কোনো রোগ দেননি, যার ওষুধ সৃষ্টি করেননি।’ (বুখারি : ৫৭৪০)। রাসুল আরও বলেছেন, ‘প্রত্যেক রোগের জন্য ওষুধ রয়েছে। সুতরাং সঠিক ওষুধ যখন রোগের জন্য ব্যবহৃত হয়, তখন আল্লাহর হুকুমে রোগী সুস্থ হয়ে যায়।’ (মুসলিম : ৫৮৭১)

কালোজিরা সব রোগের ওষুধ : পৃথিবীতে নানা প্রকার ওষুধ রয়েছে। তন্মধ্যে কালোজিরা মৃত্যু ব্যতীত সব রোগের ওষুধ! এ কথাটি প্রাচীনকালের ডাক্তার থেকে নিয়ে অধুনা পৃথিবীর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণের গবেষণা দ্বারা বারবার প্রমাণিত হয়ে আসছে। যার দরুন বর্তমানের বাজারগুলো কালোজিরার পণ্য দ্বারা ভরপুর। মুসলিম উম্মাহসহ সব ধর্মের লোকেরা কালোজিরাকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে থাকেন। প্রায় খাদ্যদ্রব্যে কালোজিরাকে গুরুত্বসহকারে ব্যবহার করা হয়। ফলে ওই সব খাবারগুলোর মধ্যে স্বাদ বৃদ্ধি পায়। তবে রোগ নিরাময়ের জন্য রোগীর কাছে কালোজিরার গুরুত্ব অপরিসীম। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘কালোজিরার মধ্যে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া আর সব রোগের চিকিৎসা নিহিত রয়েছে।’ (বুখারি : ৫৭৫০)

উজরা রোগের ওষুধ : শিশুদের আলজিভ ফুলে যাওয়াকে ‘উজরা রোগ’ বলা হয়। আর এ রোগের ওষুধ হলো কোস্ত-সাদা চন্দন কাঠ। সাদা চন্দন পিষে পানি মিশ্রিত করে শিশুদের নাকের ছিদ্রে ফোঁটা ফোঁটা ঢাললে উজরা রোগ থেকে আরোগ্য লাভ হয়। মহানবী (সা.) উজরা রোগীকে কোস্ত দ্বারা চিকিৎসা করতেন। একইভাবে হাদিসে রোগ নিরাময়ের জন্য কোস্ত বাহরি (সাদা কাঠ) ব্যবহারের তথ্যও পাওয়া যায়। এসব কাঠ ইউনানী শাস্ত্রে বেশ পরিচিত ও সমাদৃত। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘উজরা রোগের জন্য তোমাদের শিশুদের জিহ্বার তালু দাবিয়ে তাদেরকে কষ্ট দিও না, বরং তোমরা কোস্ত ব্যবহার কর। তোমরা যেসব জিনিস দ্বারা চিকিৎসা কর, এর মধ্যে শিঙ্গা লাগানো এবং কোস্ত বাহরি ব্যবহার করা সর্বোত্তম।’ (বুখারি : ৫৭৫৮)

পাঁজরের ব্যথার চিকিৎসা : একটা বয়সে উপনীত হয়ে প্রায় মানুষই পাঁজরের ব্যথায় আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে চিকিৎসা শাস্ত্রে বাতব্যথার কথা উল্লেখযোগ্য। অনেকের দেহে এ ব্যথা চিররোগ বা অচিররোগ হিসেবে বিদ্যমান রয়েছে। এ রোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য রাসুল (সা.) কোস্ত বাহরি, জয়তুন তেল ও ওয়ারস ঘাস ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে আছে, হজরত জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) বলেন, আরও বলেছেন, ‘রাসুল (সা.) আমাদেরকে পাঁজরের ব্যথার চিকিৎসায় কোস্ত বাহরি, জয়তুন তেল ও ওয়ারস ঘাস ব্যবহার করার উপদেশ দিয়েছেন। (তিরমিজি : ২২২৩)

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট