চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

পর্ব-২৩ঃ কিউবাও ফারমার্স মার্কেটে যাত্রা

মো. ফারুক ইসলাম

৫ জুলাই, ২০২০ | ১২:১৪ অপরাহ্ণ

২০১৯ সালের ৩০ জুন, রবিবার। সকালটা আজ ভিন্ন আমেজের। কারণ আজ প্রশিক্ষণ নেই। তাই তেমন তাড়াহুড়োও নেই। ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে হোটেল ক্যাফেটেরিয়াতে গিয়ে নাস্তা করলাম। নাস্তা খাওয়া শেষে সবাই প্রস্তুতি নিলাম শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্যে বের হবার জন্য। আমাদের ট্যুরটা ছিলো বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা সফর বিষয়ক। প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে গতকাল। মানে ২৯ জুন, শনিবার। হাতে আছে আর ৩ দিন। এই তিনদিনের মধ্যে দুইদিন হলো ফিলিপাইনের ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানসমূহ দেখা। আর দুইদিনের শিক্ষা সফরে নেতৃত্ব দিবেন মিস্টার জুন ও তার দলের সদস্যরা। দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মারভিন ফুলো এবং ক্যারোলিন ফুলো। এরা দুইজনেই ভাইবোন। আমাদের বাহারুল ইসলাম স্যার মজা করে মারভিনকে ডাকতেন পারভীন নামে। আমরা শুনে হাসতাম। ভীষণ মজা পেতাম। বাইরে আমাদের গাড়ি অপেক্ষা করছিল। যেহেতু সারাদিন সবাই ঘুরবো। তাই দেরি না করে সবাই গাড়িতে উঠে পড়লাম। প্রথমে আমরা দেখবো কুইজেন সিটির নামকরা কিউবা ও ফারমার্স মার্কেট। ফিলিপাইনের নামকরা একটা মার্কেট। গাড়ি চলতে লাগলো। গানে, গল্পে আর আড্ডায় সবাই মেতে থাকলাম। প্রায় আধঘণ্টা পর আমরা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছলাম। গাড়ি চলতে চলতে ভাবছিলাম ফারমার্স মার্কেটে নিশ্চয়ই কৃষকদের দেখা মিলবে। না, কোন কৃষক নেই। আমাদের চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজারের মতো দোকানপাট। সবাই ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। প্রথমে গেলাম ফলমূলের দোকানে। বিশাল পরিসরে ফলের দোকানগুলো সাজানো। এরপর পার্শ্ববর্তী মার্কেট থেকে কিছু কেনাকাটা করলাম।

হাঁটতে হাঁটতে কিছুদূর যাওয়ার পর পেলাম আমাদের বাংলাদেশি একটা দোকান। দেখলাম বাংলাদেশি এক যুবক দোকানটা পরিচালনা করছেন। নিজ দেশের দোকান দেখে ভেতরে ঢুকলাম। ঢুকে বাঙালি দোকানদারের সাথে অনেকক্ষণ কথাবার্তা বললাম। জানতে চাইলাম তার দোকানের জিনিসপত্রগুলো কোথাকার। তিনি বললেন, সবকিছু বাংলাদেশি গার্মেন্টেসের জিনিস। সবকিছু বাংলাদেশ থেকে অর্ডার করে আনা। স্বদেশী জিনিসপত্র ভিনদেশে দেখে অনেকেই টুকটাক কিনলেন। দোকানের বাইরে এসে দেখলাম বোরকা পরা এক বৃদ্ধ মুসলিম মহিলা বাইরে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে বসে আছেন। বয়স ৮০ বছরের কম হবে না। আমি দাঁড়িয়ে ওনার কয়েকটি ছবি তুললাম। একটু পর ভদ্রমহিলা ইশারা করে ছবি তুলতে নিষেধ করলেন। ততক্ষণে আমার ছবি তোলা শেষ। যেখানেই যাচ্ছি ট্যুরের স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি উঠাচ্ছি। কারণ এই ছবিগুলোই একদিন স্মৃতি হয়ে থাকবে। হয়ে যাবে ইতিহাসের অংশ। চারপাশে দিগন্ত ছোঁয়া অট্টালিকা মাঝখানে রাস্তা। আর আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে দিগন্ত ছোঁয়া অট্টালিকা নিয়ে ছবি তুলছিই তো তুলছি। এদিকে, সময় তার আপন গতিতেই চলছে। মিস্টার জুনের দলের সদস্যরা জানালেন, বেশিক্ষণ দেরি করা যাবে না। কারণ একদিনে কয়েকটা দর্শনীয় স্থান দেখতে হবে। তাই যত দেরি করবো তত দর্শনীয় স্থান দেখা থেকে বঞ্চিত হবো। এবার আমাদের যাত্রা পোর্ট সান্তিয়াগোর উদ্দেশ্য। সবাই গাড়িতে উঠে পড়লাম। গাড়ি ফিলিপাইনের ঐতিহাসিক স্থান পোর্ট সান্তিয়াগোর দিকে ছুটছে। গাড়িতে দলের সদস্যরা আমাদের সাথে বিভিন্ন স্থান নিয়ে আলোচনা করছিলেন। মাঝে মাঝে বাহারুল ইসলাম স্যার মারভিনকে পারভীন বলে মজা করতে থাকেন। অন্যদিকে, শহিদুল ভাইয়ের ইয়া, ইয়া- ওপেন টু অল চলছেই তো চলছে। সেই সাথে চলছে বাকিদের আনন্দ ভাগাভাগি।-(চলবে)

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট