চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ভ্রমণ ডায়েরি

ইউরোপের আইন-শৃঙ্খলা ও কিশোর অপরাধ

মো. আজিজুল মওলা

১ নভেম্বর, ২০২০ | ১০:৩১ অপরাহ্ণ

ভদ্রলোক গাড়ি স্টার্ট করতে গেলেন, দেখি গাড়ি স্টার্ট হয় না। ভদ্রলোক অনেকক্ষণ ধরে অনেকবার ট্রাই করলেন কিছুতেই গাড়ি স্টার্ট করতে পারলেন না। আর এদিকে আমি মনে মনে বলছি সুইডেন সম্পর্কে অনেকদিন ধরে একটি খুব ভাল ধারণা পোষণ করে আসছিলাম। আজকে থেকে মনে হয় ভিন্ন ধারণা পোষণ করতে হবে। আবার আমি নিজে নিজে ভাবছি, ঠান্ডায় মনে হয় গাড়ির ইঞ্জিন ঠান্ডা হয়ে গেছে সেজন্য স্টার্ট হচ্ছেনা। যাহোক আমি বুঝতে পারি আর নাই পারি, ভদ্রলোক একটু মুচকি হাসি দিলেন, মনে হয় তিনি ঠিকই বুঝতে পারলেন কেন গাড়ি স্টার্ট হচ্ছে না।
ঘটনাটি সুইডেনের সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করার অনেকগুলো উদ্যোগের মধ্যে একটি মাত্র। ব্যাপারটি একটু খোলাসা করে বলছি।
সুইডেনে আসার পর, ওয়ার্ড মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ প্রত্যেকটা স্টুডেন্টকে একটা হোস্ট ফ্যামিলির সাথে এটাচ করে দেয়, যাতে করে সেদেশের কৃষ্টি-কালচার, ইতিহাস, তাদের সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক ইত্যাদি সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা তৈরি হয়। আমার সাথেও একটি হোস্ট ফ্যামিলি এটাচ করে দেওয়া হয়েছে। ওই ফ্যামিলির সদস্যরা আমার ফ্ল্যাটে আসত আবার আমিও তাদের বাসায় যেতাম। তাদের বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতাম। তারাও আমার ইউনিভার্সিটি কর্তৃক আয়োজিত বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করত।
একদিন শনিবার আমাকে আমার হোস্ট ফ্যামিলি নিমন্ত্রণ করলো তাদের বাড়িতে। মালমো থেকে আমাকে ভদ্রলোক নিজে গাড়ি চালিয়ে তাদের বাড়ি লুন্ড শহরে নিয়ে আসলো। মালমো থেকে লুন্ড এর দূরত্ব ২৫ /৩০ মিনিটের রাস্তা। সেদিন খুব বেশি বৃষ্টি পড়ছিল। এমনিতে ঠান্ডার দেশ তার উপরে বৃষ্টি হলে ঠান্ডা আরেকটু বেড়ে যায়। যাহোক তাদের বাসায় অনেক খাওয়া দাওয়া করলাম। খাওয়া দাওয়ার পরে সচরাচর সুইডিশরা তাদের শরীর গরম রাখার জন্য হার্ড ড্রিংকস পান করে। যথারীতি ভদ্রলোক তার নিজস্ব পানিয় পান করলেন আর আমি যেহেতু ওসব পান করিনা তিনি আমাকে অফার করলেন কোমল পানীয় স্প্রাইট।
একটু পরে খেয়াল করলাম, গৃহকর্তী মিসেস এলিজাবেথ গৃহকর্তাকে বেশি পান না করার অনুরোধ জানান। যাহোক তিনি আমাকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তাদের বাড়ির আনাচে-কানাচে দেখালেন। একটা রুমে গিয়ে হঠাৎ চোখ থমকে গেল। দেখলাম সেখানে অনেকগুলো সুভেনিয়র যা দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখা আছে। কিছু ইসলামিক ধাঁচের চিত্রকর্মও চোখে পড়ল। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করাতে তিনি বললেন, প্রতিবছর গ্রীষ্মকালে তাঁরা বিভিন্ন দেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। আর যেদেশেই যান না কেন সেদেশের একটি করে চিত্রকর্ম সংগ্রহ করেন আর দেশে ফিরে এসে এই দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখেন। আমি সবগুলো চিত্রকর্ম গণনা শুরু করলাম। সর্বমোট ৬৭ টি দেখা গেল। আমি সত্যিই অভিভূত হলাম, আর মনে মনে বললাম যাক পৃথিবীতে ভ্রমণ পাগল আমার মতো আরো অনেকে আছে। যাহোক ভদ্রলোক আমাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হলেন, আমি যথারীতি গৃহকর্ত্রীকে বিদায় সম্ভাষণ জানালাম। তিনি তার বাড়ির আঙ্গিনায় চলে আসলেন, আমাদের বিদায় জানানোর জন্য। ইউরোপিয়ানদের একটি কালচার আমার খুব ভালো লাগে, সেটি হল কোন অতিথিকে বিদায় দিতে হলে তাঁরা তাদের বাড়ির শেষ সীমানায় দাঁড়িয়ে অতিথির গাড়ি চলে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকেন আর হাত নেড়ে বিদায় সম্ভাষণ জানান।
ভদ্রলোক গাড়ি স্টার্ট করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁর সাথে আমি আবার বাসায় ফিরে আসলাম। আরো একঘণ্টার মতো তাঁর বাসায় অবস্থান করলাম। পরে স্বাভাবিকভাবে গাড়িটি স্টার্ট হল। ভদ্রলোক দক্ষ ড্রাইভার। সুন্দর করে গাড়ি ড্রাইভ করে মালমো শহরে চলে আসলেন। আমাকে আমার বাসার গেটে নামিয়ে দিয়ে এক ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় ক্ষেপণ করার জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করলেন এবং সুইডিশ স্টাইলে বিদায় সম্ভাষণ জানিয়ে চলে গেলেন।
ওইদিন রাতে আমি বাসায় পড়ার টেবিলে সেই দিনের বিদায় বেলার ঘটনাটি মনে করতে লাগলাম। দুদিন পরে গাড়ি স্টার্ট না হওয়ার কারণ উদ্ঘাটন করে ফেলেছি। বর্তমান সময়ে সুইডেনের প্রায় সব গাড়িতেই গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে নল সদৃশ একটি ডিভাইস মুখের কাছে নিতে হয়। কেউ যদি অতিমাত্রায় এলকোহল গ্রহণ করে থাকে তখন গাড়ি স্টার্ট হবে না। ডিভাইসটি ড্রাইভার এর মুখের কাছে নিলে সেখানে একটি অটোমেটিক্ রিডিং তৈরি হয়, যে চালক এলকোহল গ্রহণ করেছেন কিনা এবং আর গ্রহণ করে থাকলে বর্তমানে এর মাত্রা কত। একটি নির্দিষ্ট এবং মিনিমাম মাত্রায় এলকোহল এর উপস্থিতি থাকলে গাড়ি স্টার্ট হয়। ওই মাত্রাটি ক্রস করলে সারাদিন চেষ্টা করলেও গাড়ি স্টার্ট হবে না। আর এলকোহল না নিলে তো কোন সমস্যা নাই, সাথে সাথে স্টার্ট হয়ে যাবে।
ভদ্রলোক ঐদিন মনে হয় একটু মাত্রারিক্ত এলকোহল নিয়েছিলেন। তাই গাড়ি স্টার্ট করতে পারেননি। সুইডেনে ঘনত্ব প্রতি জনসংখ্যার হার খুবই কম। শহর থেকে বের হলে রাস্তাঘাটে তেমন মানুষ চোখে দেখবেন না। গাড়ির সংখ্যাও অনেক কম। কিন্তু রাস্তা ফাঁকা দেখে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কোনো সুযোগ নেই। তাই এখানে নির্দিষ্ট স্পিডে গাড়ি চালাতে হয় । এর ব্যতিক্রম হলে পুলিশ আপনাকে ধাওয়া করবে এবং মোটা অঙ্কের জরিমানাসহ মামলা দিবে। আমাদের পুলিশের মত হাত দেখিয়ে তারা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে না। সবকিছু সিস্টেমেটিক ভাবে চলে। এখানে পুলিশরা তখনই আপনাকে ধাওয়া করবে যখন আপনি কোন ট্রাফিক সিগন্যাল ভঙ্গ করবেন। এইতো বেশ কয়েক বছর ধরে সুইডেনে একটি উল্লেখযোগ্য হারে এক্সিডেন্ট এর মাত্রা কমে গিয়েছে এই ডিভাইসটি গাড়িতে যুক্ত করার ফলে। ঢাকা শহরে শুধুমাত্র মাদকাসক্ত হয়ে গাড়ি চালানোর কারণে আমাদের দেশে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি এক্সিডেন্ট হয়েছে। আমরাও চাইলে এই প্রযুক্তিটি পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ব্যবহার করে দেখতে পারি।
ইউরোপের আইনশৃঙ্খলা বিশদভাবে জানতে হলে এ অঞ্চলের অধিবাসীরা মানুষ হিসেবে কেমন, তাদের কৃষ্টি-কালচার, সমাজব্যবস্থা অর্থনৈতিক অবস্থা মানুষের ধর্ম চর্চা, তথ্যপ্রযুক্তি এবং সমসাময়িক বিষয়াবলী সম্পর্কে সম্যক পূর্ব ধারণা থাকতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী দেশ জার্মানি। দেশটি অর্থনীতি ও তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বলে আমার মনে হয়। যতবারই আমি জার্মানি যাই, ততোবারই দেশটি আমার কাছে নতুন মনে হয়। কয়েক বছর আগে জার্মানির হামবুর্গ বন্দরে একটি সর্ট কোর্সে গিয়েছিলাম । ট্রেনিং শেষ করে বিকালে প্রতিদিন হাঁটতে বের হতাম শহর দেখতে। একদিন বিকালে আমার জার্মান কোর্সমেট এর এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলাম। ভদ্রলোক ভালো আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছেন। খাওয়া-দাওয়া পর্ব শেষ করে বিদায় নিয়ে আসার সময় দেখলাম মাঠে বেশ কয়েকটি ছেলে মেয়ে খেলাধুলা করছে। তাদের মধ্যে ১২/১৩ বছরের একটি ছেলেকে দেখলাম। তার চোখে-মুখে দুষ্টামির ছাপ। পুরো খেলাধুলায় সে-ই দেখলাম নেতৃত্ব দিচ্ছে। তার বাঁ হাতটি জ্যাকেটের হাতাতে ঢুকিয়ে রেখেছে। আর ডান হাতটি খোলা। মনে হয় তার বাঁ হাতে কিছু হয়েছে অথবা সে বাঁহাতটি দেখাতে চাচ্ছে না। বিষয়টি আমার মনে দাগ কেটে থাকলো।
আন-কমন কোনকিছু আমার মাথায় চেপে বসলে সেটির রহস্য উদঘাটন করতে না পারলে মনে হয় আমার খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো হজম হয়না। এবারও তাই। আমার কোর্সমেটকে জিজ্ঞেস করলাম গতকালকে যে বাচ্চাটিকে দেখলাম সে কেন তার হাতটি লুকানোর চেষ্টা করেছিল। তিনি আমাকে যে উত্তর দিলেন সেটি জেনে কিছুক্ষণের জন্য আমি কথা বলতে পারিনি।
তিনি যা বললেন তার সারাংশ হল এই- ছেলেটি তার হাতের কব্জিতে পড়া ব্যাচলেটের মত দেখতে বেল্টটি লুকানোর চেষ্টা করেছিল। এখানকার পুলিশরা যে কোন অপরাধের বেশিরভাগ শাস্তি তাৎক্ষণিকভাবে দিয়ে থাকেন। যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে সে সমস্ত কিশোর কিশোরীদের কেউ কোন অপরাধ করলে তাকে কিশোর অপরাধ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। তাদের শাস্তি গুলো হয় দিন এবং কিলোমিটার এ । যেমন মনে করুন,কোন কিশোর যদি কোনো ইচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা বা অপরাধ করলে তাকে পুলিশ দুই মাসের জেল এবং পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান এর শাস্তি দিয়ে দেন। কিশোরটির বাড়ি থেকে তার স্কুলের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। কিশোরটি বাড়ি থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে থাকতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং এই শাস্তি কাউন্টডাউন এর মাধ্যমে ৬০ দিন থেকে আস্তে আস্তে ০ দিনে চলে আসলে শাস্তি শেষ হবে। এজন্য তার বাঁ হাতে একটি বেল্ট পড়িয়ে দেওয়া হয়। এটিই হল সেই শাস্তিযোগ্য বেল্ট। এই বেল্টে প্রোগ্রামিং করা আছে কাউন্টডাউন শেষ হলে অটোমেটিক্যালি বেল্টটি খুলে যাবে। আর সে যদি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে পাঁচ কিলোমিটারের বাইরে চলে যায়, সাথে সাথে পুলিশের কাছে সিগনাল চলে যাবে এবং শাস্তির মাত্রা আরো বেড়ে যাবে। আর এভাবেই তারা কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
এইতো কিছুদিন আগেও আমাদের দেশে কিশোর অপরাধ, কিশোর গ্যাংদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গিয়েছিল। বিভিন্ন কালারের চুল, হাতে ব্রেসলেট পরে টিকটক ভিডিও করতে গিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ধাওয়া-পাল্টা দেওয়া হয়েছিল রাজধানী ঢাকার দিয়াবাড়িতে। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে বিষয়টি মিডিয়ায় আসলে আমরা জানতে পারি। আমার মনে হয় আমাদের দেশে এ বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।
আরেকটি ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম শুক্রবার রাতে ইউনিভার্সিটির হেনরিক স্মিথ রেসিডেন্স এ বিভিন্ন দেশের ছাত্র ছাত্রীদের সমন্বয়ে পার্টি ছিল। পার্টি শেষে রাতের বেলায় কিছু ছাত্র পাশের দেশ ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন এ গিয়েছিল। ফেরার পথে আমাদের এক আফ্রিকান বন্ধু মনে হয় একটু বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে ছিলেন। সুইডিশ পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গিয়েছে। আমাদের কাছে খবরটা আসার পর ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালাম। ইউনিভার্সিটি থেকে বলা হল বিষয়টি সকালবেলা সমাধান হয়ে যাবে। এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করে কোন লাভ নাই। ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ চাইলেও এমনকি এদেশের কোন মন্ত্রী পুলিশকে সুপারিশ করেও তাকে ছাড়িয়ে আনার কোনো সুযোগ নেই। সে যে অপরাধ বা দোষ করেছে তার শাস্তি হওয়ার পরে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। আমাদের সেই আফ্রিকান বন্ধুটি একটি বড় অঙ্কের টাকা ফাইন দিয়ে ছাড়া পেয়ে পরদিন সকালে ইউনিভার্সিটি রেসিডেন্সে চলে আসলো।

একটা জোকস দিয়ে এই পর্ব শেষ করি। হাইওয়েতে জলিল সাহেবের গাড়ি আটক করল পুলিশ। কর্তব্যরত সার্জেন্ট ধমক দিয়ে বললেন, ‘ব্যাপার কী? আপনি এত আস্তে গাড়ি চালাচ্ছেন কেন?’
জলিল সাহেব: রাস্তার শুরুতে দেখলাম ওপরে বড় করে লেখা ২০। ভাবলাম, এই রাস্তার সর্বোচ্চ গতিসীমা নিশ্চয় ২০। তাই…
সার্জেন্ট: ওরে বোকা, এটা ২০ নম্বর রাস্তা। কিন্তু কথা হচ্ছে আপনার গাড়ির পেছনের সিটে বসা দুজন এমন ভয়ার্ত চোখে চেয়ে আছে কেন? চুল খাড়া হয়ে আছে, দাঁত কপাটি লাগার দশা। ঘটনা কী?
জলিল সাহেব: না মানে, একটু আগে ১১০ নম্বর রাস্তা দিয়ে এলাম তো !!

লেখক পরিচিতি:
উপ-সচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট